‘হাড় নেই, চাপ দেবেন না’ ও ‘নারী কেন বাইরে যাবে’?

13 hours ago 5

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন নারী শিক্ষার্থীকে কেন্দ্র করে যে ঘটনা সম্প্রতি সংঘটিত হলো, তা শুধু একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়; বরং এটি আমাদের সমাজের গভীর অসুখের নগ্ন প্রকাশ। এই দেশে নারী মানেই যেন প্রথমে সন্দেহ, তারপর গালাগাল, তারপর চরিত্রহনন। ঘটনাস্থলে যা ঘটেছে, তা তো ঘটেছেই; কিন্তু তার চেয়েও বড় ক্ষত সৃষ্টি করেছে আমাদের সামাজিক মানসিকতা ও প্রশাসনিক ব্যর্থতা।

প্রথমেই আসা যাক নারী শিক্ষার্থীটির প্রসঙ্গে। জানা গেছে, স্থানীয় এক দারোয়ান তার প্রতি শারীরিক আঘাত করেছেন এবং বাসায় প্রবেশে বাধা দিয়েছেন। অথচ প্রথম থেকেই সমাজের একাংশ তাকে নিয়ে শুরু করেছে নোংরা কুৎসা, অশ্লীল ভাষা ও অবমাননাকর মন্তব্য। তাকে নানারকম কুরুচিপূর্ণ শব্দে আঘাত করা হয়েছে। এ যেন নারীর প্রতি চিরাচরিত বিদ্বেষ ও যৌন হতাশা থেকে উদ্ভূত অন্ধ মানসিকতার আরেকটি দৃষ্টান্ত। এ সমাজ যেন ভুলে যায়—নারী কেবল কোনো চরিত্র নয়, তিনি মানুষ, তিনি সমাজের অর্ধেক অংশ।

এই ঘটনার পাশাপাশি আমরা দেখেছি আরেকটি শোকাবহ দৃশ্য। বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষার্থী মামুন মিয়া স্থানীয় জোবরা গ্রামবাসীর হামলার শিকার হয়ে আজ মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন। চিকিৎসকের ভাষায়–‘ হাড় নেই, চাপ দেবেন না’- এ শুধু একটি সতর্কবার্তা নয়, এটি আমাদের রাষ্ট্র ও সমাজের একটি নির্মম রূপক। একজন শিক্ষার্থীর মাথার হাড় চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে গেল, কিন্তু প্রশাসন ও কিছু গণমাধ্যমের চোখে সবচেয়ে বড় খবর হয়ে উঠলো—কয়েকটি ভাঙা টিন ও জানালা। এখানে প্রশ্ন ওঠে—কোনটি বেশি গুরুত্বপূর্ণ? কয়েকটি টিনের ক্ষতি, নাকি একজন তরুণ মস্তিষ্কের ধ্বংস? টিনের ক্ষতি টাকা দিয়ে পূরণ করা যায়, কিন্তু ভাঙা করোটি ও ভেঙে যাওয়া স্বপ্ন আর কখনও আগের মতো হয় না। অথচ প্রশাসন ব্যস্ত হলো শিক্ষার্থীদের দোষারোপ করতে, আহতদের পাশে দাঁড়াতে নয়।

হামলার সুষ্ঠু তদন্ত, দোষীদের গ্রেফতার কিংবা শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার বদলে তারা শিক্ষার্থীদের বলির পাঁঠা বানিয়ে প্রোপাগান্ডার ঢোল পিটিয়েছে। কিছু গণমাধ্যমের ভূমিকা ছিল আরও হতাশাজনক। তারা আহত শিক্ষার্থীদের রক্তাক্ত শরীরের ছবি, হাসপাতালের শয্যায় মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করা দৃশ্য বা মাথার ভাঙা করোটির করুণ বাস্তবতা প্রকাশ না করে বরং প্রচার করেছে ভাঙা টিনের ছবি। যেন রাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় ক্ষতি এই টিন, শিক্ষার্থীদের রক্ত নয়। এই মনোভাব শুধু সাংবাদিকতার নৈতিকতা নয়, মানবিকতাকেও প্রশ্নবিদ্ধ করে।

বাংলাদেশের ইতিহাসে শিক্ষার্থীরা সবসময় অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়েছে। ভাষা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধ কিংবা গণতান্ত্রিক আন্দোলন—প্রতিটি সংগ্রামে শিক্ষার্থীরা প্রাণ বিসর্জন দিয়েছে। অথচ আজ সেই শিক্ষার্থীরাই অপবাদ ও দমননীতির শিকার। তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পরিবর্তে তাদেরকেই অপরাধী হিসেবে চিহ্নিত করা হচ্ছে। মামুনের মাথায় আঘাত কোনো দুর্ঘটনা নয়; এটি একটি সতর্কবার্তা—রাষ্ট্র তার তরুণ প্রজন্মকে রক্ষায় ব্যর্থ। আমাদের মনে রাখতে হবে, বিশ্ববিদ্যালয় কেবল জ্ঞানের ভাণ্ডার নয়; এটি শিক্ষার্থীদের জন্য একটি নৈতিক আশ্রয়স্থল। সেই আশ্রয় যদি ভেঙে পড়ে, তবে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা কোথায় থাকবে?

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, রাষ্ট্র ও সমাজ—সবারই দায় আছে। দোষারোপের রাজনীতি, প্রোপাগান্ডা আর মেরুদণ্ডহীনতা দিয়ে এই দায় চাপা দেওয়া যায় না। শিক্ষার্থীদের রক্ত, নারীর প্রতি অবমাননা, এবং সত্যকে বিকৃত করার এই প্রবণতা থামাতে না পারলে আমাদের আগামী প্রজন্মের প্রতি এটি এক ভয়ংকর বিশ্বাসঘাতকতা হবে। মামুনের করোটিতে চিকিৎসকের লেখা সেই সতর্কবাণী—শুধু তার জন্য নয়, এই সমাজ ও রাষ্ট্রের জন্যও প্রযোজ্য। কারণ এখানে সমাজের হাড় ভেঙে গেছে, প্রশাসনের মেরুদণ্ড চূর্ণ হয়েছে। যতক্ষণ না আমরা সত্যিকার অর্থে ন্যায়বিচার, মানবিকতা ও সত্যের পক্ষে দাঁড়াবো, ততক্ষণ পর্যন্ত এই ভাঙা হাড় আর কোনো ভবিষ্যৎকে টিকিয়ে রাখতে পারবে না কারণ ভাঙা টিন নয়, ভাঙ্গা মস্তিষ্ক জাতির ক্ষয়চিহ্ন!

একজন নারী শিক্ষার্থীকে ঘিরে নোংরা কুৎসা, আরেক শিক্ষার্থীর মাথায় মরণঘাতী আঘাত—তবুও প্রশাসন ও কিছু গণমাধ্যমের কাছে খবরের শিরোনাম হলো কয়েকটি ভাঙা টিন! এই ঘটনা প্রমাণ করে: রাষ্ট্রের কাছে মানবিক ক্ষতির মূল্য এখনো টিনের চেয়ে কম। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাম্প্রতিক ঘটনা আমাদের সামনে আবারও তুলে ধরলো এ সমাজের ঘৃণ্য রূপ। একজন নারী শিক্ষার্থী তার নিজ বাসায় প্রবেশ করতে চাইলে দারোয়ান তাকে বাধা দেয়, এমনকি গায়ে হাত তোলে। অথচ সত্য প্রকাশের আগেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে শুরু করে চায়ের আড্ডা—সবখানে শুরু হয় নারীর চরিত্র হনন।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে যে ঘটনাটি ঘটেছে, তা কেবল একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সংকট নয়—এটি রাষ্ট্র, সমাজ এবং নৈতিকতার নগ্ন প্রতিচ্ছবি। একজন নারী শিক্ষার্থীকে তার ব্যক্তিগত কাজে নানারকম বাঁধা দেওয়া হয়। তাদের সংগ্রামকে নানাভাবে হেয় করে প্রচার করা হয়। এদেশে নারী মানেই যেন একপ্রকার সামাজিক খোলা মঞ্চ—যেখানে যে কেউ নিজের হতাশা, কাম, লাম্পট্য আর দমিয়ে রাখা বিকৃতির বমি উগরে দেয়। তারা ভুলে যায়, নারীই তার মা, তার বোন, তার মেয়ে, তার প্রিয়তমা। নারী কোনো চরিত্র নয়—তিনি মানুষ। কিন্তু এই সত্যটিই এ সমাজ এখনও স্বীকার করে না। এই নারী ঘটনার ছায়াতেই ঘটেছে আরও বড় এক ট্র্যাজেডি। গণমাধ্যমের ভূমিকা এখানে আরও কুৎসিত। যারা শিক্ষার্থীদের রক্ত, নারীর প্রতি অবমাননা আর প্রশাসনিক ব্যর্থতা সামনে আনার কথা, তারাই ছড়িয়ে দিল প্রোপাগান্ডা। আহতদের কান্না চাপা পড়লো ভাঙা জানালার শব্দে। সত্য লুকানো হলো ভাঙা বেঞ্চের ফ্রেমে।

বাংলাদেশের ইতিহাস বারবার প্রমাণ করেছে—শিক্ষার্থীরা অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াই করে এসেছে। ভাষা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধ, স্বৈরাচারবিরোধী সংগ্রাম—প্রতিটি পৃষ্ঠায় তাদের রক্তের স্বাক্ষর। আজ সেই শিক্ষার্থীদেরকে অপরাধীর সাজে দাঁড় করানো হচ্ছে। মামুনের ভাঙা করোটি শুধু একটি শরীরের ক্ষত নয়; এটি রাষ্ট্রের অক্ষমতার প্রতীক। বিশ্ববিদ্যালয় কেবল জ্ঞানের ভাণ্ডার নয়, এটি শিক্ষার্থীদের নৈতিক আশ্রয়স্থল। সেই আশ্রয় যদি লাথি খায়, তবে শিক্ষার্থীরা আশ্রয় নেবে কোথায়? প্রশাসনের এই নির্লিপ্ততা কেবল ব্যর্থতা নয়—এটি বিশ্বাসঘাতকতা। আর সেই বিশ্বাসঘাতকতায় মদদ দিচ্ছে কিছু গণমাধ্যম, যারা সত্য নয়, ক্ষমতার পক্ষে সংবাদ করে।

‘হাড় নেই, চাপ দেবেন না’—আসলে আমাদের সবার জন্যই সতর্কবার্তা। এই রাষ্ট্রের হাড় ভেঙে গেছে, এই সমাজের মেরুদণ্ড চূর্ণবিচূর্ণ। যদি এখনো আমরা সত্যের পক্ষে দাঁড়াতে না পারি, মানবিকতার মূল্য না দিই, তবে আগামী প্রজন্মের জন্য রেখে যাবো শুধু ভাঙা টিন আর ভাঙা মস্তিষ্কের ইতিহাস।

একজন নারী শিক্ষার্থীকে ঘিরে নোংরা কুৎসা, আরেক শিক্ষার্থীর মাথায় মরণঘাতী আঘাত—তবুও প্রশাসন ও কিছু গণমাধ্যমের কাছে খবরের শিরোনাম হলো কয়েকটি ভাঙা টিন! এই ঘটনা প্রমাণ করে: রাষ্ট্রের কাছে মানবিক ক্ষতির মূল্য এখনো টিনের চেয়ে কম। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাম্প্রতিক ঘটনা আমাদের সামনে আবারও তুলে ধরলো এ সমাজের ঘৃণ্য রূপ। একজন নারী শিক্ষার্থী তার নিজ বাসায় প্রবেশ করতে চাইলে দারোয়ান তাকে বাধা দেয়, এমনকি গায়ে হাত তোলে। অথচ সত্য প্রকাশের আগেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে শুরু করে চায়ের আড্ডা—সবখানে শুরু হয় নারীর চরিত্র হনন। বলা হয়, –‘নারী কেন বাইরে যাবে’? এই ঘটনাই শেষ নয় তবে, প্রশ্ন হলো: এর শেষ কোথায়?

বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা সবসময় অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়েছে। ভাষা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধ, স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন—সবক্ষেত্রেই তাদের আত্মত্যাগ আছে। অথচ আজ তাদেরকেই অপরাধী বানানো হচ্ছে। মামুনের ভাঙা করোটি কেবল তার শরীরের ক্ষত নয়; এটি রাষ্ট্রের অক্ষমতার রূপক। বিশ্ববিদ্যালয় কোনো বাণিজ্যিক সম্পত্তি নয়; এটি নৈতিক আশ্রয়স্থল। সেই আশ্রয় যদি লাথি খায়, তবে শিক্ষার্থীরা কোথায় যাবে? প্রশাসনের এই নির্লিপ্ততা বিশ্বাসঘাতকতা ছাড়া আর কিছু নয়। আর সেই বিশ্বাসঘাতকতায় সহযোগিতা করছে কিছু গণমাধ্যম, যারা সত্য নয়, ক্ষমতার পক্ষে সংবাদ করে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাম্প্রতিক ঘটনাগুলো আমাদের রাষ্ট্র ও সমাজের প্রকৃত চরিত্র প্রকাশ করেছে।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আহত শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়ানোর পরিবর্তে তাদেরকেই দোষারোপ করলো। হামলার পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্তের বদলে দায় চাপিয়ে তারা নিজেদের দায়িত্ব এড়াতে ব্যস্ত হলো। বিশ্ববিদ্যালয় কোনো কারখানা নয়; এটি শিক্ষার্থীদের নৈতিক আশ্রয়স্থল। সেই আশ্রয় যদি ভেঙে পড়ে, তাহলে তরুণ প্রজন্ম কোথায় নিরাপত্তা খুঁজবে? প্রশাসনের এই নির্লিপ্ততা নিছক ব্যর্থতা নয়—এটি শিক্ষার্থীদের প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা। আর সেই বিশ্বাসঘাতকতায় মদদ দিচ্ছে কিছু গণমাধ্যম, যারা সত্য নয়, ক্ষমতার পাশে দাঁড়াতে আগ্রহী।

বাংলাদেশে (উপমহাদেশের সামগ্রিক প্রেক্ষাপটে) শিক্ষাঙ্গনে নারীদের দেখা হয় একটি দ্বৈত ও দ্বিধাগ্রস্ত মানসিকতা দিয়ে। একদিকে নারীদের উচ্চশিক্ষায় অংশগ্রহণ বেড়েছে, মেধা ও যোগ্যতায় তারা এগিয়ে যাচ্ছে; অন্যদিকে তাদের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি এখনও অনেক ক্ষেত্রেই পিতৃতান্ত্রিক, যৌনবিদ্বেষী, ও পক্ষপাতমূলক। কারণ, নারী শিক্ষার্থী কোনো ইস্যুতে জড়িত হলেই প্রথমে তার চরিত্রকে প্রশ্নবিদ্ধ করা হয়। ক্লাসে ভালো করলে বলা হয় “স্যার ফেভার করছে”, প্রতিবাদ করলে বলা হয় “উচ্ছৃঙ্খল”। ব্যক্তিগত জীবনের স্বাধীনতা থাকলেও সেটিকে অতিরঞ্জিত, বিকৃত বা যৌন রঙে উপস্থাপন করা হয়। অনেক ক্ষেত্রেই নারী শিক্ষার্থীর মেধা নয়, তার পোশাক, চলাফেরা, সৌন্দর্য বা শরীর নিয়ে আলোচনা হয়।

সহপাঠী থেকে শিক্ষক—সব জায়গাতেই এই অবচেতনে গেঁথে থাকা যৌন দৃষ্টি কাজ করে। ছাত্ররাজনীতি, শিক্ষার্থী সংগঠন বা বিশ্ববিদ্যালয়ের নেতৃত্বের জায়গায় নারীদের উপস্থিতি নগণ্য। তারা নেতৃত্বে এলে তাদের ক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে—“কোটা পেয়ে এসেছে”, “ব্যাকডোর সাপোর্ট আছে”—এই ধরনের মন্তব্য শোনা যায়। যৌন হয়রানি শিক্ষাঙ্গনে একটি প্রাতিষ্ঠানিক রোগ—শিক্ষক, কর্মচারী, এমনকি সহপাঠী—সবখানেই এর শিকার নারীরা। অভিযোগ করলে প্রমাণ চাওয়া হয়, চুপ থাকলে বলা হয় ‘নষ্ট বলে চুপ আছে”। নারী শিক্ষার্থীর অর্জনকে প্রায়ই ভাগ্য, সুপারিশ বা সৌন্দর্যের সাথে যুক্ত করা হয়। অথচ সামান্য ভুল বা বিতর্ক হলেই তাকে প্রতীকী শাস্তির শিকার হতে হয়।

নারী শিক্ষার্থীর ব্যক্তিগত সম্পর্ক, সামাজিক মেলামেশা, এমনকি ফেসবুক পোস্টও তার বিরুদ্ধে প্রমাণ হিসেবে ব্যবহৃত হয়। বিশ্ববিদ্যালয় আবাসিক হলে তা আরও প্রকট—“রাতে ফিরেছে”, “কার বাসায় গেছে”—এই ধরনের কটাক্ষ গুজবের আকারে ছড়ানো হয়। শিক্ষাঙ্গনে নারীদের শিক্ষার্থী নয়, প্রায়ই “নারী” হিসেবেই দেখা হয়, যেখানে তার মেধা নয়, তার চরিত্র, পোশাক, চলাফেরা, ব্যক্তিগত সম্পর্ক—এসবই বিচার্য হয়ে ওঠে। যতক্ষণ না এই মানসিকতা বদলাবে, ততক্ষণ নারী শিক্ষার্থী যতই এগিয়ে যাক, একটি অদৃশ্য পুরুষতান্ত্রিক সকলে তারা বাধা থাকবেই।

নারীকে সম্মান দেওয়ার কথা আমরা মুখেই বলি, স্লোগান তুলি আরও বেশি—কিন্তু সেই সম্মান আজও বেশিরভাগ সময় শর্তসাপেক্ষ, নিয়ন্ত্রিত এবং ভান সর্বস্ব। সত্যিকার সম্মান তখনই সম্ভব, যখন নারীকে কেবল মেয়ে, স্ত্রী, মা, বোন নয়— একজন পূর্ণাঙ্গ মানুষ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হবে। নারীর সম্মান মানে তাকে কালো কাপড়ে ঢেকে রাখা নয়, ভয় দেখিয়ে থামিয়ে দেওয়া নয়, তার অধিকার খণ্ডিত করে রক্ষা করার ভান নয়—নারীর সম্মান মানে তার স্বাধীন সত্তাকে মেনে নেওয়া। যে দিন এই মানসিকতা বদলাবে, সেদিন আর প্রশ্ন উঠবে না—নারী কি আদৌ সম্মান পাচ্ছে?

লেখক : কবি ও কথাসাহিত্যিক।

এইচআর/জেআইএম

Read Entire Article