১১ মাসের শিশুকে মাঠের পাশে রেখে হ্যান্ডবল খেললেন তানজিমা

4 weeks ago 20

পল্টনের শহীদ (ক্যাপ্টেন) এম.মনসুর আলী স্টেডিয়ামে চলমান ৩৬তম জাতীয় নারী হ্যান্ডবল চ্যাম্পিয়নশিপে দুধের শিশুকে ড্রেসিংরুমে রেখে খেলার মাঠে নেমে আলোড়ণ সৃষ্টি করেছেন তানজিমা আক্তার। এই নারীর শিশু সন্তানের নাম তাওহিদুল কবির।

শনিবার বিকেল ম্যাচ শেষে অন্যরা যখন ওয়ার্ম আপে ব্যস্ত তানজিমা আক্তার দৌড়ে এলেন মাঠের পাশে। সেখানেই এক সতীর্থের কোলে ছিল ১১ মাস বয়সী ছেলে তাওহিদুল কবির; কিন্তু সেই সতীর্থের কোলে ছেলেকে দেখতে না পেয়ে দুশ্চিন্তা ভর করে চেহারায়। খানিক পর ড্রেসিং রুম থেকে আরেক সতীর্থ এসে তাওহিদুলকে দিলেন মায়ের কোলে। মায়ের মুখে ফুটে উঠল স্বস্তির হাসি।

তানজিমা খেলছেন বাংলাদেশ পুলিশ দলের হয়ে। মাঠের বাইরে দুধের শিশু আর মাঠে দারুণভাবে প্রতিপক্ষকে সামলেছেন তানজিমা।

কুমিল্লার মেয়ে তানজিমার পুলিশে চাকরি হয়েছে ২০১৭ সালে। কিন্তু হ্যান্ডবল খেলা শুরু করেন ২০২০ সাল থেকে। বর্তমানে পুলিশ দলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়।

তানজিমার স্বামী তানভীর আহমেদও পুলিশে কর্মরত। শনিবার ম্যাচের পর তানজিমাকে নিয়ে গণমাধ্যমের ছিল ব্যাপক আগ্রহ। তিনি বলছিলেন,‌ ‘খেলাধুলার ব্যাপারে আমার স্বামী সব সময় সমর্থন দেন। তিনি বর্তমানে ৯৯৯-এ দায়িত্ব পালন করছেন। আমরা দুজনই ঢাকায় থাকায় ছেলেকে রেখে খেলাধুলা করতে বেশ সুবিধা হয়েছে।’

কুষ্টিয়ার বিপক্ষে জয়ের পর ম্যাচ শেষে বলেন, ‘মাঝে মাঝে বাবুকে রেখে খেলতে কষ্ট হয়। তারপরও সব কিছু মিলিয়ে মানিয়ে নিচ্ছি। যখন ট্রেনিংয়ে থাকি তখন ছেলেকে ওর বাবা রাখে। এছাড়া আমার আত্মীয়-স্বজনও রাখে ছেলেকে। আমার আম্মু অসুস্থ বলে ঢাকায় আসতে পারেন না। আম্মু এলে আরেকটু সুবিধা হতো।’

মাঠের খেলা নয় শুধু, মাঠের বাইরেও ডিউটি করতে হয় তানজিমাকে। কখনও ছাত্রদের আন্দোলনে, কখনও রাজনৈতিক মিছিল মিটিংয়ে দায়িত্বে থাকেন। তানজিমার কথা, ‘যখন আমাদের বেশি ডিউটি থাকে তখন খেলা ক্লোজ করে ডিউটিতে যেতে হয়। রাস্তায় মিছিলে, আন্দোলনের সব রকম ডিউটি করা হয়েছে।’

পুলিশের আন্তঃবাহিনীতে হ্যান্ডবলে নিয়মিত খেলেন তানজিমা। বাংলাদেশ পুলিশ নারী হ্যান্ডবল দল ২০১৭ সালে হয় জাতীয় চ্যাম্পিয়ন। গত আসরেও যৌথ চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। কখনও জাতীয় দলে ডাক পাননি তানজিমা। তবে সুযোগ পেলে খেলতে চান জাতীয় দলের জার্সিতে, ‘অন্য সবার মতো আমারও একটাই স্বপ্ন জাতীয় দলে খেলব। তবে ছেলে আরেকটু বড় হলে তবেই ক্যাম্পে যাব।’

আরআই/আইএইচএস/

Read Entire Article