নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় স্বামীর নির্যাতনের ভিডিও দেখিয়ে গৃহবধূকে (২০) সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) রাতে ভুক্তভোগী ওই নারী বাদী হয়ে ফতুল্লা থানায় মামলা দায়ের করেন।
বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) ফতুল্লা মডেল থানার ওসি শরিফুল ইসলাম মামলা বিষয়টি কালবেলাকে নিশ্চিত করেছেন।
অভিযুক্ত আসামিরা হলেন- ফতুল্লা লামাপাড়া এলাকার মনির মিয়ার ছেলে নাজমুল (২৫) ও তার বন্ধু রনিসহ (২৫) অজ্ঞাতনামা আরও ২-৩ জন।
ভুক্তভোগী ওই গৃহবধূ নারায়ণগঞ্জ সরকারি মহিলা কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী এবং স্থানীয় একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করেন। তার স্বামী অপর একটি পোশাক কারখানার কর্মী।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, ভুক্তভোগী ওই তরুণী দীর্ঘ ২ বছর ধরে মনির মিয়ার বাড়িতে ভাড়াটিয়া হিসেবে বসবাস করত। তবে বাড়িওয়ালার ছেলে নাজমুল তাকে প্রায় সময় কুপ্রস্তাব দিত। এদিকে গত ১০ জানুয়ারি প্রেম ভালোবাসার সম্পর্কে জড়িয়ে পরিবারের অমতে ওই তরুণী বিয়ে করে। তবে পরিবারের সদস্যরা এ বিয়ে মেনে না নেওয়ায় তারা স্বামী-স্ত্রী পৃথক পৃথক বাড়িতে বসবাস করছে।
এজাহারে আরও উল্লেখ করা হয়, গত ১৮ ফেব্রুয়ারি রাত আনুমানিক সাড়ে ১২টার দিকে ফতুল্লার পূর্ব লামাপাড়া এলাকার সজিবের ভাড়া বাড়িতে ভুক্তভোগী ওই তরুণীর সঙ্গে দেখা করার জন্য আসে তার স্বামী। এসময় তার পূর্ব বাড়িওয়ালার ছেলে নাজমুল ও রনি ওই বাড়ির সামনে থেকে তার স্বামীকে টেনে-হিঁচড়ে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে গিয়ে মারধর করে তার মোবাইল ফোন ও নগদ টাকা ছিনিয়ে নেয়। এই মারধরের ভিডিও তারা ধারণ করে ওই রাতে আড়াইটার দিকে তরুণীর ভাড়া বাসায় জোরপূর্বক প্রবেশ করে। পরে তরুণীর স্বামীকে মারধরের ভিডিও দেখিয়ে তাকে হত্যা করবে বলে হুমকি দিয়ে তাকে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। পরে তারা প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে চলে যায়।
ভুক্তভোগী ওই গৃহবধূর স্বামী বলেন, ওই রাতে আমার স্ত্রী অসুস্থবোধ করায় ওষুধ নিয়ে তার ভাড়া বাসায় যাই। ওষুধ দিয়ে বের হওয়ার পর নাজমুল ও তার বন্ধুরা আমাকে মারধর করে ও মোবাইল ছিনিয়ে নিয়ে দূরে একটি ফাঁকা স্থানে আটকে রাখে। পরে আমাকে মারধরের সেই ভিডিও দেখিয়ে তারা আমার স্ত্রীকে ধর্ষণ করে। এই ঘটনায় মামলা করেছি। আজ (বুধবার) দুপুরে আমার স্ত্রীকে নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়েছে। এখন আমরা সুষ্ঠু বিচার চাই।
এ বিষয়ে ফতুল্লা মডেল থানার ওসি শরিফুল ইসলাম কালবেলাকে বলেন, এই ঘটনায় মামলা হয়েছে। অভিযুক্তরা পালিয়ে গেছে। অপরাধীকে গ্রেপ্তার করতে আমাদের একাধিক টিম কাজ করছে। এ ঘটনার তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।