স্বেচ্ছাসেবক দল নেতার ‘মামলাবাণিজ্য’, অডিও ভাইরাল
টাকা দিলেই মামলা থেকে আসামির নাম বাদ দিয়ে দেবেন স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা। এ সংক্রান্ত একটি কল রেকর্ড ভাইরাল হয়েছে। তবে টাকা চাওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন অভিযুক্ত ওই স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা।
অভিযুক্ত স্বেচ্ছাসেবক দলের ওই নেতার নাম ইসমাইল হোসেন সোহাগ। তিনি বামনা উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক ও ৩ নম্বর রামনা ইউনিয়নের খোলপটুয়া গ্রামের ইউসুফ মোল্লার ছেলে।
কল রেকর্ডের অপরপ্রান্তে থাকা ব্যক্তির নাম রাফান জোমাদ্দার আকাশ। আকাশ নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের বামনা উপজেলা শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক। স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা ইসমাইল হোসেন সোহাগের সঙ্গে কথপোকথনের ভাইরাল হওয়া কল রেকর্ড তাদের বলে স্বীকার করেছেন তিনি।
নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের বামনা উপজেলা শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক আকাশ ও স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা ইসমাইল হোসেন সোহাগের ২ মিনিট ৪০ সেকেন্ডের ওই রেকর্ডে নির্দিষ্ট টাকার অঙ্ক নিয়ে কথা বলতে শোনা গেছে, তবে সেই টাকার অঙ্ক বলতে শোনা যায়নি। তবে টাকা দিলে নিষিদ্ধ সংগঠনের ওই নেতাকে জামিন ও মামলা থেকে বাদ দিয়ে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন ইসমাইল হোসেন সোহাগকে।
এ ছাড়াও ওই কল রেকর্ডে ১০ হাজার টাকা পাঠানোর কথা বলে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের একটি নম্বর চাইলে সোহাগকে একটি নম্বর দিতে শোনা গেছে।
এ বিষয়ে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের বামনা উপজেলা শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক রাফান জোমাদ্দার আকাশ মুঠোফোনে কালবেলাকে বলেন, ৫ আগস্টের পর বিএনপি অফিস ভাঙচুরের ঘটনা উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগসহ অন্যান্য সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের নামে উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক ইসমাইল হোসেন সোহাগ বাদী হয়ে একটি মামলা করেন। সোহাগ বিভিন্ন সময়ে আমার নম্বরে ফোন দিয়ে আমার নাম বাদ দিতে পঞ্চাশ হাজার টাকা দাবি করেন। যদিও পরে টাকার অঙ্ক কমিয়েছেন। তাছাড়া আমি এই ভাঙচুরের সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলাম না।
তবে ভাইরাল হওয়া কল রেকর্ডের বিষয়টি অস্বীকার করে সোহাগ কালবেলাকে বলেন, আমি ওই ছেলেকে চিনি না। তার সঙ্গে গত ৮ মাসেও কথা হয়নি। ওই অডিও রেকর্ড আমার না। আমি ওই ছেলের বিরুদ্ধে সাধারণ ডায়েরিসহ আদালতে মামলা করব।
বরগুনা জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক রাজিবুল ইসলাম সোহেল কালবেলাকে বলেন, আডিও রেকর্ডটি আমিও শুনেছি। কেন্দ্রীয় প্রোগ্রামের জন্য ঢাকায় আছি। বরগুনায় এসে আডিও রেকর্ডটি যাচাই-বাছাই করে পরবর্তী সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। যদি কেউ ব্যক্তি স্বার্থে দলের নাম ব্যবহার করে দলের বদনাম করে, তাদের বিরুদ্ধেও সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বামনা থানা সূত্রে জানা গেছে, কলেজ রোডস্থ বিএনপির দলীয় কার্যালয় ভাঙচুরের অভিযোগ উল্লেখ করে গত বছরের ৭ অক্টোবর বরগুনা দ্রুত বিচার আদালতে একটি মামলা দায়ের হয়। উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক ইসমাইল হোসেন সোহাগ মামলাটি করেন। মামলায় বামনা উপজেলা আওয়ামী লীগ, নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগসহ দলটির অন্যান্য অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের ১২০ কর্মী-সমর্থকের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ১০০-১২০ জনকে আসামি করা হয়।