এবারের বিশ্বকাপে বারবার যেটা হয়েছে, শেষ দিনও তাই হলো। অন্য ম্যাচগুলোর মতো আজ মঙ্গলবার সেন্ট ভিনসেন্টে বাংলাদেশের বোলাররা একটা অভাবনীয় সুযোগ তৈরি করে দিয়েছিলেন। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে দুই আফগান ওপেনার রহমানুল্লাহ গুরবাজ আর ইব্রাহিম জাদরান ১১৮ রানের জুটি করেছিলেন এবং ১৪৮ রানের ছোট নিয়েও শেষ পর্যন্ত অসিদের হারিয়ে হৈচৈ ফেলে দিয়েছিল যে আফগানিস্তান, তাদেরকে হারানোর জন্য যা করণীয় বোলাররা তা করে দিয়েছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ব্যাটিং ব্যর্থতাই কাল হলো বাংলাদেশের।
কেন পুরো আসরের মতো গতকাল টাইগার ব্যাটাররা ব্যর্থতার ঘানি টানলেন? এটা কি শুধু ব্যাটারদের ব্যর্থতা? টিম ম্যানেজমেন্টের কি কোনোই দায় নেই? হেড কোচ, অন্যান্য কোচিং স্টাফ কী করলেন? ওপেনিং ভালো হচ্ছে না? টপঅর্ডার পুরোই ফ্লপ। সাকিব আল হাসানও নিজেকে সেভাবে মেলে ধরতে পারেননি। মাহমুদউল্লাহর ব্যাট থেকেও বড় ইনিংস বেরিয়ে আসছে না। একমাত্র তাওহিদ হৃদয়ই স্বাচ্ছন্দে খেলেছেন। কিন্তু এই তরুণকেও কি ভালমতো কাজে লাগানো সম্ভব হয়েছে?
দেশ বরেণ্য কোচ, ক্রিকেট বোদ্ধা-বিশ্লেষক নাজমুল আবেদিন ফাহিম মনে করেন, তাওহিদ হৃদয়কে ঠিকমতো কাজে লাগানো সম্ভব হয়নি। ফাহিমের অনুভব, হৃদয়কে আরও ওপরে খেলানো উচিত ছিল। তাতে করে দলের প্রাথমিক বিপর্যয় কেটে ব্যাটিংয়ে ছন্দ ফিরে আসার সম্ভাবনা তৈরি হতো।
ফাহিম বলেন, ‘আমার মনে হয়, এই জায়গায় আমরা একটা কৌশলগত ভুল করেছি। আমরা যদি তাওহিদ হৃদয়কে ব্যবহার করতে পারতাম, তাহলে ব্যাটিংটা আরও ভালো হতো।’
হৃদয়ের প্রশংসা করে কোচ ফাহিম বলেন, ‘এবারের বিশ্বকাপ দলে হাতে গোনা দুই একজন মাত্র ক্রিকেটার সাহস নিয়ে আস্থার সঙ্গে খেলেছে। তাদের অন্যতম হলো হৃদয়। খুব ইতিবাচক মানসিকতায় খেলতে পেরেছে। তাকে ওপরে ব্যবহার করলে ব্যাটিংটা ভালো হতো। কিন্তু আমরা হৃদয়কে সঠিক সঠিক সময় ও জায়গায় ব্যবহার করতে পারিনি। তাকে এমন সময় নামিয়েছি, যখন ব্যাটিংয়ের মোমেন্টাম নষ্ট হয়ে গেছে। আরও আগে নামালে হৃদয়ই হয়তো মোমেন্টাম এনে দিতে পারতো।’
ফাহিমের দাবি, গতকালের ম্যাচেও যদি হৃদয় ওপরে খেলতো, তাহলে রান রেট ৯ এ নেমে আসতো।
হৃদয়ের পক্ষেই ওই ওভার পিছু লক্ষ্যমাত্রা ছোঁয়া সম্ভব ছিল। ফাহিমের চোখে হৃদয়ের মতো কেউ আর এমন স্বাচ্ছন্দে সাবলীল ঢংয়ে খেলতে পারেননি।
ফাহিম বলেন, ‘এই আসরে আর কাউকে দেখিনি। সাকিব, শান্ত, লিটন, মাহমুদুল্লাহকেও দেখিনি। হৃদয়ের পক্ষে এমন ইনিংস খেলা সম্ভব ছিল। কিন্তু আমরা তাকে জায়গামতো কাজে লাগাতে পারিনি। আমরা আমাদের রিসোর্সটাও ভালো ব্যবহার করিনি।’
এআরবি/এমএইচ/