টাইগারদের পরবর্তী মিশন ওয়েস্ট ইন্ডিজের সেন্ট ভিনসেন্ট। কোটি বাংলাদেশির আশার প্রতীক হয়ে টিম বাংলাদেশ এখন ওয়েস্ট ইন্ডিজের সেন্ট ভিনসেন্টে।
বাংলাদেশ সমর্থকদের বড় অংশ সেন্ট ভিনসেন্টের অ্যারোনেস ভ্যালে স্টেডিয়ামের উইকেট নিয়ে চিন্তিত। অনেকেরই কৌতুহলী প্রশ্ন, আচ্ছা সেন্ট ভিনেসেন্টের উইকেট কেমন হব? উইকেট কি ব্যাটিং ফ্রেন্ডলি, হাই স্কোরিং পিচ হবে? নাকি নিউইয়র্কের নাসাউ স্টেডিয়ামের মত বিদঘুটে হবে? এমন প্রশ্ন এখন সবার মুখে মুখে।
এসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে জানা গেল, সেন্ট ভিনসেন্টের যে পিচে আগামীকাল, ১৩ জুন বৃহস্পতিবার রাতে বাংলাদেশ আর নেদারল্যান্ডসের খেলা, সেখানে এখন আর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের নিয়মিত আসর বসে না।
ইতিহাস জানান দিচ্ছে, সেন্ট ভিনসেন্টে শেষ টেস্ট হয়েছিল ১০ বছর আগে। ২০১৪ সালের ৫-৯ সেপ্টেম্বর স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করেছিল বাংলাদেশ।
আর ওয়ানডে হয়েছিল ২০১২ সালে; অস্ট্রেলিয়ার সাথে খেলেছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। আর এই ভেন্যুতে শেষ আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ম্যাচ হয়েছে ১১ বছর আগে ২০১৩ সালে। ২ ম্যাচের সিরিজে ক্যারিবীয়রা প্রতিদ্বন্দ্বীতা করেছিল পাকিস্তানের সঙ্গে। ২ ম্যাচই জিতেছিল পাকিস্তানীরা।
সেই সিরিজে উইকেটের চালচিত্র ছিল দু’রকম। ২০১৩ সালের ২৭ জুলাই প্রথম ম্যাচের স্কোরলাইন ছিল ১৫০ প্লাস। প্রথমে ব্যাট করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৭ উইকেটে ১৫২ রান তুলেছিল।
জবাবে পাকিস্তান ৮ উইকেট খুইয়ে শেষ বলে জয় পায়। শেষ বলে দরকার ছিল ১ রানের। ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান লেগস্পিনার স্যামুয়েল বদরির বলে ছক্কা হাঁকিয়ে পাকিস্তানকে নাটকীয় জয় উপহার দেন অভিষেক হওয়া বাঁ-হাতি স্পিনার জুলফিকার বাবর।
অন্যদিকে পরের ম্যাচটি ছিল লো স্কোরিং। ১৩৫ রানের ছোট স্কোর নিয়েও ১১ রানে জিতেছিল মোহাম্মদ হাফিজের পাকিস্তান। দু’দলের সব স্পিনাররাই কল কাঠি নেড়েছেন। প্রথম খেলায় পাকিস্তানের লেগস্পিনার আফ্রিদি (৩ ওভারে ১/২৯) আর বাঁ-হাতি স্পিনার জুলফিকার বাবর (৪ ওভারে ২/৩৭) মার খেলেও দুই অফস্পিনার মোহাম্মদ হাফিজ (৪ ওভারে ১/৯) আর সাঈদ আজমল (৪ ওভারে ২/২১) একদমই রান দেননি।
অন্যদিকে ওয়েস্ট ইন্ডিজের পক্ষে সবচেয়ে সফল বোলার ছিলেন দুই স্পিনার সুনিল নারিন (৪ ওভারে ৩/২৬) আর লেগস্পিনার স্যামুয়েল বদরি (২/১৬)।
এবার বিশ্বকাপ উপলক্ষে সেন্ট ভিনসেন্টে প্রথমবার ফ্লাডলাইট লাগানো হয়েছে। আগামীকাল বৃহস্পতিবার নেদারল্যান্ডসের সাথে খেলাটি হবে দিনের আলোয়। তবে আগামী ১৬ জুন নেপালের সাথে বাংলাদেশের শেষ ম্যাচটি হবে ফ্লাডলাইটের আলোয়।
সময়ের হিসেবে ১১ বছর পর আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ম্যাচ হচ্ছে। এ দীর্ঘ সময়ে ক্যারিবিয়ান সাগরে অনেক জল গড়িয়েছে। খুব স্বাভাবিকভাবে উইকেটের চরিত্র, গতি-প্রকৃতি বদলের সম্ভাবনাও প্রচুর। তারপরও সেন্ট ভিনসেন্টের পিচ নিয়ে নানা জল্পনা, কল্পনা। তবে ধরেই নেয়া যায়, নিউইয়র্কের নাসাউ স্টেডিয়ামের মত পাগলাটে, অস্বাভাবিক আচরণ করবে না পিচ। ডাবল পেস আর আন-ইভেন বাউন্স থাকবে না। আবার ব্যাটারদের স্বর্গ হওয়ার সম্ভাবনাও কম।
ভাবা হচ্ছে, উইকেট হবে মাঝারী গতি ও বাউন্সের এবং স্কোর লাইনও থাকতে পারে মাঝারি; ১৫০-১৬০ কিংবা সর্বোচ্চ ১৭০। নাসাউ স্টেডিয়ামের মত ১০০-১১৫; ১২০ রান করে জেতার সম্ভাবনা কম। তার মানে শুধু বোলিং দিয়ে জেতা যাবে না। ব্যাটারদের ব্যাটেও রান দরকার।
বাংলাদেশের ব্যাটাররা কী পরিবর্তিত পরিবেশ-পরিস্থিতিতে গিয়ে রানের দেখা পাবেন? লিটন, তানজিদ আর অধিনায়ক শান্তর ব্যাটে রান খুব দরকার। ওপরের দিকে তাদের অন্তত ২ জন নিদেনপক্ষে একজন একটা করে লম্বা ইনিংস খেললেও হয়ত চলবে।
আর একদমই রান না পেলে কিন্তু ডাচদের সাথে কুলিয়ে ওঠা কঠিন। ডাচ বোলিং বেশ ধারালো। পেস ও স্পিনে বৈচিত্র্যও আছে। ৩ পেসারের সাথে সমান স্পিনার কম্বিনেশনটা হতে পারে অধিক সকার্যকর। তাই একাদশ শেখ মেহদির অন্তর্ভুক্তির সম্ভাবনা খুব বেশি।
এআরবি/আইএইচএস