বৈশ্বিক স্বাধীনতা সূচকে বাংলাদেশের অবস্থানে উন্নতি ঘটেছে। ২০২৩ সালে বাংলাদেশের স্কোর ৪০ থাকলেও গত বছর তা ৪৫ এ দাঁড়িয়েছে।
তবে গত বছর বিশ্বজুড়ে স্বাধীনতা হ্রাস পেয়েছে এবং ক্ষমতাসীন কর্তৃত্ববাদী শাসকরা তাদের হাত আরো শক্ত করে তুলেছে। বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনভিত্তিক গণতন্ত্রপন্থি গবেষণা সংস্থা ফ্রিডম হাউজের প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে দেখা যায়, স্বাধীনতার সূচকে সবচেয়ে বেশি উন্নতি হওয়া চার দেশের মধ্যে তিনটিই দক্ষিণ এশিয়ার। দেশগুলো হলো বাংলাদেশ, ভুটান ও শ্রীলঙ্কা। অন্য দেশটি হচ্ছে সিরিয়া।
২০৮টি দেশ ও অঞ্চলের মানুষের রাজনৈতিক অধিকার ও নাগরিক স্বাধীনতা চর্চার সুযোগ কতটা আছে, তার ওপর ভিত্তি করে বার্ষিক এই প্রতিবেদন প্রস্তুত করেছে ফ্রিডম হাউজ।
প্রতিবেদনে ২০২৪ সালে স্বাধীনতার সূচকে দুটি দেশকে নতুন করে ‘স্বাধীন’ দেশের শ্রেণিতে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। দেশ দুটি হলো সেনেগাল ও ভুটান।
দেশ দুটির উত্তরণের কারণ ব্যাখ্যায় এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সেনেগালে বিদায়ী প্রেসিডেন্ট ভোট পিছিয়ে দেওয়ার অপচেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু বিরোধীদের আন্দোলনের মুখে সেই অপচেষ্টা ব্যর্থ হয় এবং ভোটে বিরোধীরা জয়ী হন।
আর হিমালয় অঞ্চলের ছোট্ট দেশ ভুটান প্রতিযোগিতামূলক নির্বাচন আয়োজনের মাধ্যমে গণতন্ত্রে উত্তরণের পথকে সুসংহত করেছে। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে একমাত্র ভুটানই ‘স্বাধীন’ দেশের শ্রেণিতে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।
বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কা প্রসঙ্গে ফ্রিডম হাউজের প্রতিবেদনে বলা হয়, শ্রেণিতে অবস্থান পরিবর্তন না হলেও ২০২৪ সালের বার্ষিক প্রতিবেদনের এ দুই দেশের বড় ধরনের উন্নতি লক্ষ্য করা গেছে।
বাংলাদেশে গত বছর ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে পদত্যাগ করে দেশ থেকে পালিয়ে যান ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি প্রায় ১৫ বছর বাংলাদেশের ক্ষমতা আঁকড়ে ধরে ছিলেন।
বাংলাদেশ ছাড়াও গত বছরের ডিসেম্বরে সিরিয়ার দীর্ঘদিনের শাসক বাশার আল-আসাদের পতন হয়। ইসলামপন্থি যোদ্ধারা তাকে উৎখাত করেন। তিনিও দেশে ছেড়ে পালিয়ে রাশিয়ায় আশ্রয় নেন।
প্রতিবেদনে বাংলাদেশ ও সিরিয়া প্রসঙ্গে বলা হয়, যদিও উভয় দেশেই সরকার পতনের পর দ্রুত নাগরিক স্বাধীনতার মান উন্নত হয়েছে। তবে রাজনৈতিক প্রতিনিধিত্বে এ উন্নয়ন দেখতে আরো দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে হবে।
২০২৪ সালে স্বাধীনতা সূচকে সবচেয়ে বেশি অবনমন হওয়া চার দেশ হচ্ছে—এল সালভাদর, হাইতি, কুয়েত ও তিউনিসিয়া। এর মধ্যে এল সালভাদর (স্কোর ৪৭) ও তিউনিসিয়া (স্কোর ৪৪) ‘আংশিক স্বাধীন’। আর হাইতি (২৪) ও কুয়েত (স্কোর ৩১) ‘স্বাধীন নয়’।
সূত্র: এএফপি
এসএএইচ