হামার পর হোমসের পতন, দামেস্কে প্রবেশ করছে সিরিয়ার বিদ্রোহীরা

1 month ago 25

সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে প্রবেশ করতে শুরু করেছে বলে দাবি করেছে দেশটির সশস্ত্র বিদ্রোহীরা। বিদ্রোহীদের পক্ষ থেকে এক সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আমাদের বাহিনী রাজধানী দামেস্কে প্রবেশ করতে শুরু করেছে।

হোমসের পতন

২০১১ সালে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের বিরুদ্ধে প্রথম যে শহরটি বিদ্রোহে জ্বলে উঠেছিল, সেই হোমসকে বিপ্লবের রাজধানী হিসেবে বিবেচনা করা হয়। গত দু’দিন ধরে বিদ্রোহীরা শহরটি পুনর্দখলের জন্য ব্যাপক অভিযান চালায়। অবশেষে আজ পুরো হোমস শহর বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রণে এসেছে বলে জানা গেছে।

এই অভিযানের আগে সাধারণ সিরীয় জনগণের মধ্যে আসাদ সরকারের পতন নিয়ে তেমন কোনো আশা ছিল না। তবে সিরিয়ার সামরিক বাহিনীর ক্রমশ দুর্বল হয়ে পড়া, রাশিয়ার সীমিত সহায়তা, ইরানের নিজস্ব সংকট এবং হিজবুল্লাহর মাধ্যমে দক্ষিণ লেবাননে ব্যস্ততা—এসবই বিদ্রোহীদের পক্ষে সুবিধা তৈরি করেছে।

আলেপ্পোয় ভয়, হামা ও হোমসে উল্লাস

সিরিয়ার সাংবাদিক কোরমোশ আল-জাজিরাকে জানিয়েছেন, বিদ্রোহীরা গত সপ্তাহে আলেপ্পো ও হামা দখল করার পর এই দুই শহরে ভিন্ন প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে।

আলেপ্পোতে সাধারণ মানুষ নতুন শাসনব্যবস্থার ভয়ে কিছুটা আতঙ্কিত। সরকারি প্রচারণা তাদের মধ্যে শঙ্কা তৈরি করেছে যে, বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রণে তারা হয়তো অভুক্ত থাকবে বা নির্যাতনের শিকার হবে। তবে বিদ্রোহী বাহিনী নাগরিকদের আশ্বস্ত করেছে যে, তারা কোনো ক্ষতি করবে না।

অন্যদিকে, হামা ও হোমসে ছড়িয়ে পড়েছে উল্লাস। বিশেষ করে হামার বাসিন্দারা বিদ্রোহীদের বলছে, আমরা ৫০ বছর ধরে আপনাদের অপেক্ষায় ছিলাম। এখন আমরা আসাদ পরিবার থেকে মুক্ত।

কারাগার থেকে বন্দিদের মুক্তি

বিদ্রোহীরা দামেস্কের কাছে সেডনায়া কারাগার থেকে সব বন্দিকে মুক্ত করার দাবি করেছে। এই কারাগারে দীর্ঘদিন ধরে মানবাধিকার লঙ্ঘন চলছিল বলে অভিযোগ রয়েছে। বিদ্রোহীদের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সেডনায়া কারাগারে স্বৈরশাসনের যুগের অবসান হয়েছে।

ইরাকে পালাচ্ছে সিরীয় সেনারা

আল-কাইম সীমান্ত দিয়ে আসাদ বাহিনীর হাজার হাজার সেনা ইরাকে প্রবেশ করছে বলে জানা গেছে। অনলাইনে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, ইরাকি নাগরিকরা এমন ক্লান্ত সৈন্যদের খাদ্য সরবরাহ করছেন।

জাতিসংঘের উদ্বেগ

জাতিসংঘের মানবিক সহায়তা প্রধান টম ফ্লেচার বলেছেন, সিরিয়ার দ্রুত পরিবর্তনশীল পরিস্থিতি আমরা সতর্কতার সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করছি। সব পক্ষকে অবশ্যই বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে এবং মানবিক সহায়তা নিশ্চিত করতে হবে।

সূত্র: আল-জাজিরা
কেএএ/

Read Entire Article