১০ লাখে বিক্রির আশা ১ টনের ‘সম্রাট’

3 months ago 52
কোনো ধরনের মোটাতাজা করণ ওষুধ নয়, সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক ঘাস আর লতাপাতা খেয়েই বেড়ে উঠেছে বিশাল দেহের এক গবাদিপশু। আর সন্তান স্নেহে পরম যতনে লালনপালন করা গরুটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘সম্রাট’। যার তিন বছর বয়সে এখন ওজন প্রায় ১ টন বা ১ হাজার কেজি।  সম্প্রতি আসন্ন ঈদুল আজহায় গরুটি বিক্রির জানান দিয়েছেন এ পশুর পালনকর্তা। যা সারা ফেলেছে গোটা উপকূলজুড়ে। এ বছর কোরবানির হাটে বিক্রি করা হবে সম্রাটকে। খামারি যার দাম হাঁকিয়েছেন ১০ লাখ টাকা। পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার বালীয়াতলী ইউপির একজন সফল খামারি খোকন গাজী। গত ৫ বছর ধরে এই উদ্যোক্তা গরু পালন করে বেশ লাভের মুখ দেখছেন তিনি। তবে তার খামারে বিভিন্ন প্রজাতির গরু পালন করলেও আমেরিকান ফ্লাগ-বি জাতের সম্রাট নজর কেড়েছে স্থানীয়সহ সব শ্রেণির মানুষের।  এদিকে বিশালাকৃতির এই গরুটি একনজর দেখতে প্রতিদিনই উৎসুক মানুষ ভিড় করছেন তার বাড়িতে। আর সম্রাটকে একনজর দেখেই চোখ কপালে উঠছে কৌতূহলীদের। প্রতিদিন অন্তত ২০ কেজি ঘাস, ভূষিসহ প্রভৃতি প্রায় ১ মণ প্রাকৃতিক খাবারের জোগান দিতে হয় সম্রাটের জন্য। এ ছাড়া শ্যাম্পু দিয়ে প্রতিদিন গোসলের পাশাপাশি তার জন্য রয়েছে আরামদায়ক বাতাসে ঠান্ডা রাখতে পাখার ব্যবস্থা। পরিবারের সদস্য হিসেবে অতি যতনে বেড়ে ওঠা এই প্রাণীটির কোনো ধরনের রোগবালাই না থাকায় এ বছর বিক্রি না হলেও চিন্তিত নন খামারি। স্থানীয়রাও বলছেন, দক্ষিণাঞ্চলে এর আগে ঘাসে বেড়ে ওঠা এতটা বিশাল গরু আগে কখনোই দেখেননি তারা।  স্থানীয় হানিফ মাঝি জানান, তার বয়স ৭০ বছর। কিন্তু শুধু ঘাস আর লতাপাতায় গরু এতটা বড় হয় তা আগে কোনোদিনই তার চোখে পড়েনি সম্রাটকে দেখতে আসা ব্যবসায়ী বাশার বলেন, আমি শুনেছি এখানে একটি বড় গরু আছে। তবে এতটা বড় তা কল্পনাও করিনি।  তিনি বলেন, এটি স্থানীয়ভাবে বিক্রি হলে কোরবানির ঈদে গরিব মানুষ ভেজালমুক্ত মাংসের স্বাদ নিতে পারত। কারণ ওষুধ ছাড়া ঘাস খাইয়ে গরুটি পালন করা হয়েছে।  এ বিষয়ে খামারি খোকন গাজী জানান, তিনি ৩ বছর আগে ১ লাখ টাকায় ছোট বলদ বাছুরটি কিনে আনেন। এরপর থেকে ওর (সম্রাট) আচরণ বন্ধুসুলভ হওয়ায় পরিবারের সদস্যদের মতো করে পালন করতে থাকি। কিন্তু সব খাবারের মধ্যে গরুটির ঘাসের প্রতি আগ্রহ বেশি থাকায় আমিও প্রথমে শুধু ঘাসই খেতে দেই। এখন প্রতিদিন ঘাস-ভুসিসহ সম্রাটের ৭০০ টাকার খাবার প্রয়োজন বলে জানান খোকন।  তিনি বলেন, এ বছর সম্রাটকে ঈদের হাটে তোলার খবর পেয়ে প্রতিদিন শত শত মানুষ ওকে দেখতে আসে। তবে এতো বড় গরু বিধায় কেউ দাম বলেনি। কিন্তু বিক্রি না হলেও চিন্তা নেই তার। কারণ হিসেবে বলেন, ওর শরীরে কোনো রোগ নেই। তবে খামার থেকে বের করতে কয়েক জনের সাহায্য নিতে হয়। একা নাড়াচাড়া করা সম্ভব নয় বলে জানান তিনি।  কলাপাড়া উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ডা. মারুফ বিল্লাহ খান বলেন, ভেজালের ভিড়ে সম্রাটের ওজন ও বিশালাকৃতি একটি বিরল উৎপাদন। সম্পূর্ণভাবে গরুটি প্রাকৃতিক নির্যাসে বেড়ে উঠেছে। আসন্ন ঈদে বিক্রি হলে ভেজালমুক্ত মাংসের চাহিদা পূরণে বাজারে সাড়া ফেলবে ‘সম্রাট’ বলে প্রত্যাশা করেন তিনি।
Read Entire Article