৩টি হলের নাম পাল্টাল এডওয়ার্ড কলেজ

3 months ago 6
পাবনা সরকারি এডওয়ার্ড কলেজের ৩টি আবাসিক হলের নাম পরিবর্তন করা হয়েছে। জুলাই বিপ্লব পরবর্তী প্রেক্ষাপটে শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষিতে ও অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের অনুমোদনক্রমে ‘সুচিত্রা সেন ছাত্রীনিবাস’ –এর নাম পরিবর্তন করে ‘জুলাই-৩৬ ছাত্রীনিবাস’ করা হয়েছে। একই সঙ্গে গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পরিবারের সদস্যদের নামে দুটি হলের নাম পরিবর্তন করা হয়েছে। শেখ রাসেল ছাত্রাবাসের নাম দেওয়া হয়েছে ‘বিজয়-২৪ ছাত্রাবাস’ এবং বেগম ফজিলাতুন্নেছা ছাত্রীনিবাসের নাম দেওয়া হয়েছে ‘আয়শা সিদ্দিকা (রা.) ছাত্রীনিবাস’। মঙ্গলবার (২০ মে) দুপুরে হলগুলোর নামফলক উন্মোচন করেন কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. আব্দুল আউয়াল মিয়া। নামফলক উন্মোচন অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সংশ্লিষ্ট হলগুলোর হল সুপাররা এবং সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করেন নামফলক তৈরি ও উদ্বোধন কমিটির আহ্বায়ক প্রফেসর মো. আবদুল্লাহ আল মামুন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপাধ্যক্ষ প্রফেসর মোহা. আব্দুল খালেক, শিক্ষক পরিষদের সম্পাদক প্রফেসর মো. লুৎফর রহমান, যুগ্ম সম্পাদক মো. রফিকুল ইসলাম, বিভিন্ন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান, হল সুপার, সহকারী সুপার এবং ছাত্র সংগঠনের প্রতিনিধিরা। এদিকে ‘সুচিত্রা সেন ছাত্রীনিবাস’-এর নাম পরিবর্তন করে ‘জুলাই-৩৬ ছাত্রীনিবাস’ করায় জেলাজুড়ে চরম আলোচনা ও সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। ক্ষোভ লক্ষ্য করা গেছে সাংস্কৃতিক কর্মীদের মধ্যে।  সুচিত্রা সেন স্মৃতি সংরক্ষণ পরিষদের সভাপতি রাম দুলাল ভৌমিক বলেন, সুচিত্রা সেন কোনো রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব ছিল না তার পাবনাতে জন্ম এবং পাবনাতে তিনি কৈশোরে লেখাপড়া করেছেন এবং তার নামে পাবনাবাসী গর্ব করতে পারে, কারণ তিনি বাংলা চলচ্চিত্রে কিংবদন্তি নায়িকা। তার নামে এডওয়ার্ড কলেজে একটা ছাত্রী নিবাস ছিল, সেটা পরিবর্তন করার কোনো দরকার ছিল না। প্রিন্সিপাল সাহেব বলছেন- জুলাই অভ্যুত্থানের চেতনায় এটা করা হয়েছে কিন্তু জুলাইয়ের সঙ্গে সুচিত্রা সেন তো কোনো বিরোধী বিষয় না। সুচিত্রা সেন রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন না বা গত সরকারের সঙ্গে কোনো সম্পর্কও ছিল না। এটা আমার কাছে মনে হচ্ছে উদ্দেশ্যমূলক, এটা গ্রহণযোগ্য বিষয় না। এই বিষয়ে আপনারা কোনো প্রতিবাদ করবেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, হলের নাম পরিবর্তন কলেজের নিজস্ব বিষয়। যখন নামকরণ করা হয়েছে তখন আমাদের দাবির প্রেক্ষিতে করা হয়েছে এমন কোনো বিষয় না, তখন কলেজ তাদের নিজস্ব সিদ্ধান্তে এটা করেছে। এখন যেটা করেছে আমরা এর প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং অনেকেই প্রতিবাদ জানাচ্ছে কিন্তু এটা নিয়ে তো আমরা কোনো আন্দোলন করতে পারি না। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে সরকারি এডওয়ার্ড কলেজের অধ্যক্ষ আবদুল আউয়াল মিয়া কালবেলাকে বলেন, এই হলটার নামকরণ করা হয় সুচিত্রা সেন হল তখন এডওয়ার্ড কলেজের অ্যাকাডেমিক কাউন্সিল এই নামকরণের সঙ্গে একাত্ম ছিল না। যখন অ্যাকাডেমিক  কাউন্সিলের মিটিংয়ে প্রিন্সিপালের কাছে জানতে চাওয়া হয়- আপনি কেন এই নামকরণ করতে চাচ্ছেন, দেশের কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নায়িকার নামে হল নাই আর তিনি বাংলাদেশের কোনো নাগরিকও না। তখন তিনি বলেছিলেন- একটা প্রতিবেশী দেশের কূটনৈতিক মিশন থেকে প্রেসার আছে। তখন এই কথাটা সবার কাছে পরিষ্কার তৎকালীন প্রেসার গ্রুপ তাদের অ্যাজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য এডওয়ার্ড কলেজে তার নামটা প্রবেশ করিয়েছিল।  তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের জুলাই বিপ্লবের পর নতুন পরিবেশে এসেছে, বাক স্বাধীনতা ফেরত এসেছে। এখন অ্যাকাডেমিক কাউন্সিল নাম পরিবর্তনের জন্য প্রস্তাব এবং সমর্থন ব্যক্ত করেছে। এটা একটা সম্মিলিত সিদ্ধান্ত।
Read Entire Article