১৫ দিনের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর ফের ভারত যাওয়ার এত কী তাড়া ছিল

3 months ago 17

মাত্র ১৫ দিনের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ফের ভারত যাওয়ার এত কী তাড়া ছিল, এমন প্রশ্ন করেছেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমানের মান্না।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর কী বাধ্যবাধকতা ছিল যে তাকে ১৫ দিনের মধ্যে আবার ভারত যেতে হলো? কিছু পাওয়ার জন্য? তিনি (প্রধানমন্ত্রী) বলেছেন যা পেয়েছি তা বলে শেষ করা যাবে না। আমাদের প্রধান দাবি কী ছিল? ভারত আমাদের পানি দেয় না। এগুলো নিয়ে কোনো আলোচনা হয়েছে?

বুধবার (২৬ জুন ) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আয়োজিত মানববন্ধনে এসব কথা বলেন তিনি। ‘আজিজ-বেনজীর-মতিউরদের অবিশ্বাস্য দুর্নীতি, মরিচের দাম বিস্ময়কর বৃদ্ধি ও প্রধানমন্ত্রীর দাসখত দেওয়ার ভারত সফর’ এর প্রতিবাদে মানববন্ধন করে নাগরিক ঐক্য।

মানববন্ধনে মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, এবারের দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে সরকার ভারতের কাছে সবকিছু সমর্পণ করে এসেছে। ৭ জানুয়ারি ভোট করতে পারতো? ২০১৪ সালে ভোট করতে পারতো? পারতো না। ভারত নাক গলিয়েছে তাই পেরেছে। ভারতের সঙ্গে আমাদের বন্ধুত্বের সম্পর্ক, কিন্তু এই সরকার ক্ষমতায় থাকতে দেশের সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তা ভারতের হাতে তুলে দিয়েছে।

প্রধানমন্ত্রীর সমালোচনা করে তিনি বলেন, ৫৪টা নদী ভারত থেকে বাংলাদেশে ঢুকেছে। যখন কোনো নদীর পানি আরেকটা দেশে ঢুকবে তখন তা অবারিত থাকবে, কেউ (পানি প্রবাহে) বাধা দিতে পারবে না। ভারত গঙ্গায় বাঁধ দিয়েছে, তিস্তায় বাঁধ দিয়েছে। তিস্তার পানি আমার প্রাপ্য, এটা আমাকে দিতে হবে, এই কথা কি আপনারা (প্রধানমন্ত্রী ও সরকার) বলেছেন? বড় বড় যে কথা বলেন, এগুলো নিয়ে কোনো আলোচনা হয়েছে? আমাদের প্রধানমন্ত্রী তিস্তার পানির দাবি ছেড়ে দিয়ে এসেছেন।

নাগরিক ঐক্যের সভাপতি বলেন, ভারতের ট্রেন বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে ভারত যাবে। এটাকে কি ট্রানজিট বলে? এটাকে বলে করিডোর। যে ট্রেন করিডোর দেওয়া হয়েছে সেখানে যদি অস্ত্র যায়? সেনাবাহিনী যায়? আপনি তল্লাশি করতে পারবেন? বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে ভারত এখন সেভেন সিস্টার্সের রাস্তা করতে চায়।

ছাগলকাণ্ডে আলোচিত জাতীয় রাজস্ব রোর্ডের সদস্য মো. মতিউর রহমানের বিষয়ে মান্না বলেন, মতিউর যেদিন গেলেন (দেশত্যাগের বিষয়ে যে গুঞ্জন উঠেছে) সেদিনের আগে পর্যন্ত তার নামে কোনো মামলা, নিষেধাজ্ঞা নেই। যাওয়ার পরে বিদেশ যাওয়ার নিষেধাজ্ঞা দিলো! বাংলাদেশ এখন বিশ্বে একটা লুটপাটকারীদের দেশে পরিণত হয়েছে।

খেলাপি ঋণের বিষয়ে তিনি বলেন, একজন গরিব কৃষক ৩০ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে পরিশোধ করতে না পারলে তাকে থানায় নিয়ে যায়। কিন্তু পুলিশপ্রধান হাজার কোটি টাকা লুট করেন, কেউ দেখলো না? আজিজ, বেনজীরের পাসপোর্ট আটকে রাখা হলো না কেন? সরকার এদের রক্ষা করছে।

দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি প্রসঙ্গে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি বলেন, মরিচের দাম (কেজি) ঈদের আগে ৪০০ টাকা হয়েছিল। শেখ হাসিনার আমলে মরিচ, পেঁয়াজের এতই ঝাল, অথচ প্রধানমন্ত্রী বক্তব্য দিয়ে বেড়াচ্ছেন আওয়ামী লীগ যখন ক্ষমতায় আসে তখন নাকি দেশের মানুষ কিছু পায়। আজিজ-বেনজীররা পায়। যারা রিকশা, ভ্যান চালায় তারা কিছু পায় না। জিনিসের দাম এতই বেশি যে পকেটভর্তি টাকা নিয়ে গেলেও বাজারের ব্যাগ ভরে না।

মানববন্ধনে নাগরিক ঐক্যের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

ভারতের নতুন সরকারের শপথ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গত ৮ জুন দিল্লি যান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর ১০ জুন দেশে ফেরেন। পরে দ্বিপক্ষীয় সফরে ২১ জুন দিল্লি সফরে যান প্রধানমন্ত্রী।

আরএএস/কেএসআর/জেআইএম

Read Entire Article