সিরিয়ার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারা জর্ডান সফরে যাচ্ছেন। সবকিছু ঠিক থাকলে বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) তার সফরের কথা রয়েছে। জর্ডানের দুই কর্মকর্তার বরাতে রয়টার্স এ তথ্য জানিয়েছে।
মধ্যপ্রাচ্যের গুরুত্বপূর্ণ দেশ জর্ডানে সিরিয়ার নতুন নেতার আগমন ঘিরে কূটনৈতিক জল্পনা চলছে। দুই দেশের মধ্যে কী নিয়ে আলোচনা হতে পারে তা আগাম জানার চেষ্টা করছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলোও। রয়টার্সকে ওই দুই কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, বুধবার শারা জর্ডান সফর করবেন। প্রতিবেশী দেশগুলোর মধ্যে সম্পর্ক জোরদার করার বিষয়ে আলোচনা করার জন্য তিনি বাদশাহ আবদুল্লাহর সঙ্গে দেখা করবেন।
দীর্ঘদিন ধরে ইরান-সমর্থিত বাশার আল আসাদ সিরিয়া শাসন করেন। তাকে উৎখাতে বিদ্রোহীদের নেতৃত্ব দিয়ে ক্ষমতায় আসেন শারা। এরপর থেকে তিনি মধ্যপ্রাচ্য ও পশ্চিমা বিশ্বের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। দায়িত্ব গ্রহণের পর তৃতীয় দেশ হিসেবে জর্ডানে যাচ্ছেন শারা। এর আগে সৌদি আরব ও তুরস্ক সফরে গিয়ে দেশ দুটির নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি।
জর্ডান সফরে, সীমান্ত নিরাপত্তা এবং বাণিজ্যিক সম্পর্ক সম্প্রসারণের উপায় নিয়ে শারা বিস্তৃত আলোচনা করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
প্রায় ১৪ বছরের সিরিয়া যুদ্ধে আরব বিশ্বের বেশিরভাগ দেশ এবং তার প্রতিবেশীদের সঙ্গে আসাদের সম্পর্ক টানাপোড়েন ছিল। শারা দুই দেশের সীমান্তে ব্যাপক মাদক পাচার বন্ধ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, যা ক্ষমতাচ্যুত আসাদের শাসনামলে বৃদ্ধি পেয়েছিল। অপরদিকে জর্ডান দক্ষিণ সিরিয়ায় নিয়ন্ত্রণকারী ইরানপন্থি মিলিশিয়াদের নিয়ে চিন্তিত।
আসাদকে পালিয়ে যেতে বাধ্য করার এক সপ্তাহ পর সিরিয়া নিয়ে প্রথম আন্তর্জাতিকভাবে বার্তা দেয় জর্ডান। সে সময় তারা সিরিয়ায় একটি শান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক পরিবর্তন দেখতে চায় বলে জানায়। পাশাপাশি তার সীমান্তে বিশৃঙ্খলা এবং অস্থিতিশীলতার প্রত্যাবর্তনের আশঙ্কা ব্যক্ত করে।
জর্ডানের কর্মকর্তারা বলেছেন, তারা সিরিয়ার পুনর্গঠনে সাহায্য করতে প্রস্তুত এবং বিদ্যুৎ ও গ্যাস সরবরাহ করে তীব্র বিদ্যুৎ ঘাটতি দূর করতে সহায়তা করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
আসাদের শাসনের অবসান মধ্যপ্রাচ্যের ভূরাজনীতিকে উল্টে দিয়েছে। বিশেষ করে বাথ পার্টির মিত্র ইরানের জন্য একটি বড় ধাক্কা। এ ছাড়া অন্যান্য রাষ্ট্রের জন্য এই অঞ্চলের সংযোগস্থলে থাকা একটি দেশের সঙ্গে নতুন সম্পর্ক গড়ে তোলার পথ পরিষ্কার করেছে।
এদিকে সিরিয়ার বিরুদ্ধে আরোপিত কিছু গুরুত্বপূর্ণ নিষেধাজ্ঞা স্থগিত করার ঘোষণা দিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ), যা দেশটির অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষে একটি বড় পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
স্থানীয় সময় সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) ইউরোপীয় ইউনিয়ন এই সিদ্ধান্তের ঘোষণা দেয়, যার মধ্যে রয়েছে জ্বালানি, পরিবহন এবং ব্যাংকিং খাতের ওপর নিষেধাজ্ঞা শিথিল করা।