পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) প্রধান নির্বাহী (ভারপ্রাপ্ত) তাসলিমা ইসলাম বলেছেন, হাওরের জন্য সুনির্দিষ্ট কোনো আইন এখনো পাস হয়নি। খসড়া যে আইন হয়েছে এটি অসম্পূর্ণ। এই আইনে হাওরের সুরক্ষা বা সংরক্ষণের দায়িত্ব সঠিকভাবে উল্লেখ করা হয়নি। দেশের হাওরগুলোকে রক্ষা করতে হলে এই আইনটি দ্রুত পাস করে বাস্তবায়নে যেতে হবে।
মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে জাতীয় হাওর সংলাপে তিনি এসব কথা বলেন। সংলাপের আয়োজন করে বাংলাদেশ রিসোর্স সেন্টার ফর ইন্ডিজিনাস নলেজ (বারসিক), এএলআরডি ও বেলা।
তাসলিমা ইসলাম বলেন, জলমহাল ব্যবস্থাপনা নীতিমালায় জলাধারকে সংজ্ঞায়িত করতে গিয়ে হাওরকে উল্লেখ করা হয়েছে। আমাদের পানি আইন, পরিবেশ আইন, প্রাকৃতিক জলাধার সুরক্ষা আইন রয়েছে। হাওরের সুরক্ষায় এই আইনগুলো ব্যবহার করতে পারি।
তিনি বলেন, প্রাকৃতিক জলাধার সুরক্ষা আইনে জলাধারের শ্রেণি পরিবর্তন করা যাবে না, ভরাট করা যাবে না, তা সুস্পষ্টভাবে বলা আছে। ২০১২ সালের ওয়াইল্ড লাইফ প্রোটেকশন অ্যাক্ট ধরেও আমরা হাওরের সুরক্ষায় পদক্ষেপ নিতে পারি।
পরিবেশ অধিদপ্তরের রংপুর বিভাগের পরিচালক মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, হাওর হলো সৌম্য দর্শন পুণ্যভূমি। সবার অংশগ্রহণে হাওরের সম্পদ ব্যবস্থাপনা ও রক্ষার পরিকল্পনা করতে হবে। জলাভূমির ইকোসিস্টেম ভ্যালু এবং ধানি জমির ভ্যালুর মধ্যে হাজারগুণ পার্থক্য রয়েছে। জলাভূমিকে ধানের জমিতে পরিণত করা একটি ইনোসেন্ট (নিষ্পাপ) অপরাধ। এটা বন্ধ করতে হবে।
অনুষ্ঠানে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ড. লেলিন চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশে কোনো উন্নয়ন প্রকল্পের পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়নের সময় পরিবেশ ও মানুষের স্বাস্থ্যের বিষয়টি নিয়ে কোনো অ্যাসেসমেন্ট করা হয় না। হাওরে কোনো উন্নয়নমূলক কাজ করতে গিয়ে যদি হাওর নষ্ট হয়ে যায় তাহলে তার প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ প্রভাব পড়বে হাওরের পরিবেশ ও বসবাসকারী মানুষের স্বাস্থ্যের ওপর।
সংলাপ অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে এএলআরডির নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা বলেন, আমাদের প্রথাগত ধারণার জায়গায় আমূল সংস্কার করতে হলে সমন্বয়হীনতা থাকা চলবে না। প্রশাসনকে ভেঙে নতুন করে সাজাতে হবে। ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণের জন্য আমাদের মানসিকতার এবং কাঠামোগত দুটোরই পরিবর্তন প্রয়োজন। হাওর যেহেতু উন্মুক্ত জলাশয় সেহেতু হাওর ইজারা বন্ধ করতে হবে।
আরএএস/এসআইটি