১১০০ পর্যটক নিয়ে সেন্টমার্টিন গেলো তিন জাহাজ

৯ মাস বন্ধ থাকার পর কক্সবাজার-সেন্টমার্টিন নৌরুটে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল শুরু হয়েছে। মৌসুমের প্রথমদিন সোমবার (১ ডিসেম্বর) ভোর ৭টায় শহরের নুনিয়ারছড়া বিআইডব্লিউটিএ জেটিঘাট থেকে এক হাজার ১০০জন পর্যটক নিয়ে দ্বীপের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয় এমভি বার আউলিয়া, কর্ণফুলী ও কিয়ারি সিন্দবাদ নামে তিনটি জাহাজ। জেলা প্রশাসন, পরিবেশ অধিদপ্তর ও ট্যুরিস্ট পুলিশের কঠোর তদারকিতে টিকিটের অতিরিক্ত যাত্রী ও প্লাস্টিক পণ্যবহন নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। সচেতনতার অংশ হিসেবে প্রথম দিন যাত্রীদের অ্যালোমুনিয়ামের পানির বোতল সরবরাহ করা হয় বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক এম এ মান্নান। সকালে জেলা প্রশাসকের সঙ্গে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) মো. শাহিদুল আলম, কক্সবাজার সদরের ইউএনও নীলুফা ইয়াসমিন চৌধুরী, ট্যুরিস্ট পুলিশের কক্সবাজারের প্রধান অতিরিক্ত ডিআইজি আপেল মাহমুদসহ সংশ্লিষ্টরা ঘাটে এসে পর্যটকদের অভিবাদন জানান ও সরকারি নির্দেশনা তদারকি করেন। এদিকে সরকারি ১২ নির্দেশনা মেনে সোমবার (১ ডিসেম্বর) থেকে ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত পরবর্তী দুই মাস সেন্টমার্টিনে পর্যটকদের রাত্রিযাপনের সুযোগ থাকছে। জাহাজ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, প্রথম দিনের জন্য তি

১১০০ পর্যটক নিয়ে সেন্টমার্টিন গেলো তিন জাহাজ

৯ মাস বন্ধ থাকার পর কক্সবাজার-সেন্টমার্টিন নৌরুটে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল শুরু হয়েছে। মৌসুমের প্রথমদিন সোমবার (১ ডিসেম্বর) ভোর ৭টায় শহরের নুনিয়ারছড়া বিআইডব্লিউটিএ জেটিঘাট থেকে এক হাজার ১০০জন পর্যটক নিয়ে দ্বীপের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয় এমভি বার আউলিয়া, কর্ণফুলী ও কিয়ারি সিন্দবাদ নামে তিনটি জাহাজ।

জেলা প্রশাসন, পরিবেশ অধিদপ্তর ও ট্যুরিস্ট পুলিশের কঠোর তদারকিতে টিকিটের অতিরিক্ত যাত্রী ও প্লাস্টিক পণ্যবহন নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। সচেতনতার অংশ হিসেবে প্রথম দিন যাত্রীদের অ্যালোমুনিয়ামের পানির বোতল সরবরাহ করা হয় বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক এম এ মান্নান।

সকালে জেলা প্রশাসকের সঙ্গে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) মো. শাহিদুল আলম, কক্সবাজার সদরের ইউএনও নীলুফা ইয়াসমিন চৌধুরী, ট্যুরিস্ট পুলিশের কক্সবাজারের প্রধান অতিরিক্ত ডিআইজি আপেল মাহমুদসহ সংশ্লিষ্টরা ঘাটে এসে পর্যটকদের অভিবাদন জানান ও সরকারি নির্দেশনা তদারকি করেন।

১১০০ পর্যটক নিয়ে সেন্টমার্টিন গেলো তিন জাহাজ

এদিকে সরকারি ১২ নির্দেশনা মেনে সোমবার (১ ডিসেম্বর) থেকে ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত পরবর্তী দুই মাস সেন্টমার্টিনে পর্যটকদের রাত্রিযাপনের সুযোগ থাকছে।

জাহাজ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, প্রথম দিনের জন্য তিনটি জাহাজে টিকিট আগে বিক্রি হয়েছিল এবং এক হাজার ১০০ পর্যটক গেলেন দ্বীপে।

সি ক্রুজ অপারেটর ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (স্কোয়াব) সাধারণ সম্পাদক হোসাইন ইসলাম বাহাদুর বলেন, মৌসুমের প্রথম যাত্রার সব প্রস্তুতি আগেই নেওয়া ছিল। প্রশাসনের সহযোগিতায় সুন্দর ও পরিচ্ছন্নভাবে যাত্রা শুরু করা গেছে। নিরাপদ ও মানসম্মত ভ্রমণ নিশ্চিত করতে আমরা প্রতিশ্রুতি বদ্ধ।

বাহাদুর আরও বলেন, আগামী মৌসুমে অন্তত চার মাস রাত্রিযাপনের সুযোগ মিললে জাহাজ মালিকরা ক্ষতি পোষাতে পারবেন। লাভবান হবে পর্যটন খাতও।

গত ১ নভেম্বর সেন্টমার্টিনে পর্যটক প্রবেশ উন্মুক্ত হলেও রাত্রিযাপন নিষেধাজ্ঞা থাকায় এতদিন কোনো জাহাজ যাতায়াত করেনি। গতবারের মতো এবারও শহরের নুনিয়ারছড়া বিআইডব্লিউটিএ জেটিঘাট থেকে চারটি জাহাজ চলাচলের অনুমতি পেয়েছে। প্রতিদিন সর্বোচ্চ দুই হাজার পর্যটক বঙ্গোপসাগর পাড়ি দিয়ে প্রবালদ্বীপে যেতে পারবেন।

১১০০ পর্যটক নিয়ে সেন্টমার্টিন গেলো তিন জাহাজ

জেলা প্রশাসনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, প্রতিদিন সকাল ৭টায় জাহাজ সেন্টমার্টিনের উদ্দেশে ছাড়বে এবং পরদিন দুপুর ৩টায় কক্সবাজারে ফিরবে।

বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের অনুমোদিত ওয়েব পোর্টাল থেকে অনলাইনে টিকিট সংগ্রহ বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। প্রতিটি টিকিটে-ট্রাভেল পাস ও কিউআর কোড সংযুক্ত থাকবে। কিউআর কোড ছাড়া কোনো টিকিটকে বৈধ ধরা হবে না। জেটিঘাটে টিকিট যাচাইয়ে ট্যুরিজম বোর্ডের ২০ জন ভলান্টিয়ার মাঠে রয়েছেন। একইভাবে ভলান্টিয়ার থাকবেন সেন্টমার্টিন জেটিঘাটেও।

দীর্ঘ বিরতির পর পর্যটকদের আগমনের খবরে সেন্টমার্টিনে ফিরে এসেছে প্রাণচাঞ্চল্য। তবে জেটিঘাটের কাজ এখনো পুরোপুরি শেষ হয়নি।

সেন্টমার্টিন দ্বীপের ভারপ্রাপ্ত ইউপি চেয়ারম্যান ফয়েজুল ইসলাম বলেন, গত এক দশক থেকে পর্যটন আমাদের জীবিকার মূল ভরসা। সংকট থাকলেও আতিথেয়তায় আমরা কোনো ঘাটতি রাখব না।

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এসএস রহমান ইন্টারন্যাশনালের প্রতিনিধি আলী হায়দার জানান, আগামী সপ্তাহ দুয়েকের মাঝে জেটিঘাটের কাজ পুরোপুরি শেষ হবে।

এদিকে সেন্টমার্টিনের নাজুক প্রতিবেশ ব্যবস্থা রক্ষায় সরকার ঘোষিত ১২ নির্দেশনা এবার কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করা হবে। তারমধ্যে রাতে সৈকতে আলো জ্বালানো, উচ্চশব্দ বা বারবিকিউ পার্টি, কেয়াবনে প্রবেশ ও কেয়া ফল সংগ্রহ-বিক্রি, কাছিম, পাখি, রাজকাঁকড়া, প্রবাল, শামুক-ঝিনুকসহ জীববৈচিত্র্যের ক্ষতি হয় এমন সব কাজ, সৈকতে মোটরসাইকেল, সি-বাইকসহ মোটরচালিত যানবাহন, প্লাস্টিকমুক্ত দ্বীপের উদ্যোগ, পলিথিন সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ, একবার ব্যবহার্য প্লাস্টিক নিরুৎসাহিত, প্লাস্টিক বোতলের বদলে নিজস্ব পানির ফ্লাস্ক ব্যবহারের পরামর্শ ও জাহাজে ওঠার সময় পর্যটকদের বিনামূল্যে অ্যালুমিনিয়ামের পানির বোতল দেবে পরিবেশ অধিদপ্তর।

পরিবেশ অধিদপ্তর কক্সবাজার কার্যালয়ের উপ-পরিচালক খন্দকার মাহমুদ পাশা বলেন, প্লাস্টিক দূষণ কমাতে অ্যালুমিনিয়াম বোতল ব্যবহারে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। এটা পালন হলে কার্যকর সুফল আসবে।

সংশ্লিষ্টদের মতে, নতুন ব্যবস্থাপনায় সুশৃঙ্খল পর্যটন নিশ্চিত হলে ফের প্রাণ ফিরে পাবে দেশের একমাত্র প্রবালদ্বীপ সেন্টমার্টিন। স্থানীয় ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে প্রশাসন-সব মহলের প্রত্যাশা, পরিবেশ রক্ষা ও নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনার সমন্বয়ে এবার সেন্টমার্টিনে পর্যটন হবে আরও দায়িত্বশীল ও টেকসই।

কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক এম এ মান্নান বলেন, সেন্টমার্টিন আমাদের জাতীয় সম্পদ। পরিবেশ রক্ষা ও দায়িত্বশীল পর্যটনের স্বার্থে নির্দেশনা মেনে চলা সবার দায়িত্ব। আমরা সেটা নিশ্চিত করতে লঞ্চ ঘাটে এসে সবকিছু তদারক করছি। পর্যটক, জাহাজ মালিক, ব্যবসায়ী এবং প্রশাসনের সমন্বিত তদারকির মধ্য দিয়ে দ্বীপের জীববৈচিত্র্য রক্ষা নিশ্চিত করতে তাগাদা দেন ডিসি।

সায়ীদ আলমগীর/আরএইচ/জেআইএম

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow