ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগে ৬ মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। একইসঙ্গে, গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জের শাকিল আকন্দ বুলবুল ওরফে মো. শাকিল আলমকে দুই মাসের কারাদণ্ড দেন ট্রাইব্যুনাল।
এ রায়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রীয় খরচে নিযুক্ত আইনজীবী। রায় দেবে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
বুধবার (২ জুন) ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচারিক প্যানেল এ রায় ঘোষণা করেন। ট্রাইব্যুনালের অন্য দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারপতি মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
আদালতে আজ শেখ হাসিনা ও শাকিলের পক্ষে শুনানি করেন রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী আমির হোসেন। অ্যামিক্যাস কিউরি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ ওয়াই মশিউজ্জামান। প্রসিকিউশনের পক্ষে ছিলেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম ও প্রসিকিউটর তানভীর জোহা।
- আরও পড়ুন
- আদালত অবমাননার মামলায় শেখ হাসিনার ৬ মাসের কারাদণ্ড
- শেখ হাসিনাকে খালাস করানোর চেষ্টা করা হবে: রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী
এ রায়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রীয় খরচে নিযুক্ত আইনজীবী (স্টেট ডিফেন্স) অ্যাডভোকেট মো. আমির হোসেন। তিনি বলেন, প্রসিকিউশন থেকে আদালতে যে বক্তব্য রেখেছেন তার সঙ্গে আমার দ্বিমত রয়েছে। এই সাজার রায়ে আমি সন্তুষ্ট নই। সাজার বিষয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল থেকে ঘোষণা করা রায় দেখে পরবর্তী পদক্ষেপ নেবো। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে রায়ের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন।
এর আগে আদালত অবমাননার মামলায় শেখ হাসিনা ও গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জের শাকিল আকন্দ বুলবুলকে পৃথক মেয়াদে কারাদণ্ড দেন ট্রাইব্যুনাল। ট্রাইব্যুনালের বিচার প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত করা, মামলার বাদী, সাক্ষীদের ভয়ভীতি দেখানো ও হুমকি দেওয়ায় ট্রাইব্যুনাল আইনে এই রায় দেন।
দণ্ডপ্রাপ্তরা আদালতে আত্মসমর্পণের পর বা তারা যেদিন গ্রেফতার হবেন সেদিন থেকে এই সাজা কার্যকর হবে। ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর এই প্রথম কোনো মামলায় শেখ হাসিনাকে সাজা দিলেন বাংলাদেশের কোনো আদালত। দেশের পট পরিবর্তনের পর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্টাইব্যুনালে এটিই প্রথম সাজার রায়।
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ঘটনায় দায়ের করা মামলা নিয়ে দেওয়া বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা ও ছাত্রলীগ নেতা শাকিল আলম বুলবুলের বিরুদ্ধে গত ৩০ এপ্রিল আদালত অবমাননার অভিযোগ দাখিল করেন চিফ প্রসিকিউটর। সেদিন ট্রাইব্যুনাল অভিযোগ গ্রহণ করে ১৫ মের মধ্যে অভিযুক্তদের জবাব দেওয়ার নির্দেশ দেন। কিন্তু ওইদিন কোনো জবাব দাখিল না করায় তাদের ২৫ মে ট্রাইব্যুনালে হাজির হওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়।
এর আগে ‘আমার বিরুদ্ধে ২২৭টি মামলা হয়েছে, তাই ২২৭ জনকে হত্যার লাইসেন্স পেয়ে গেছি’-এমন বক্তব্যের শেখ হাসিনা একটি অডিও ভাইরাল হয়। পরে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) ওই কথোপকথনের ফরেনসিক পরীক্ষা করে সত্যতা পায়। এরপরই আদালত অবমাননার আবেদন দাখিল করা হয় ট্রাইব্যুনালে।
এফএইচ/কেএসআর/এএসএম