২০৩০ সালের মধ্যে বে-টার্মিনাল অপারেশনে যাবে: বন্দর চেয়ারম্যান

6 hours ago 4

২০৩০ সালের মধ্যে বে-টার্মিনাল অপারেশনে যাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এসএম মনিরুজ্জামান।

সোমবার (৩ নভেম্বর) দুপুরে বন্দরের শহীদ মো. ফজলুর রহমান অডিটোরিয়ামে বে-টার্মিনাল সংক্রান্ত এক মতবিনিময় সভা শেষে তিনি একথা বলেন।

‘জেনারেল মার্কেট এনগেজমেন্ট কনফারেন্স ফর দ্য বে-টার্মিনাল মেরিন ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট’ শীর্ষক সভায় বন্দর চেয়ারম্যানে বলেন, আমাদের টার্গেট হলো বে-টার্মিনালের ‘টার্মিনাল-ওয়ান’ ২০৩০ সালের মধ্যে অপারেশনে নিয়ে যাওয়া। আমরা যদি আগামী বছরের মাঝামাঝিতে কাজ শুরু করতে পারি, আমার মনে হয় এটা সম্ভব। আমরা যে প্রকল্পগুলো হাতে নিয়েছি সবই পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপের গাইডলাইনের শতভাগ স্টেপ মেনে নেওয়া হয়েছে। অভূতপূর্ব একটা অগ্রগতি হচ্ছে। আমি আশা করি, আগামী কয়েক মাসের মধ্যে ইনশাআল্লাহ একটা সাকসেস স্টোরি আপনাদের দেখাতে পারবো।

সভায় বিশ্বব্যাংকের প্রতিনিধি চিক ডায়ালোসহ দেশি-বিদেশি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। এতে যুক্তরাষ্ট্র, নেদারল্যান্ডস, বেলজিয়াম, চীন, ভারত ও তুরস্কসহ বিভিন্ন দেশের সুপরিচিত প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সরাসরি ও অনলাইনে অংশগ্রহণ করে তাদের মতামত দিয়েছেন। ৫৭টি প্রতিষ্ঠানের ১২৭ জন প্রতিনিধি সরাসরি ও অনলাইনে অংশ নেন।

আরও পড়ুন
চট্টগ্রাম বন্দর বিদেশিদের ইজারা দেওয়ার অভিযোগে ঢাকায় বিক্ষোভ

বন্দরের সদস্য (প্রকৌশল) কমোডর কাউসার রশিদ বে-টার্মিনাল প্রকল্পের লক্ষ্য, উদ্দেশ্য ও সম্ভাবনা উপস্থাপন করেন। পাশাপাশি বে-টার্মিনাল মেরিন ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্টের পরিচালক কমোডর মো. মাহফুজুর রহমান মেরিন ইনফ্রাস্ট্রাকচারের বিভিন্ন দিক যেমন—ব্রেকওয়াটার নির্মাণ, চ্যানেল ড্রেজিং এবং ন্যাভিগেশন সরঞ্জাম স্থাপনের বিষয় তুলে ধরেন এবং বাস্তবায়নের সম্ভাবনা ব্যাখ্যা করেন।

বন্দর চেয়ারম্যান বলেন, আগামী ১০০ বছরের চাহিদাকে বিবেচনায় নিয়ে বে-টার্মিনাল নির্মিত হবে। এটি হবে দেশের অর্থনীতির গেম চেঞ্জার, যা চট্টগ্রাম বন্দরকে বিশ্বমানের বন্দরে কাতারে নিয়ে যাবে। পণ্য রপ্তানিতে বৈচিত্র্য আসবে। বিদেশি বিনিয়োগের দুয়ার খুলবে।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মাল্টিপারপাস টার্মিনালে কনটেইনার ও জেনারেল কার্গো দুই ধরনের জাহাজ হ্যান্ডলিং করা যাবে। গিয়ার ভ্যাসেল আস্তে আস্তে উঠে যাচ্ছে। ভবিষ্যৎ বাস্তবমুখী চিন্তা করে আমাদের টার্মিনালে গিয়ারলেস ভ্যাসেল অপারেশনের সুযোগ রাখতে হবে। এ টার্মিনালে ফুল ইফিশিয়েন্সি মেইনটেইনের জন্য অবশ্যই আমাদের বাস্তবমুখী সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

এসএম মনিরুজ্জামান বলেন, আমাদের প্রতিটি প্রকল্পে মার্কেট বিজনেস, ফিন্যান্সিয়াল রিটার্ন, সোশ্যাল, এনভায়রনমেন্টাল ইত্যাদি দিক নিয়ে ওয়ার্ল্ড ক্লাস পরামর্শক প্রতিষ্ঠান কাজ করছে। আশা করি, আমরা যে প্রকল্প করবো তা জাতির জন্য গর্ব করার মতো হবে। শতবর্ষের টার্গেট নিয়ে আমরা কাজ করবো, যেন বড় দুর্যোগেও এফেকটেড (ক্ষতিগ্রস্ত) না হয়। বিশ্বমানের প্রকল্প হবে এটি। বে-টার্মিনাল দিয়েই আমরা ইউরোপের দিকে সরাসরি জাহাজ পাঠাতে পারবো।

তিনি বলেন, আমরা চাই বাংলাদেশ রিজিওনাল ম্যানুফ্যাকচারিং হাব হোক। এর জন্য অবশ্যই আমাদের নিশ্চিন্ত মার্কেট থাকতে হবে। এর জন্য ২৪ ঘণ্টা চ্যানেল অপারেশন, বড় জাহাজ অপারেট করতে হবে এবং ইফিশিয়েন্ট অপারেশন থাকতে হবে গ্লোবাল কমপ্লায়েন্স অনুযায়ী। সেই আলোকেই বে-টার্মিনাল হচ্ছে। বে-টার্মিনাল হলে দেখবেন বাংলাদেশে ম্যানুফ্যাকচারিং ইনভেস্টমেন্টের জোয়ার বইছে। এখানে বিনিয়োগ করার জন্য পৃথিবীর বড় বড় কোম্পানি যোগাযোগ করছে। প্রতিদিন এক মিলিয়ন ডলার লস হচ্ছে বে-টার্মিনাল না থাকার কারণে। তিন বছরে এক মিলিয়ন ডলার উঠে আসবে। কত বড় লস। আমাদের সক্ষমতার দুয়ার খুলবে বে-টার্মিনাল।

এমডিআইএইচ/ইএ/জেআইএম

Read Entire Article