বগুড়ার ধুনটে প্রায় এক হাজার কিলোমিটার গ্রামীণ কাঁচা রাস্তার বেহাল দশার কারণে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন নানা শ্রেণি-পেশার তিন লাখ মানুষ। রাস্তাগুলোতে প্রায়ই ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা। বিষয়টি বারবার কর্তৃপক্ষকে জানালেও টনক নড়ছে না বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর।
এলজিইডি কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ধুনট উপজেলায় ১০টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার ২১৫টি গ্রামের লোকসংখ্যা প্রায় তিন লাখ। প্রতিটি গ্রামে একটি-দুটি করে কাঁচা রাস্তা রয়েছে। তবে এসব রাস্তায় লাগেনি উন্নয়নের ছোঁয়া। স্বাধীনতার পর থেকে এ পর্যন্ত উপজেলায় প্রায় ৫০০ কিলোমিটার গ্রামীণ রাস্তা পাকা করা হয়েছে। এর বেশিরভাগ রাস্তা পাকা করা হয়েছে এলজিইডির অর্থায়নে। আর কিছু রাস্তা পাকা করা হয়েছে সড়ক ও জনপথের (সওজ) অর্থায়নে। তবে আজও প্রায় এক হাজার কিলোমিটার গ্রামীণ রাস্তা কাঁচাই রয়ে গছে। এরমধ্যে প্রায় সাড়ে ৪০০ কিলোমিটার রাস্তা এলজিইডির তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। অবশিষ্ট প্রায় ৬০০ কিলোমিটার কাঁচা রাস্তা এলজিইডির তালিকাভুক্তির কাজ চলমান।
স্থানীয়রা জানান, বর্ষাকালে গ্রামের কাঁচা রাস্তাগুলো খানাখন্দ, গর্ত ও কর্দমাক্ত হয়ে যায়। একটু বৃষ্টিতেই কাদা হওয়ায় দুর্ভোগ বাড়ে চলাচলকারীদের। স্কুল-কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা পড়েন বিড়ম্বনায়। বড় বড় গর্ত আর রাস্তায় পানি জমে থাকায় ভোগান্তির শেষ নেই পথচারীদের। এমন অবস্থায় অনেক রাস্তায় বন্ধ হয়ে গেছে ভ্যান ও ইজিবাইক চলাচল। কোথাও ইট সরে সৃষ্টি হয়েছে গর্ত। কোথাও আবার বৃষ্টির পানি জমে থাকায় বেড়েছে ভোগান্তি।
উপজেলার রানডিলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অমিতাভ সাহা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে এই কাঁচা রাস্তা দিয়ে চলাচল করছি। পুরো বর্ষায় কাদামাটি মাড়িয়ে চলাচল করা খুব কষ্টের। পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা না থাকায় বৃষ্টি হলে রাস্তা পানির নিচে ডুবে থাকে। পানি সরে গেলে রাস্তা কাদা হয়ে যায়। ছেলেমেয়েদের স্কুল-কলেজে যেতে কষ্ট হয়। অসুস্থ রোগীকে হাসপাতালে নিতে হয় কোলে করে।’
তিনি বলেন, রাস্তার বিষয়ে অনেকবার চেয়ারম্যান-মেম্বারদের কাছে আবেদন দিয়েছি। কিন্তু আজও কোনো কাজ হয়নি।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) ধুনট উপজেলা প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম বলেন, প্রায় সাড়ে ৪০০ কিলোমিটার গ্রামীণ কাঁচা রাস্তা পাকাকরণের জন্য প্রাক্কলন তৈরি করে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে তালিকা পাঠানো হয়েছে। অবশিষ্ট কাঁচা রাস্তা এলজিইডির তালিকাভুক্তির কাজ প্রক্রিয়াধীন। বরাদ্দ পেলে পর্যায়ক্রমে রাস্তা পাকা করা হবে।
এসআর/জিকেএস