হঠাৎ কেন ইউরেনিয়ামের মজুত বাড়াল ইরান

5 days ago 5

ইরান পরমাণু বোমা তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় গুরুত্বপূর্ণ ইউরেনিয়ামের মজুত ব্যাপকভাবে বাড়িয়েছে। যা দেশটিকে পরমাণু অস্ত্র তৈরির দোরগোড়ায় নিয়ে আসছে। আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা আইএইএ (IAEA)-এর একটি প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে আসায় আন্তর্জাতিক মহলে ছড়িয়ে পড়েছে নতুন উদ্বেগ। 

মঙ্গলবার প্রকাশিত আইএইএর ওই প্রতিবেদনে জানানো হয়, ইরান তার পরমাণু কার্যক্রম গোপনে চালিয়ে যাচ্ছে এবং পরমাণু বোমা তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় ইউরেনিয়ামের মজুত অনেকটাই বৃদ্ধি পেয়েছে।

এই তথ্য ইরান এবং ইসরায়েলের মধ্যে চলমান উত্তেজনা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে, বিশেষ করে এমন সময় যখন মধ্যপ্রাচ্যে বিভিন্ন রাজনৈতিক সংকট সৃষ্টি হয়েছে। প্রতিবেদনটিতে আরও উল্লেখ করা হয়, ইরান প্রায় ৬০ শতাংশ বিশুদ্ধ ইউরেনিয়াম মজুত করেছে, যা পরমাণু বোমা তৈরির জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

সাধারণত, পরমাণু বোমা তৈরি করতে ৯০ শতাংশ বিশুদ্ধ ইউরেনিয়ামের প্রয়োজন হয় এবং এটি প্রায় ১৮৫ কেজি পরিমাণে মজুত থাকতে হয়। বর্তমানে ইরান যে ৬০ শতাংশ বিশুদ্ধ ইউরেনিয়াম মজুত করেছে, তা ২০১৫ সালের পরমাণু চুক্তির শর্তাবলির চেয়ে ৩২ গুণ বেশি।

এর আগে ২০১৫ সালে, ইরান এবং বিশ্বের ছয়টি বড় দেশ যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, চীন, রাশিয়া এবং জার্মানি একটি চুক্তি করেছিল। যেখানে ইরানকে তার পরমাণু কার্যক্রম সীমিত রাখতে বাধ্য করা হয়েছিল। তবে ২০১৮ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই চুক্তি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর ইরান গোপনে তার পরমাণু কার্যক্রম বৃদ্ধি করেছে বলে আইএইএ দাবি করেছে।

আইএইএর প্রধান রাফায়েল গ্রসি সম্প্রতি ইরান সফর করেছেন। তার সফরের পরই ইরান তার ইউরেনিয়ামের মজুত নিয়ে আরও সতর্ক হয়ে উঠেছে এবং পশ্চিমা দেশগুলোর উদ্বেগের মুখে পড়েছে।

এদিকে ইরানের পরমাণু ক্ষমতা নিয়ে পশ্চিমা দেশগুলো বেশ উদ্বিগ্ন। অক্টোবর মাসে, ইরান-ইসরায়েল সংঘর্ষের পর, ফ্রান্স, জার্মানি এবং যুক্তরাজ্য ইরানের ইউরেনিয়ামের মজুত সম্পর্কে সতর্কতা জানিয়েছে। যদি ইরান পরমাণু বোমা তৈরি করতে সক্ষম হয়, তাহলে তা পুরো বিশ্বে নিরাপত্তা ভারসাম্যের জন্য একটি বড় হুমকি হতে পারে।

তবে ইরান এসব সতর্কতাকে কূটনৈতিকভাবে মোকাবিলা করার কথা জানিয়েছে এবং দাবি করছে, তাদের পরমাণু কার্যক্রম শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যে এবং এটি আন্তর্জাতিক আইনের মধ্যে থেকেই করা হচ্ছে। 

Read Entire Article