ভারতীয় ক্রিকেটে বড় ধাক্কা দিল নতুন অনলাইন গেমিং আইন। সরকারের ‘প্রোমোশন অ্যান্ড রেগুলেশন অব অনলাইন গেমিং বিল ২০২৫’ পাশ হওয়ার পর বাস্তব অর্থে খেলা হয় এমন অনলাইন গেমস কার্যত নিষিদ্ধ হয়ে গেছে। এর প্রভাব পড়েছে সরাসরি ক্রিকেটের মেগা স্পন্সরশিপে।
এই আইনের কারণে ফ্যান্টাসি স্পোর্টস জায়ান্ট ড্রিম-১১ তাদের সবচেয়ে বড় বাজার হারিয়েছে। বাধ্য হয়ে তারা জানিয়ে দিয়েছে, আর ভারতীয় ক্রিকেট দলের টাইটেল স্পন্সর হিসেবে থাকছে না। ফলে নতুন স্পন্সর খুঁজতে হিমশিম খাচ্ছে বিসিসিআই।
ড্রিম-১১ ২০২৩ সালে বিসিসিআই’র সঙ্গে ৩ বছরের জন্য প্রায় ৪৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার (প্রায় ৪৫৮ কোটি টাকা ভারতীয় মুদ্রায়, যা প্রায় ৬৫০ কোটি টাকার কাছাকাছি বাংলাদেশি টাকায়) চুক্তি করেছিল। সেই চুক্তির মেয়াদ ছিল ২০২৬ পর্যন্ত। কিন্তু নতুন আইনের কারণে ২০২৫ সালেই সেটি বাতিল হয়ে গেল।
শুধু স্পন্সরশিপ নয়, ভারতীয় বিজ্ঞাপন বাজারেও বড় আঘাত এসেছে। ড্রিম স্পোর্টস (ড্রিম-১১’র মূল কোম্পানি) ২০২২-২৩ অর্থবছরে একাই প্রায় ২,৯৬৪ কোটি রুপি বিজ্ঞাপনে খরচ করেছে, যা বাংলাদেশি টাকায় দাঁড়ায় প্রায় ৪,২৮০ কোটি টাকা। এছাড়া গেমস২৪x৭ (মাই১১ সার্কেল, রাম্মি সার্কেল) একাই খরচ করেছে আরও প্রায় ১,৪২১ কোটি রুপি (প্রায় ২,০৫০ কোটি টাকা বাংলাদেশি মুদ্রায়)। এখন এই বাজার কার্যত ধসের মুখে।
আগামী ৯ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হচ্ছে এশিয়া কাপ ২০২৫। এর আগে হঠাৎ স্পন্সর হারিয়ে বিসিসিআইকে দ্রুত নতুন টাইটেল স্পন্সর খুঁজতে হবে। বোর্ড সেক্রেটারি দেবজিত শইকিয়া জানিয়ে দিয়েছেন, ভবিষ্যতে এমন কোনো প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে তারা আর যুক্ত হবে না যারা বাস্তব অর্থে অনলাইন গেমস চালায়।
কী দাঁড়ালো হিসাব?
- ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের সরাসরি ক্ষতি প্রায় ৬৫০ কোটি টাকা (বাংলাদেশি মুদ্রায়)।
- বিজ্ঞাপন বাজারে ধস নামতে পারে ৬,০০০ কোটি টাকারও বেশি।
- ক্রিকেটার ও সংশ্লিষ্ট বিজ্ঞাপন সংস্থাগুলোও বড় ক্ষতির মুখে।
ভারতের সবচেয়ে লাভজনক খেলা ক্রিকেটের জন্য এটি নিঃসন্দেহে বড় ধাক্কা। এখন দেখা যাক, এশিয়া কাপের আগে বিসিসিআই নতুন কোনো স্পন্সর জোগাড় করতে পারে কি না।