২৪ ঘণ্টায় কুয়াকাটায় ভেসে এলো দুই মৃত ডলফিন

3 weeks ago 22

পটুয়াখালীর কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে ২৪ ঘণ্টায় দুটি মৃত ডলফিন ভেসে এসেছে। বুধবার (২০ জুলাই) ও মঙ্গলবার বিকেলে ডলফিন দুটি ভেসে আসে। দুটো ডলফিনের শরীরের চামড়া অনেকটা উঠানো।

কুয়াকাটা জিরো পয়েন্ট এলাকার এক কিলোমিটারের মধ্যে উঠেছে দুটো ডলফিন। পরে কুয়াকাটা পৌরসভা ও বনবিভাগের সমন্বয় মাটি চাপা দেওয়ার কথা জানায় উপকূল পরিবেশ রক্ষা আন্দোলনের আহ্বায়ক কেএম বাচ্চু।

বাচ্চু জানান, আগের তুলনায় ডলফিনের মৃত্যুর সংখ্যা কমলেও এখনও মাঝে মধ্যে এমন খবর পাওয়া যাচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ছোট-বড় দুটি ডলফিন এসেছে। আমরা চাই সরকার ও সংশ্লিষ্ট গবেষণা সংস্থা এ মৃত্যুর কারণ নিয়ে আরও গভীরভাবে অনুসন্ধান করুক। ডলফিন রক্ষা মানে আমাদের উপকূলের পরিবেশ রক্ষা করা। এটি এক প্রকার প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ।

ডলফিন শুধু সমুদ্রের প্রাণী নয়, এটি সমুদ্র পরিবেশের স্বাস্থ্য ও ভারসাম্যের এক গুরুত্বপূর্ণ সূচক। ডলফিনের উপস্থিতি সমুদ্রের ইকোসিস্টেমকে সুস্থ রাখে, মাছ ও অন্যান্য সামুদ্রিক জীব বৈচিত্র্যকে সুরক্ষা দেয় এবং স্থানীয় পর্যটন ও জীবিকা নির্বাহের ক্ষেত্রেও অবদান রাখে।

গবেষণা প্রতিষ্ঠান ওয়ার্ল্ড ফিশের ইকোফিশ-২ বাংলাদেশ প্রকল্পের সহযোগী গবেষক বখতিয়ার রহমান বলেন, এটি মূলত ইরাবতী প্রজাতির ডলফিন। রক্তাক্ত দাগ থেকে দেখা যায়, নৌযান, মাছ ধরার যন্ত্র ও জেলেদের কার্যক্রমই মৃত্যুর মূল কারণ। নদী ও মোহনার দূষিত পানি যেমন শিল্প বর্জ্য, প্লাস্টিক ও তেল ও হুমকি সৃষ্টি করছে। গবেষকরা স্থানীয় সচেতনতা বৃদ্ধির এবং ডলফিন অভয়ারণ্য এলাকায় জাল ব্যবহারে সীমাবদ্ধতার আহ্বান জানিয়েছেন, যাতে কুয়াকাটার জলজ জীব বৈচিত্র্য সংরক্ষিত থাকে।

কুয়াকাটা ডলফিন রক্ষা কমিটির টিম লিডার রুমান ইমতিয়াজ তুষার জানান, খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পরিদর্শন শেষে আমরা বনবিভাগ ও ব্লু-গার্ড এবং কুয়াকাটা পৌরসভার সদস্যদের খবর দেওয়া হয়েছে। তাদের সহযোগিতায় মাটিচাপা দেওয়া হয়েছে। চলতি বছরে এখন পর্যন্ত সাতটি এবং ২৪ সালে ১০টি ও এর আগে ২৩ সালে ১৫টি মৃত ডলফিন ভেসে এসেছিল। উপকূলীয় এলাকাজুড়ে আমরা সার্বক্ষণিক কাজ করছি ডলফিন নিয়ে। আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জানাচ্ছি যাতে এ মৃত্যুর সঠিক কারণ বের করা হয়।

কুয়াকাটা পৌরসভার প্রশাসক ইয়াসীন সাদেক বলেন, আমাদের কাছে খবর আসার সঙ্গে সঙ্গে পরিচ্ছন্নকর্মী পাঠিয়ে মাটিচাপা দেওয়ার ব্যবস্থা করছি। আমরা সার্বক্ষণিক পরিবেশ এবং এ ধরনের কার্যক্রমের ব্যাপারে সতর্ক রয়েছে।

আসাদুজ্জামান মিরাজ/আরএইচ/এমএস

Read Entire Article