হলুদ কার্ড দেখিয়ে গেলাম, সামনে লাল কার্ড দেখাবো: রাশেদ প্রধান

1 month ago 7

গণঅভ্যুত্থানে ভারতে পালানো শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরত পাঠানোর দাবিতে সড়ক অবরোধ, বিক্ষোভ-সমাবেশ করেছেন জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির (জাগপা) নেতাকর্মীরা। তবে দলটির পূর্বঘোষিত ‘ভারতীয় দূতাবাস ঘেরাও’ কর্মসূচি পুলিশের বাধার মুখে রাজধানীর বাড্ডায় আটকে যায়। সেখান থেকে বারিধারার পার্ক রোডে ভারতীয় হাইকমিশনের দূরত্ব প্রায় দুই কিলোমিটার।

পুলিশের বাধার মুখে জাগপা নেতাকর্মীরা আর এগোতে পারেননি। গুলশান-বাড্ডা লিংক রোডে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে জাগপার সহ-সভাপতি ও দলীয় মুখপাত্র রাশেদ প্রধান বলেন, ‘পুলিশ প্রশাসনের অনুরোধে আমরা ভারতীয় দূতাবাসকে আজকে হলুদ কার্ড দেখিয়ে গেলাম, দাবি না মানলে; হাসিনাকে ফেরত না দলে পরেরবার কিন্তু রেড কার্ড নিয়ে আসবো, লাল কার্ড দেখিয়েই ফিরবো।’

বুধবার (৬ আগস্ট) দুপুর ১২টার দিকে রাজধানীর গুলশান-বাড্ডা লিংক রোডে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।

ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশনে নিযুক্ত কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে জাগপার মুখপাত্র রাশেদ প্রধান বলেন, ‘বাংলার মাটিতে বসে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে আধিপত্যবাদ ও আগ্রাসন দেখালে কোনো র-এর এজেন্ট; এমনকি ভারতীয় দূতাবাসকেও মেনে নেবো না। আমরা স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিচ্ছি, খুনি শেখ হাসিনা ও তার দোসদের অবিলম্বে ফেরত পাঠান। তা না হলে আগামীতে লাল কার্ড নিয়ে আবারও দূতাবাস ঘেরাও করবো। তখন আর পুলিশ প্রশাসনের কথায় থামবো না। পরেরবার কিন্তু দূতাবাস দখল হবে; লাল কার্ড দেখানো হবে। সবাই প্রস্তুত থাকুন।’

 রাশেদ প্রধান

তিনি আরও বলেন, ‘হাজারও শহীদের পরিবার, লক্ষাধিক জুলাইযোদ্ধা, বাংলাদেশের আপামর মানুষ, যে স্বৈরাচার-খুনির বিচার ও ফাঁসি দেখার জন্য অপেক্ষায় রয়েছে; সেই স্বৈরাচার-খুনি শেখ হাসিনাকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় ভারত এক বছর ধরে আশ্রয় দিয়ে রেখেছে। এ আশ্রয়-প্রশ্রয় চলবে না। আমরা ভারতীয় দূতাবাসের মাধ্যমে দিল্লি সরকারকে জানিয়ে দিতে চায় যে, খুনি হাসিনাকে ফেরত দিতে হবে। ভারতকে অবশ্যই বাংলাদেশের সীমান্তে মানুষ হত্যা বন্ধ করতে হবে। অবৈধ পুশ ইন বন্ধ করতে হবে। স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশের যেসব ভূখণ্ড দখলে নিয়েছেন, তা অবিলম্বে ভারতকে ফেরত দিতে হবে। বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে ভারতের দাদাগিরি বন্ধ করতে হবে।’

রাশেদ প্রধান বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে যে নতুন বাংলাদেশ আমরা পেয়েছি, সেই নতুন বাংলাদেশে ভারতীয় আধিপত্যবাদ ও ভারতীয় আগ্রাসন চলতে দেওয়া হবে না। শেখ হাসিনার আমলে সেনাবাহিনী, বিমানবাহিনী, পুলিশ ও সচিবালয়ের আমলাদের মধ্যে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা র-এর এজেন্ট প্রবেশ করানো হয়েছিল। অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে লক্ষ্য করছি, এখনও এসব বাহিনী ও আমলাদের মধ্যে র-এর এজেন্ট এখনও কর্মরত রয়েছেন। দিল্লি সরকারকে আমরা বলতে চাই, আপনারা বাংলাদেশ থেকে আপনাদের সব র-এর এজেন্টদের প্রত্যাহার করে দেশে ফিরিয়ে নিয়ে যান। না হলে আবারও জুলাই হবে। বাংলার শান্তিপ্রিয় মানুষ যদি অশান্ত হয়, শেখ হাসিনা পালানোর পথ পেয়েছে, র-এর এজেন্টরা পালানোর পথ পাবে না।

জাতীয় নির্বাচনে ভারতীয় প্রভাব মেনে নেওয়া হবে না উল্লেখ করে জাগপার মুখপাত্র আরও বলেন, বিগত তিনটি নির্বাচনে দিল্লি থেকে ফলাফল নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছিল। সামনে যে জাতীয় নির্বাচন আসছে, সেটার ফলাফল দেশের মানুষের ভোটের মাধ্যমে হবে; দিল্লির লিখে দেওয়া ফলাফল আমরা মানবো না। আমরা রক্ত দিতে শিখেছি, প্রয়োজনে আবারও রক্ত দেবো। ভারতীয় আধিপত্য মেনে নেবো না।

সমাবেশে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জাগপার সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ইকবাল হোসেন প্রধান, প্রেসিডিয়াম সদস্য আসাদুর রহমান খান, সৈয়দ শফিকুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রওশন আলম আকন্দ, ঢাকা মহানগরের আহ্বায়ক শ্যামল চন্দ্র সরকার, যুব জাগপার সভাপতি নজরুল ইসলাম বাবলু, শ্রমিক জাগপার সাধারণ সম্পাদক মনোয়ার হোসেন প্রমুখ।

এএএইচ/এসএনআর/জেআইএম

Read Entire Article