পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী সাগর। বাবা নেই, মা ও দুই বোন বাক প্রতিবন্ধী। সাগরের আয়ে কোনোরকম সংসার চলতো। শুক্রবার (১৯ জুলাই) বিকেলে কোটা সংস্কার আন্দোলন কেন্দ্র করে সংঘাতে বাম পা ও উরুর ওপর গুলি লাগে সাগরের। এর পর থেকে আয় বন্ধ তার।
বুধবার (৩১ জুলাই) সকালে ঢামেকের প্লাস্টিক ও বার্ন ইউনিটের ৫ তলার ৫০৩ নম্বর রুমে সাগরের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে। এসময় দেখা যায়, বাম পা পুরোটা ব্যান্ডেজ করা ও ডান পায়ের একাংশে ব্যান্ডেজ করা।
সাগর বলেন, আমি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালাই। ১৫০০ টাকার মতো জরিমানা ছিল। রিকশার মালিক এই টাকা পরিশোধের জন্য চাপ দেয়। দেশের অবস্থা তারা মানবে না। এই অবস্থায়ও সেদিন বেরিয়েছিলাম টাকা উপার্জন করে জরিমানা ও ভাড়া পরিশোধের জন্য।
সাগর জানায়, রামপুরায় রিকশা চালাচ্ছিলাম। হঠাৎ কোথা থেকে একটা গুলি এসে উরুতে লাগে। উরুর ওপরে একপাশ দিয়ে প্রবেশ অন্য পাশ দিয়ে বের হয়ে যায়। রিকশা থেকে পড়ে যাই। পরে সবাই স্থানীয় একটি হাসপাতালে নেয়। সেখানে চিকিৎসা না হওয়ায় ঢামেকে নিয়ে আসে। এখানে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছি।
সাগরের সঙ্গে ছিলেন তার নানি জুবাইদা। তিনি বলেন, আমার মেয়েও বোবা, তার ঘরে দুই মেয়ে তারাও বোবা। পরিবারে সাগরই আয় করতো। তা দিয়ে কোনো রকম চলছিল সংসার। আজ ১৩ দিন হাসপাতালেই পড়ে আছে। চিকিৎসাসহ অন্যান্য খরচ তার মা বিভিন্ন জনের কাছে হাত পেতে নেওয়ার চেষ্টা করছে। তার রিকশায়ই খাবার জুটতো, তা বন্ধ হয়ে গেলো।
নানী জানায়, রিকশা ছাড়াতো তাদের সংসার চলে না। কতদিনে তার পা ভালো হবে আল্লাহ জানে। তাদের খাবার কীভাবে জুটবে তাও জানি না।
এএএম/এমআইএইচএস/জিকেএস