১৭ বছর পর মুক্ত বাবর, উচ্ছ্বসিত এলাকাবাসী

2 hours ago 5

‘যারা সাজানো মামলায় আমাদের বাবরকে ফাঁসির রায় দিয়েছিল। তারা আজ দেশছাড়া। তাদের জন্য ঝুলছে ফাঁসির দঁড়ি। এটাই হচ্ছে ইতিহাসের নির্মম সত্য। ইতোমধ্যে ফল পেতে শুরু করেছেন তারা। আমাদের নেতা, আমাদের সন্তান এখন মুক্ত। আদালত তাকে সাজানো মামলা থেকে রেহাই দিয়েছে। শেখ হাসিনা ফাঁসি দিয়ে তাকে হত্যা করতে চেয়েছিল।’ -এভাবেই কথাগুলো বলছিলেন লুৎফুজ্জামান বাবরের চাচাতো ভাই শিক্ষক মো. মাহমুদুর রহমান মির্জা।

সাবেক এ স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর স্ত্রী তাহমিনা জামান শ্রাবণী বলেন, আদালতের রায়ে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। আমি সৃষ্টিকর্তার কাছে শুকরিয়া প্রকাশ করছি। যারা অন্যায়ভাবে তাকে সাজা দিয়েছিল। আজ তারা তাদের পাপের প্রায়শ্চিত্ত করছে।

বাবরের মুক্তির খবরে তার নিজ জেলা নেত্রকোনা ও নির্বাচনী মদন, মোহনগঞ্জ ও খালিয়াজুরিতে নেতাকর্মীদের মধ্যে বয়ে যাচ্ছে আনন্দের ধারা। ভাটিবাংলার জনপ্রিয় নেতাকে বরণ করতে নেত্রকোনার ও মদনের শহর থেকে গ্রাম সর্বত্র তৈরি করা হয়েছে নানা রঙের তোরণ। রাস্তাঘাটে মানুষের মাঝে দেখা গেছে উল্লাস। কৃষক, শ্রমিক, রিকশাচালক, শ্রমজীবী মানুষের মুখে মুখে ভেসে বেড়াচ্ছে বাবরের মুক্তির খবর। চায়ের স্টলে, অফিস-আদালতে আড্ডায় আলোচনায় বাবর মুক্তি পেয়েছে। 

বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) দুপুর ১টা ৪৮ মিনিটে কেরানীগঞ্জের কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পান বাবর। কারাগারের প্রধান ফটকে ভিড় করে এলাকার মানুষ তাকে অভ্যর্থনা জানান।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, নেত্রকোনা থেকে আড়াই শতাধিক বাস ও তিন শতাধিক মাইক্রোবাসে করে ঢাকার কেরানীগঞ্জের কেন্দ্রীয় কারাগার এলাকার প্রায় ত্রিশ হাজার মানুষ জড়ো হয়েছিলেন। এছাড়াও সাধারণ পরিবহনে ঢাকায় পৌঁছান হাজার হাজার ভক্ত। প্রিয় নেতার মুক্তিতে উচ্ছ্বসিত এলাকার সব শ্রেণিপেশার মানুষ। 

জেলার মদন উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. রফিকুল ইসলাম আকন্দ কালবেলাকে বলেন, আমরা আমাদের প্রিয় নেতাকে বরণের জন্য উন্মুখ হয়ে আছি। অন্তত ৫০ হাজার মানুষ ঢাকায় এসেছেন তাকে বরণ করতে। হাওরাঞ্চল মানুষ এসে ঢাকাকে জনসমুদ্রে পরিণত করেছে। তিনি কারামুক্ত হয়ে আবারো এলাকার সাধারণ মানুষের ভাগ্য উন্নয়নে হাল ধরবেন- এমনটাই আমাদের প্রত্যাশা।

নেত্রকোনা জেলা শহরের বাসিন্দা মুক্তিযোদ্ধা হায়দার জাহান চৌধুরী ও জেলার মদন উপজেলার নায়েকপুর গ্রামের আব্দুল্লাহ খান বলেন, জীবনের ১৭টা বছর তাকে কে ফিরিয়ে দেবে? তাকে যারা মিথ্যা মামলা দিয়ে হত্যা করতে চেয়েছে। তাদের বিচার কে করবে? আমাদের মতো গ্রামাঞ্চলের সাধারণ মানুষকে তিনি অত্যন্ত মূল্যায়ন করতেন। দল, মত নির্বিশেষে তিনি সবারই কথা শুনতেন। তার কাছে গিয়ে কেউ কোনো দিন খালি হাতে ফিরে আসেনি। তার সময়ে এলাকায় ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। তাই তিনি সাধারণ মানুষের প্রিয় নেতা। 

নেত্রকোনা-২ আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশী, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহধর্মবিষয়ক সম্পাদক এটিএম আব্দুল বারী ড্যানী বলেন, পতিত স্বৈরাচার সরকারের প্রধান শেখ হাসিনা ভাটিবাংলার নন্দিত নেতা লুৎফুজ্জামান বাবরকে নানাভাবে অত্যাচার-নির্যাতন করেছে। দীর্ঘ সতেরো বছর কারাগারে রেখেছে। ফাঁসির দণ্ড দিয়ে হত্যার চেষ্টা করেছে। কিন্তু তা পারেনি। বরং স্বৈরাচারের পতন হয়েছে। আজ তিনি মুক্ত হয়েছেন। আশা করছি, দেশ ও মানুষের জন্য আবারও কাজ করবেন।

Read Entire Article