সৌদি প্রবাসীর বিপুল টাকার মালামাল আত্মসাৎ, জামাই-শ্বশুর গ্রেপ্তার

5 hours ago 4
বিদেশে থাকা প্রবাসীরা কঠোর পরিশ্রম করে পরিবারের জন্য টাকাপয়সা ও স্বর্ণালংকার পাঠান। সেই ভরসাকে পুঁজি করে প্রতারণার শিকার হতে হচ্ছে অনেকে। এবার সৌদি আরব প্রবাসী বেলাল হোসেনের ১৯ লাখ টাকার মালামাল আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় সাতক্ষীরার কালিগঞ্জে দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তাররা হলেন উপজেলার ইন্দ্রনগর গ্রাম থেকে ছিদ্দিক মোড়ল (৫৩) ও তার জামাতা হাবিবুল্লাহ ওরফে মিঠু (৩৭)। সম্পর্কে তারা শ্বশুর-জামাই। শুক্রবার (১৯ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ১১টার দিকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। তারা স্থানীয়ভাবে চোরাচালানি চক্রের সঙ্গে জড়িত বলে জানা গেছে। তবে মামলার প্রধান আসামি আল মামুন এখনো পলাতক। জানা গেছে, বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার বাহেরচর গ্রামের প্রবাসী বেলাল হোসেন সৌদি আরবের রিয়াদে কাজ করেন। সেখানে একই মালিকের প্রতিষ্ঠানে কাজ করতে গিয়ে আল মামুন নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক তৈরি হয়। বেলাল হোসেন জানান, দেশে ফেরার আগে মামুন তাকে বলেন- চাইলে তিনি পরিবারের কাছে জিনিসপত্র পাঠিয়ে দিতে পারেন। এ সুযোগে বেলাল ১৬ লাখ টাকার স্বর্ণালংকার (১০৮ গ্রাম ওজনের পাঁচটি চুরি, একটি নেকলেস ও একটি আংটি) ও প্রায় তিন লাখ টাকার কসমেটিকস, কাপড় ও লাগেজ মামুনের হাতে তুলে দেন। মামুন ৩১ আগস্ট দেশে ফিরলেও মালামাল আর পৌঁছায়নি। ১ সেপ্টেম্বর বেলাল পরিবারে খোঁজ নিলে জানতে পারেন, কিছুই পাঠানো হয়নি। ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করলে মামুনের ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। এরপর দেশে ফিরে তিনি সরাসরি মামুনের বাড়ি গেলে বিভিন্নভাবে হুমকি দেওয়া হয়। একপর্যায়ে মামুন কৌশলে সরে যান। কিন্তু ঘটনাস্থলে থাকা ছিদ্দিক ও তার জামাতা মিঠু তাকে ভয়ভীতি দেখিয়ে চলে যেতে বলেন। কালিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান জানান, শুক্রবার রাতে পুলিশের বিশেষ অভিযানে ছিদ্দিক মোড়ল ও তার জামাতা মিঠুকে আটক করা হয়। তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী প্রবাসীর লাগেজ ও কিছু মালামাল উদ্ধার করা হয়েছে। তবে মূল অভিযুক্ত আল মামুন পলাতক রয়েছেন। ওসি আরও জানান, প্রবাসী বেলাল হোসেন বাদী হয়ে প্রতারণা ও আত্মসাতের অভিযোগে মামলা করেছেন। প্রধান আসামি ও চক্রের অন্যদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গ্রেপ্তার ছিদ্দিক মোড়ল দীর্ঘদিন ধরে চোরাচালানের সঙ্গে জড়িত। কয়েক বছর আগে সুন্দরবনের খোলপেটুয়া নদীতে তিন কোটি টাকার চোরাই পণ্যভর্তি ট্রলারসহ তাকে আটক করা হয়েছিল। জামাতা মিঠুও কিছুদিন সৌদি আরবে ছিলেন। তাদের ঘনিষ্ঠতার সুযোগে মামুনসহ একটি চক্র প্রবাসীদের মালামাল পৌঁছে দেওয়ার নামে প্রতারণা করে আসছে। শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) সকালে আটক দুজনকে আদালতে পাঠানো হলে জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম তনিমা মণ্ডল তন্বী তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। পুলিশ জানিয়েছে, জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাদের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করা হবে। প্রবাসী বেলাল হোসেনের অভিযোগ, প্রধান আসামি আল মামুন গ্রেপ্তার না হলে স্বর্ণের গহনাসহ বাকি মালামাল উদ্ধার সম্ভব নয়।
Read Entire Article