স্বাধীনতার ৫৪ বছরেও লোহাগড়ায় নির্মিত হয়নি স্মৃতিস্তম্ভ

আজ ৮ ডিসেম্বর। নড়াইলের লোহাগড়া হানাদারমুক্ত দিবস। হানাদারমুক্ত দিবস উপলক্ষে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা সংসদ দিনব্যাপী নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।  ইতিহাস থেকে জানা গেছে, ১৯৭১ সালের এই দিনে লোহাগড়ার মুক্তিযোদ্ধারা গেরিলা যুদ্ধের মাধ্যমে পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের দোসরদের পরাজিত করে লোহাগড়াকে হানাদার মুক্ত করে। জয় বাংলা, জয় বাংলা স্লোগানে মুখর হয়ে ওঠে গোটা জনপদ। নভেম্বর মাসের তৃতীয় সপ্তাহে লোহাগড়ার উত্তরাঞ্চল হানাদারমুক্ত হয়। এরপর হানাদার বাহিনী লোহাগড়া থানায় সশস্ত্র অবস্থান নেয়। এ অবস্থায় মুক্তিযোদ্ধারা উপজেলার পূর্বাঞ্চলের মধুমতি নদীর কালনাঘাটে ৭ ডিসেম্বর রাতে বৈঠকে মিলিত হয়ে ৮ ডিসেম্বর গেরিলা যুদ্ধের মাধ্যমে লোহাগড়া থানা আক্রমণ করার সিদ্ধান্ত নেন। মুজিব বাহিনীর প্রধান বীর মুক্তিযোদ্ধা শরীফ খসরুজ্জামানসহ আবুল হোসেন খোকন, গোলাম কবির, মফিজুল হক, শেখ ইউনুস আলী, দিদার হোসেন, হাবিবুর রহমান, মোস্তফা কামাল তাজসহ ৪০-৫০ জনের একদল সশস্ত্র মুক্তিযোদ্ধা ৮ ডিসেম্বর ফজরের আজান দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পশ্চিম দিক থেকে লোহাগড়া থানা আক্রমণ করেন। লোহাগড়া থানা আক্রমণের সময় সম্মুখযুদ্ধে কোলা গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা হাব

স্বাধীনতার ৫৪ বছরেও লোহাগড়ায় নির্মিত হয়নি স্মৃতিস্তম্ভ

আজ ৮ ডিসেম্বর। নড়াইলের লোহাগড়া হানাদারমুক্ত দিবস। হানাদারমুক্ত দিবস উপলক্ষে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা সংসদ দিনব্যাপী নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। 

ইতিহাস থেকে জানা গেছে, ১৯৭১ সালের এই দিনে লোহাগড়ার মুক্তিযোদ্ধারা গেরিলা যুদ্ধের মাধ্যমে পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের দোসরদের পরাজিত করে লোহাগড়াকে হানাদার মুক্ত করে। জয় বাংলা, জয় বাংলা স্লোগানে মুখর হয়ে ওঠে গোটা জনপদ।

নভেম্বর মাসের তৃতীয় সপ্তাহে লোহাগড়ার উত্তরাঞ্চল হানাদারমুক্ত হয়। এরপর হানাদার বাহিনী লোহাগড়া থানায় সশস্ত্র অবস্থান নেয়। এ অবস্থায় মুক্তিযোদ্ধারা উপজেলার পূর্বাঞ্চলের মধুমতি নদীর কালনাঘাটে ৭ ডিসেম্বর রাতে বৈঠকে মিলিত হয়ে ৮ ডিসেম্বর গেরিলা যুদ্ধের মাধ্যমে লোহাগড়া থানা আক্রমণ করার সিদ্ধান্ত নেন।

মুজিব বাহিনীর প্রধান বীর মুক্তিযোদ্ধা শরীফ খসরুজ্জামানসহ আবুল হোসেন খোকন, গোলাম কবির, মফিজুল হক, শেখ ইউনুস আলী, দিদার হোসেন, হাবিবুর রহমান, মোস্তফা কামাল তাজসহ ৪০-৫০ জনের একদল সশস্ত্র মুক্তিযোদ্ধা ৮ ডিসেম্বর ফজরের আজান দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পশ্চিম দিক থেকে লোহাগড়া থানা আক্রমণ করেন। লোহাগড়া থানা আক্রমণের সময় সম্মুখযুদ্ধে কোলা গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা হাবিবুর রহমান ও যশোর সদর উপজেলার জঙ্গলবাঁধাল গ্রামের মোস্তফা কামাল তাজ নিহত হন। নিহত হাবিবুর রহমানকে লোহাগড়া থানা চত্বরে কবর দেওয়া হয় এবং মোস্তফা কামাল তাজকে ইতনা স্কুল ও কলেজ চত্বরে কবর দেওয়া হয়। লোহাগড়া থানা আক্রমণের সময় মুক্তিযোদ্ধারা ৪২ জন পাক হানাদার সদস্যকে আত্মসমর্পণে বাধ্য করে। ৮ ডিসেম্বর সকালে লোহাগড়ায় স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উড়তে থাকে। লোহাগড়া হানাদারমুক্ত হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়লে উল্লসিত জনতা স্লোগান দিয়ে পথে-প্রান্তরে নেমে আসেন।

লোহাগড়া উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কাশেম শেখ জানান, যুদ্ধকালীন সময়ে মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যায় লোহাগড়া উপজেলা দেশের দ্বিতীয় অবস্থানে ছিল। তবে স্বাধীনতার এত বছরেও লোহাগড়ায় নির্মিত হয়নি কোনো স্মৃতিস্তম্ভ। চিহ্নিত হয়নি লোহাগড়ার ইতনা গ্রামের ৩৯ জন শহীদের কবরও। তিনি লোহাগড়ায় মহান মুক্তিযুদ্ধে নিহত শহীদদের স্মরণে স্মৃতিস্তম্ভ অথবা স্মৃতিসৌধ নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন। 

এদিকে লোহাগড়া হানাদারমুক্ত দিবস উপলক্ষে সোমবার সকাল ১০টায় মুক্তিযোদ্ধা সংসদ লোহাগড়া উপজেলা কমান্ড কার্যালয় চত্বরে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, সকাল সাড়ে ১০টায় শোভাযাত্রা ও শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের কবর জিয়ারত, বেলা ১১টায় আলোচনাসভা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে।

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow