কাতারে ইসরায়েল আর হামলা চালাবে না- মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই প্রতিশ্রুতি দেওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই উল্টো সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিলো দখলদার দেশটি। ওয়াশিংটনে নিযুক্ত ইসরায়েলি রাষ্ট্রদূত ইঙ্গিত দিয়েছেন, হামাস নেতাদের হত্যা করতে উপসাগরীয় দেশগুলোতে ফের হামলা চালানো হতে পারে।
মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) রাতে মার্কিন টেলিভিশন চ্যানেল ফক্স নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে রাষ্ট্রদূত ইয়েচিয়েল লেইটার বলেন, যদি আমরা এবার তাদের হত্যা করতে না পেরে থাকি, তবে পরেরবার অবশ্যই করবো।
এর আগে মঙ্গলবার দোহায় যুক্তরাষ্ট্র প্রস্তাবিত গাজা যুদ্ধবিরতি আলোচনায় অংশ নেওয়া হামাস নেতাদের লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালায় ইসরায়েল। এ হামলায় ছয়জন নিহত হন, যার মধ্যে একজন কাতারি নিরাপত্তা কর্মকর্তা ছিলেন। তবে হামাস জানিয়েছে, সংগঠনটির শীর্ষ নেতা ও গাজার প্রধান খলিল আল-হাইয়াসহ অন্যরা হামলা থেকে প্রাণে বেঁচে গেছেন।
এ ঘটনায় বিশ্বব্যাপী নিন্দার ঝড় উঠেছে। পশ্চিমা মিত্রদের অনেক দেশও ইসরায়েলের এ হামলাকে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন হিসেবে অভিহিত করেছে। জাতিসংঘ সনদে অন্য রাষ্ট্রের ওপর আগ্রাসন চালানোর যে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে, দোহায় বোমাবর্ষণ সেই সনদ ভঙ্গ করেছে বলেও অভিযোগ উঠেছে।
কাতার এ হামলাকে ‘রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসবাদ’ আখ্যা দিয়ে আঞ্চলিক প্রতিক্রিয়া জানানোর আহ্বান জানিয়েছে। দেশটির প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আবদুর রহমান আল থানি ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে বলেন, তিনি ব্যক্তিগত স্বার্থ আর আত্মকেন্দ্রিক ভ্রমে পড়ে গোটা অঞ্চলের স্থিতিশীলতা ধ্বংস করছেন।
তিনি আরও বলেন, অন্য দেশের সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘনকে অবহেলা করা যাবে না, বরং যে কোনো উপায়ে তা মোকাবিলা করতে হবে।
ইসরায়েলের অতি ঘনিষ্ঠ মিত্র হওয়া সত্ত্বেও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পও এ হামলা নিয়ে অস্বস্তি প্রকাশ করেছেন। তবে প্রকাশ্যে ইসরায়েলকে দোষারোপ করা থেকে বিরত রয়েছেন তিনি।
কাতার যুক্তরাষ্ট্রের একটি প্রধান নন-ন্যাটো মিত্র, যেখানে ওয়াশিংটনের বৃহত্তম সামরিক ঘাঁটিগুলোর একটি অবস্থিত। দেশটি একাধিক আন্তর্জাতিক চুক্তি মধ্যস্থতাতেও ভূমিকা রেখেছে। ট্রাম্প জানিয়েছেন, তিনি কাতারের আমির ও প্রধানমন্ত্রীকে আশ্বস্ত করেছেন যে, তাদের ভূখণ্ডে এ ধরনের হামলা আর হবে না।
কিন্তু ইসরায়েলি রাষ্ট্রদূত লেইটার যুক্তরাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক উদ্বেগকে গুরুত্বহীন আখ্যা দিয়ে বলেন, ইসরায়েল অঞ্চলকে বদলে দিচ্ছে, চরমপন্থা দমনে কাজ করছে। গত এক মাসে অন্তত পাঁচটি আরব দেশে ইসরায়েলি হামলার পরিপ্রেক্ষিতে তিনি যোগ করেন, এখন কিছুটা সমালোচনা আসছে বটে, তবে তারা ঠিক বুঝতে পারবে।
সূত্র: আল-জাজিরা
এসএএইচ