আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এনসিপি ১৫০টি আসনে জয়ী হতে পারে বলে জানিয়েছেন দলটির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী। অন্যদিকে বিএনপি ৫০ থেকে ১০০টি আসন পাবে বলে দাবি করেছেন তিনি।
সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিনের সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি এসব কথা জানান।
নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, আমরা সার্ভে করে জানতে পেরেছি আগামী নির্বাচনে এনসিপির ১৫০টি আসনে জয়ী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে আমরা ৩০০ আসনে প্রার্থী দেবো এবং ৩০০ আসনে জয়ের জন্যই লড়বো।
তাহলে বিএনপি-জামায়াত কয়টা পাবে? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক বলেন, এটা তো আমি বলতে পারবো না। যারা ভোট দেবে তারাই বলতে পারবে। বিএনপি অনেকগুলো ডাটা সার্ভে করেছে। জামায়াতও করেছে। তবে আমি একবার বলেছিলাম, বিএনপি ৫০ থেকে ১০০ আসনের ওপরে যাবে না। আপনারা তো এখন বাস্তবচিত্র দেখতে পাচ্ছেন, দলটি তলানিতে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, সুখবর আসছে। এনসিপি নিবন্ধন পাবে বলে ইসি ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আমরা শাপলাতেই আছি, এনসিপি কনফার্ম শাপলাতেই থাকবে। এটা সাদাও হতে পারে, লালও হতে পারে। বিধিমালায় সংশোধনের সুযোগ আছে। এর মধ্যে একটি প্রতীক না পেলে এনসিপি পরবর্তী পদক্ষেপ নেবে।
আরও পড়ুন
ভণ্ডামি বাদ দিন, নির্বাচনে আসুন, বিএনপি-জামায়াতকে পাটওয়ারী
নিবন্ধন দিতে ইসির ইতিবাচক সিদ্ধান্ত, শাপলা প্রতীকে অনড় এনসিপি
ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন নিয়ে সংশয় প্রকাশ করে এই এনসিপি নেতা বলেন, বিএনপি ও জামায়াতসহ যে দলগুলো আছে, তারা কিন্তু জুলাই সনদের যে লিগ্যাল এসপেক্ট, সেই জায়গাটা এক্সিকিউশন লেভেলে আনতে পারছে না। এই দুটি দলের কারণে নির্বাচনটা বিলম্বিত হচ্ছে। আমরা তাদের কর্মী-সমর্থক-নেতাদের আহ্বান জানাবো, আপনাদের কাছে মাফ চাই। জাতির দিকে তাকিয়েও হলেও আপনারা এই ভণ্ডামি বাদ দিন। অন্তত জনগণের দিকে তাকিয়েও দ্রুত এটার লিগ্যাল পারস্পেক্টিভ এক্সিকিউশন লেভেলে এনে নির্বাচনের মধ্যে এসে জনগণকে মুক্তি দিন।
নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, আপাতত রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে তিনটা ব্লক হতে যাচ্ছে। একটা ইসলামিক ব্লক এরই মধ্যে হয়ে গেছে। আরেকটা বিএনপির নেতৃত্বে হচ্ছে। আরেকটা আমাদের নেতৃত্বে হচ্ছে। আমরা বিএনপি-জামায়াতের ব্লকে যাচ্ছি না। আমরা গণঅভ্যুত্থানের সময় ইশতেহার দিয়েছিলাম। বলেছিলাম, যেহেতু ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা বিলুপ্ত হয়নি, আমাদের সামনে দীর্ঘ লড়াই। গত ১৫ বছরে যে তরুণরা আন্দোলন করেছিলেন, অনেকেই দল সৃষ্টি করেছিলেন। তারা এখন এনসিপির ব্যানারে যোগ দেওয়ার জন্য সম্মত হয়েছেন। আমরা তাদের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি। আমাদের সিদ্ধান্ত হয়েছে একসঙ্গে কাজ করবো। তবে কী প্রক্রিয়ায় এটা হবে, সে বিষয়ে এখনো আলোচনা চলছে।
তিনি বলেন, ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হবে কি না, এখনো সংশয় আছে। সরকার সবাইকে অনেক ইনসিস্ট করছে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন করার জন্য। কিন্তু আমাদের যে জুলাই সনদটা আছে, এর লিগ্যাল যে পারস্পেক্টিভ, সেই জায়গা থেকে এখনো কোনো সমাধান হয়নি।
তিনি আরও বলেন, অনেকেই বিভিন্নভাবে বলার চেষ্টা করে যে জামায়াত নির্বাচন চায় না, এনসিপি নির্বাচন চায় না। এগুলো হলো প্রোপাগান্ডা। যদি বাংলাদেশে সবচেয়ে দ্রুত সুন্দর একটা নির্বাচন কেউ চেয়ে থাকে, সেটা সবার আগে এনসিপি। কারণ আমরা ভোট দিতে পারিনি। জুলাই সনদ যদি না হয় এবং বাংলাদেশের যে লেজিসলেটিভ অ্যাসেম্বলি আছে সেখানে যদি কোনো মানদণ্ডগত পরিবর্তন না আসে, তাহলে তো সেই একই শেখ হাসিনার জায়গায় অন্য একজন বসছে। এজন্য আমরা এই জায়গাটা কনফার্ম করতে বলছি। আর এটা দলগুলো বসে সমাধান করলে তো ১০–১৫ দিনের কাজ।
গণঅধিকার পরিষদের সঙ্গে একত্র হলে দলের নাম ও প্রতীক কী হবে-এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, দলের নাম এনসিপিই থাকবে এবং এনসিপির প্রতীকই থাকবে। আমাদের অধীনে আরও অনেকগুলো দল আসছে। অনেকগুলো দল, অনেকগুলো ব্যানার ইনশাআল্লাহ এনসিপির ব্যানারে চলে আসবে।
পিআর পদ্ধতি নিয়ে তিনি বলেন, আমরা খুবই স্পষ্ট করে বলতে চাই— আমরা উচ্চকক্ষে পিআর চাই, নিম্নকক্ষে চাই না।
এমওএস/ইএ/এমএস