পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত সোনালী পেপারের শেয়ার নিয়ে কারসাজি করায় জেনেক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমেটেড এবং প্রতিষ্ঠানটির পরিচালনা পর্ষদের ৯ জনকে ১১ কোটি ৮৪ লাখ টাকা জরিমানা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।
বিএসইসি চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ৯৭৩তম কমিশন সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বিএসইসি পরিচালক ও মুখপাত্র মো. আবুল কালাম এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি জানান, ২০২১ সালের ১ ডিসেম্বর থেকে ৩০ ডিসেম্বর সময়ে সোনালী পেপারের শেয়ার লেনদেনের ক্ষেত্রে সিকিউরিটিজ আইন ভঙ্গ করেন জেনেক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমেটেডের পরিচালনা পর্ষদের সদস্যরা।
এজন্য জেনেক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমেটেডের চেয়ারম্যান ও স্বতন্ত্র পরিচালক টি.আই.এম নূরুল কবির, ভাইস চেয়ারম্যান প্রিন্স মজুমদার, ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহ জালাল উদ্দিন, পরিচালক চৌধুরী ফজলু ইমাম, হাসান শহিদ সরওয়ার, মোহাম্মদ আদনান ইমাম, নীলূফার ইমাম, স্বতন্ত্র পরিচালক রকি ইসলাম ও জহরুল সৈয়দ বখত প্রত্যেককে ১ কোটি ৩ লাখ টাকা করে জরিমানা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এছাড়া জেনেক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমেটেডকে ২ কোটি ৫৫ লাখ টাকা জরিমানা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এদিকে, সুহৃদ ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, রিংসাইন টেক্সটাইল লিমিটেড, আমান কটন ফাইব্রাস লিমিটেড এবং ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের আর্থিক প্রতিবেদনে গুরুতর আর্থিক অনিয়ম ও সিকিউরিটিজ আইনের লঙ্ঘন থাকা সত্ত্বেও তা নিরীক্ষা প্রতিবেদনে উত্থাপন না করায় প্রতিষ্ঠানগুলোর নিরীক্ষকদের অযোগ্য ঘোষণা করার উদ্যোগ নিয়েছে বিএসইসি। কমিশন সভার নিরীক্ষকদের এ শুনানিতে ডাকার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে বিএসইসি মুখপাত্র জানান, সুহৃদ ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ৩০ জুন ২০১৯ তারিখে সমাপ্ত অর্থবছরের নিরীক্ষা ফার্ম ও নিরীক্ষক-এ হক অ্যান্ড কোং, চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস; রিংসাইন টেক্সটাইল লিমিটেডের ৩০ জুন ২০১৭, ২০১৮, ২০১৯ এবং ২০২০ তারিখে সমাপ্ত অর্থবছরের নিরীক্ষা ফার্ম ও নিরীক্ষক যথাক্রমে- আহমেদ অ্যান্ড আক্তার, মাহফেল হক অ্যান্ড কোং, আতা খান অ্যান্ড কোং এবং সিরাজ খান বসাক অ্যান্ড কোং, চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস; আমান কটন ফাইব্রাস লিমিটেডের ৩০ জুন ২০২০ তারিখে সমাপ্ত অর্থবছরের নিরীক্ষা ফার্ম ও নিরীক্ষক- ইসলাম কাজী শফিক অ্যান্ড কোং, চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস; এবং ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের ৩০ জুন ২০১৮ ও ২০১৯ তারিখে সমাপ্ত অর্থবছরের নিরীক্ষা ফার্ম ও নিরীক্ষক - মাহফেল হক অ্যান্ড কোং, চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস; উল্লেখিত কোম্পানিগুলোর উল্লেখিত অর্থবছরের আর্থিক প্রতিবেদনসমূহে গুরুতর আর্থিক অনিয়ম ও সিকিউরিটিজ আইনের লঙ্ঘন থাকা সত্ত্বেও তা নিরীক্ষা প্রতিবেদনে উত্থাপন না করার কারণে এসব নিরীক্ষা ফার্ম এবং নিরীক্ষককে পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত সব কোম্পানি, সব ধরনের বিনিয়োগ স্কিম (যথা- মিউচ্যুয়াল ফান্ড, অল্টারনেটিভ ইনভেস্টমেন্ট ফান্ড ও এক্সচেঞ্জ ট্রেডেড ফান্ড) এবং পুঁজিবাজারে মধ্যস্থতাকারী সব প্রতিষ্ঠানের অডিট ও অ্যাসিউর্যান্স কার্যক্রম পরিচালনার ওপর নিষেধাজ্ঞা তথা পাঁচ বছরের জন্য অডিট ও অ্যাসিউর্যান্স কার্যক্রমে অংশগ্রহণে ওইসব নিরীক্ষা ফার্ম এবং নিরীক্ষককে কেন অযোগ্য ঘোষণা করা হবে না- এ মর্মে ব্যাখ্যা তলব করে তাদের শুনানি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এমএএস/এমকেআর/জেআইএম