১৫ বছর পর একঘরে ঠাঁই হলো রুস্তম-মর্জিনার

3 months ago 41

দীর্ঘ ১৫ বছর পর একঘরে একসঙ্গে থাকার সুযোগ হলো বৃদ্ধ দম্পতি রুস্তম আলী ও মর্জিনা বেগমের। নদীভাঙনে বসতঘর ও জমি-জমা হারিয়ে অসহায় হয়ে এই দম্পতির আশ্রয় হয়েছিল আলাদাভাবে দুই মেয়ের সংসারে। দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে ঈদ ও কোনো অনুষ্ঠান ছাড়া একে অপরের সঙ্গে দেখাও হয়নি। অবশেষে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর পেয়ে অপেক্ষা শেষ হলো তাদের। এখন থেকে তারা থাকবেন একসঙ্গে একই ঘরে।

ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার টবগী এলাকার বাসিন্দা মো. রুস্তম আলী ও তার স্ত্রী মর্জিনা বেগম বলেন, এক সময় তাদের বসতঘর, জমি-জমা সবই ছিল। তারা বোরহানউদ্দিন উপজেলার হাসান নগর ইউনিয়নের হাকিম উদ্দিনে বসবাস করতেন। পাঁচ মেয়ে নিয়ে তাদের ছিল সুখের সংসার। কিন্তু হঠাৎ নদীভাঙনের কারণে একে একে মেঘনার গর্ভে বিলীন হতে থাকে বসতঘর, বাগান, ফসলি জমি। এরপর কিছু দূরে গিয়ে জমি কিনে বসতঘর নির্মাণ করে কোনো রকমে মেয়েদের বিয়ে দেন। কিন্তু তার কিছুদিন পর বসতঘরটিও নদীরগর্ভে বিলীন হয়ে যায়।

এরপর রুস্তম ও মর্জিনা দম্পতির স্থান হয় মেয়েদের সংসারে। রুস্তম আলী থাকেন তৃতীয় মেয়ে জেসমিনের কাছে ও তার স্ত্রীর আশ্রয় হয় চতুর্থ মেয়ে রিনার কাছে। এভাবেই কেটে যায় ১৫ বছর। এই দীর্ঘ ১৫ বছর একে অপরের সঙ্গে দেখা হতো ঈদ ও কোনো অনুষ্ঠানে।

১৫ বছর পর একঘরে ঠাঁই হলো রুস্তম-মর্জিনার

তারা বলেন, প্রধানমন্ত্রীর উপহারের জমিসহ ঘর পেয়ে অবশেষে ১৫ বছর পর শেষ বয়সে একসঙ্গে থাকতে পারবো। টবগী দালালপুর আশ্রয়ণ প্রকল্পের একটি ঘরে থাকার সুযোগ হয়েছে তাদের। এজন্য তারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানান। যতদিন বাঁচবেন ততোদিনই প্রধানমন্ত্রীর জন্য দোয়া করবেন বলে জানান তারা।

একই আশ্রয়ণ প্রকল্পে ঘর পাওয়া মফিজুল ইসলাম ও খাদিজা বেগম দম্পতি জানান, নদীভাঙনে বাপ-দাদার বসতঘর ও জমি হারিয়ে দীর্ঘদিন ধরে টবগী এলাকার বেড়িবাঁধে টং ঘর তুলে বসবাস করছেন। রোদ, বৃষ্টি ও ঝড়ের সঙ্গে যুদ্ধ করে চলতো তাদের সংসার। এবার প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘরে থেকে সুখে-শান্তিতে বসবাস করার স্বপ্ন দেখছেন তারা।

১৫ বছর পর একঘরে ঠাঁই হলো রুস্তম-মর্জিনার

তাদের মতো বোরহানউদ্দিন উপজেলার টবগী দালালপুর আশ্রয়ণ প্রকল্পে ঘর পেয়েছেন ১৭৪ জন অসহায় ভূমিহীন পরিবার। প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর পেয়ে খুশি তারা। এছাড়াও আশ্রয়ণ প্রকল্পে গবাদি পশুসহ বিকল্প আয়ের মাধ্যমে ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন দেখছেন ওইসব পরিবারগুলো।

ভোলা জেলা প্রশাসক আরিফুজ্জামান বলেন, ভোলা জেলায় ৬ হাজার ৩৫৬ জন ভূমিহীন পরিবারের তালিকা আমরা তৈরি করেছি। এ পর্যন্ত ৪ হাজার ৪৪৯টি ঘর ভূমিহীনদের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়াও ১১ জুন মঙ্গলবার আরও ১ হাজার ২৩৪ জন ভূমিহীন পরিবারের মাঝে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর বিতরণ করা হবে। ওইদিন ভোলার বোরহানউদ্দিন, চরফ্যাশন ও মনপুরা উপজেলাকে প্রধানমন্ত্রী ভূমিহীন ও গৃহহীনমুক্ত ঘোষণা করবেন। এরআগে গত বছর ভোলা সদর উপজেলাকে ভূমিহীন ও গৃহহীনমুক্ত ঘোষণা করা হয়েছে।

জুয়েল সাহা বিকাশ/এফএ/এএসএম

Read Entire Article