হামজা বাংলাদেশের ‘গর্বের ধন’
‘ঐতিহাসিক! ২২ বছর!!’ ‘আমাদের দেশের জন্য কি একটি দিন! এর অংশ হতে পেরে আমি গর্বিত। ইনশাআল্লাহ আরও অনেক কিছু আসবে!’ মঙ্গলবার রাতে ভারতকে হারানোর পর নিজের ফেসবুক পেজে এই স্ট্যাটাস দিয়েছিলেন হামজা দেওয়ান চৌধুরী। যার জাদুকরী পারফরম্যান্সের ওপর ভর করে দক্ষিণ এশিয়ার ফুটবলের সবচেয়ে শক্তিশালী দলটির বিপক্ষে দীর্ঘ ২২ বছর পর জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। বুধবার সকালে ইংল্যান্ডের উদ্দেশ্যে ঢাকা ছেড়েছেন লেস্টার সিটির এই ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার। ‘বাংলাদেশের হয়ে ইতিহাস লিখছেন হামজা’- হামজার তিনটি ছবিসহ ফেসবুকে এই স্ট্যাটাস দিয়েছে তার ক্লাব লেস্টার সিটি। ঢাকা জাতীয় স্টেডিয়ামের সবুজ ঘাস থেকে পুরো দেশে আনন্দ। এরপর দক্ষিণ এশিয়া ছাপিয়ে এশিয়া এবং ইউরোপেও উচ্ছ্বাস। যার পেছনে কারণ কেবল কোকড়ানো ঝাঁকড়া চুলের এই তারকা ফুটবলার। রক্ষণে, মধ্য মাঠে এবং আক্রমণে সব জায়গায়ই ছিল হামজার উপস্থিতি। লেস্টার সিটির কারণেই ইউরোপের ফুটবল অঙ্গনে আলোচনায় হামজা এবং সেই আলোচানায় মিশে থাকছে বাংলাদশের নামও। আগের ৬ ম্যাচে চার গোল করা হামজা তো ভারতের বিপক্ষেও গোল পেতে পারতেন। না পেলেও, ১২ মিনিটে মোরসালিনের করা গোলটি বাকি ৭৮ মিনিট ধরে রাখার পেছনে সবচ
‘ঐতিহাসিক! ২২ বছর!!’
‘আমাদের দেশের জন্য কি একটি দিন! এর অংশ হতে পেরে আমি গর্বিত। ইনশাআল্লাহ আরও অনেক কিছু আসবে!’
মঙ্গলবার রাতে ভারতকে হারানোর পর নিজের ফেসবুক পেজে এই স্ট্যাটাস দিয়েছিলেন হামজা দেওয়ান চৌধুরী। যার জাদুকরী পারফরম্যান্সের ওপর ভর করে দক্ষিণ এশিয়ার ফুটবলের সবচেয়ে শক্তিশালী দলটির বিপক্ষে দীর্ঘ ২২ বছর পর জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। বুধবার সকালে ইংল্যান্ডের উদ্দেশ্যে ঢাকা ছেড়েছেন লেস্টার সিটির এই ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার।
‘বাংলাদেশের হয়ে ইতিহাস লিখছেন হামজা’- হামজার তিনটি ছবিসহ ফেসবুকে এই স্ট্যাটাস দিয়েছে তার ক্লাব লেস্টার সিটি।
ঢাকা জাতীয় স্টেডিয়ামের সবুজ ঘাস থেকে পুরো দেশে আনন্দ। এরপর দক্ষিণ এশিয়া ছাপিয়ে এশিয়া এবং ইউরোপেও উচ্ছ্বাস। যার পেছনে কারণ কেবল কোকড়ানো ঝাঁকড়া চুলের এই তারকা ফুটবলার। রক্ষণে, মধ্য মাঠে এবং আক্রমণে সব জায়গায়ই ছিল হামজার উপস্থিতি। লেস্টার সিটির কারণেই ইউরোপের ফুটবল অঙ্গনে আলোচনায় হামজা এবং সেই আলোচানায় মিশে থাকছে বাংলাদশের নামও।
আগের ৬ ম্যাচে চার গোল করা হামজা তো ভারতের বিপক্ষেও গোল পেতে পারতেন। না পেলেও, ১২ মিনিটে মোরসালিনের করা গোলটি বাকি ৭৮ মিনিট ধরে রাখার পেছনে সবচেয়ে বড় অবদান তো তারই। ভারতের বিপক্ষে জয়ে গোলদাতা মোরসালিন হলেও ম্যাচের নায়ক তো হামজাই। তিনিই দর্শকদের ‘ম্যান অব দ্য ম্যাচ’।
হামজা ঢাকা ছাড়লেও রেখে গেছেন তার কীর্তিময় স্মৃতি। সবখানেই হামজাবন্দনা। শুধু ফুটবল অঙ্গনেই নয়, পুরো ক্রীড়াঙ্গনের আলোচনাই এখন হামজাময়। লাল-সবুজ জার্সিতে হামজার চার গোলই সুন্দর। ভুটানের বিপক্ষে জামাল ভূঁইয়ার কর্নার থেকে হেডে, হংকংয়ের বিপক্ষে ফ্রি-কিকে এবং নেপালের বিপক্ষে জোড়া গোলের প্রথমটি চোখ ধাঁধানো বাইসাইকেল কিকে, পরেরটি পেনাল্টি থেকে।
এতদিন ইউরোপিয়ান, লাতিন ফুটবল কিংবা বিশ্বকাপে এমন গোলের দেখা টিভিতে বসে দেখেছে বাংলাদেশের ফুটবলপ্রেমীরা। এবার সেই গোল স্বচক্ষে, নিজেদের মাঠে, নিজেদের একজন ফুটবলারকে করতে দেখলো তারা। এর চেয়ে চোখের শান্তি আর কি হতে পারে!
সাকেব তারকা স্ট্রাইকার শেখ মোহাম্মদ আসলাম ক্যারিয়ারে বাইসাইকেল গোল করেছেন। যারা সেই গোল দেখেননি, তারা এখন ফুটবলে উদ্বুদ্ধ হবেন হামজার ওই গোল আর পারফরম্যান্স দেখে। শেখ মোহাম্মদ আসলাম নিজের গোলের স্মৃতি টেনে বলেন, ‘আমাদের বেশকিছু বাইসাইকেল কিক আর ব্যাকভলির গোল আছে। এর মধ্যে প্রেসিডেন্ট গোল্ডকাপে কোরিয়ান দলের বিপক্ষে ব্যাকভলির গোলটির কথা আলাদাভাবেই বলবো।’
হামজার বাইসাইকেল গোল নিয়ে আসলামের মূল্যায়ন, ‘ওই গোলটির জন্য আমি হামজাকে প্রশংসা করবো। কারণ, ওই কিকটা তাকে নিতে হয়ে ত্বরিত সিদ্ধান্তের মাধ্যমে। তা নাহলে ওইভাবে নিখুঁত কিক নিতে পারতেন না। ত্বরিত সিদ্ধান্ত ও মাথা ঠান্ডা রেখে শট তিনি যে নিয়েছেন, তা দিয়ে দলকে কেবল গোলই উপহার দেননি, নিজের কোয়ালিটিরও প্রমাণ দিয়েছেন।’
ইংল্যান্ডের পরিবেশই হামজাকে এই মানের ফুটবলার হিসেবে তৈরি হতে ভূমিকা রেখেছে। ‘আমাদের দেশের ফুটবলার হলেও জন্ম বেড়ে ওঠা ইংল্যান্ডে। আর ইংল্যান্ডের লিগ বিশ্বের সেরা লিগগুলোর একটি। এখানে বিশ্বের টপ ফুটবলাররা খেলেন। বড় বড় ফুটবলারদের সাথে খেলে নিজের মানসিকতাকে সেভাবেই তৈরি করেছেন হামজা। আত্মবিশ্বাস তৈরি করেছেন। এসব মিলিয়ে নিজেকে পরিপূর্ণ পেশাদার ফুটবলার হিসেবে তৈরি করেছেন তিনি’- বলেছেন শেখ মোহাম্মদ আসলাম।
ভারতের বিপক্ষে ম্যাচটি টিভিতে দেখেছেন আসলাম। ‘আমি পুরো ম্যাচই মনোযোগ দিয়ে দেখেছি। বিশেষ করে হামজার খেলা। আগেই বলেছি, ইংল্যান্ডের আলো-বাতাস আর পরিবেশে হামজা নিজেকে বড় ফুটবলার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। দৃষ্টিনন্দন ফুটবল খেলেছেন তিনি। যখন যেখানে প্রয়োজন সেখানেই তিনি খেলেছেন। রক্ষণে, মাঝ মাঠে আবার আক্রমণভাবে। যখন যেখানে যা করার তাই করেছেন। তার ট্যাকেলগুলো চমৎকার। শতভাগ পেশাদার মনোভাব নিয়ে খেলেছেন। দলের জন্যই তিনি খেলেছেন। আমি বলবো হামজা আমাদের গর্বের ধন। আমাদের খেলা এই প্রজন্মের তরুণরা দেখেনি। এখন হামজার খেলা দেখে তারা ফুটবলে উদ্বুদ্ধ হবে’- আসলাম এভাবেই মূল্যায়ন করলেন হামজার পারফরম্যান্স।
হামজা একবার গোলাইন থেকে হেডে গোল বাঁচিয়েছেন। বাংলদেশ গোল দিয়ে এগিয়ে গেলেও এমন সব জায়গায় গোল হজম করে জয় হাতছাড়া হয় বাংলাদেশের। হামজা এবার সেটা হতে দিলেন না। সেই সেভটা সম্পর্কে আসলাম বলেছেন, ‘ওটা নির্ঘাত গোল হতো। হামজা দুর্দান্ত হেডে বলটি বাইরে পাঠিয়েছেন। একজন অভিজ্ঞ ও পেশাদার ফুটবলারের পক্ষেই এমন সেভ করা সম্ভব। পোস্টে তখন গোলরক্ষক ছিলেন না। সেটা খেয়ালে রেখেই বলের ওপর নজর ছিল হামজার।’
আরআই/আইএইচএস/
What's Your Reaction?