৪০ দিন জামাতে নামাজ পড়ে বাইসাইকেল পেল ৭ কিশোর
‘নামাজের আলোয় আলোকিত হোক প্রতিটি শিশু’—এই লক্ষ্যকে সামনে রেখে মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার কাদিপুর ইউনিয়নের আমতৈল গ্রামে টানা ৪০ দিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ জামাতে আদায় করায় ৭ কিশোরকে বাইসাইকেলসহ ৫৫ জনকে পুরস্কৃত করা হয়েছে।
শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) বিকেলে আমতৈল মাজার মসজিদ প্রাঙ্গণে এই আনন্দঘন অনুষ্ঠান হয়। এমন ব্যতিক্রমী কর্মসূচির আয়োজন করে উপজেলার কাদিপুর ইউনিয়নের আমতৈল গ্রামের হযরত শাহ্ সর্দার মুহাম্মদ (রহ.) মাহফিল বাস্তবায়ন পরিচালনা কমিটি।
জানা গেছে, নিয়মিত নামাজ আদায়কারী ৫৫ কিশোরের মধ্যে ৭ জনকে বাইসাইকেল এবং বাকিদের বিভিন্ন উপহারসামগ্রী দেওয়া হয়। এ সময় শিশু-কিশোরদের মোবাইলে আসক্তি কমিয়ে নামাজে আগ্রহী ও মসজিদমুখী করতে এই কর্মসূচি নেওয়া হয় বলে জানান আয়োজকরা।
আয়োজক কমিটির উপদেষ্টা সাংবাদিক নাজমুল ইসলাম জানান, গত ৪০ দিন আগে জামাতে নামাজ আদায়ের কর্মসূচি নেওয়া হয়। কর্মসূচিতে ৬০ জন কিশোর অংশ নেয়। এর মধ্যে নিয়মিত জামাতে নামাজ আদায়ে ব্যর্থ হয়ে ৫ জন বাদ পড়েন। বাকি প্রত্যেকেই টানা ৪০ দিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ মসজিদে এসে আদায় করতে সক্ষম হয়েছে। তাদের মধ্যে লটারির মাধ্যমে প্রথম সাতজনকে বাইসাইকেল পুরস্কার দেওয়া হয়।
বাইসাইকেল পুরস্কার পাওয়া কিশোর শাফি বলেন, টানা ৪০ দিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ জামাতে আদায় করায় এখন অভ্যস্ত হয়ে গেছি। শুধু পুরস্কার পাওয়ার আশায় নয়, মুসলমান হিসেবে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়তে হবে। জীবনের বাকি সময় যেন জামাতে নামাজ পড়তে পারি, সে জন্য সবার কাছে দোয়া চাই।
আমতৈল হযরত শাহ সর্দার (রহ.) মাহফিল বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি মো. সাহেদুর রহমান কিরনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান আলমের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কুলাউড়া উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান কাজী মাওলানা ফজলুল হক খান সাহেদ এবং উদ্বোধক হিসেবে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন ঘোষণা করেন বাবনিয়া হাসিমপুর নিজামিয়া আলিম মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মুফতি আহসান উদ্দিন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কুলাউড়া দারুসসুন্নাহ মডেল দাখিল মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল খন্দকার অজিউর রহমান আসাদ, বাংলাদেশ সাংবাদিক সমিতি কুলাউড়া উপজেলা শাখার সাবেক সভাপতি এম. মুক্তাদির হোসেন, বর্তমান সভাপতি মো. নাজমুল ইসলাম, আমতৈল কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের ইমাম ও খতিব মাওলানা ফরিদ উদ্দিন, মসজিদের সাধারণ সম্পাদক মো. রওফুর রাজা, সাংবাদিক মহি উদ্দিন রিপন, সৈয়দ মিছবাহ, আশিকুল ইসলাম বাবু প্রমুখ।
বক্তারা তাদের বক্তব্যে শিশুদের ধর্মীয় ও নৈতিক শিক্ষায় শিক্ষিত করতে এ ধরনের আয়োজনের ভূয়সী প্রশংসা করেন। তারা বলেন, শিশুকাল থেকেই নামাজের প্রতি এই ভালোবাসা তাদের আগামীর পথচলাকে সুন্দর ও আলোকিত করবে।
আলোচনা সভা শেষে প্রতিযোগিতায় বিজয়ী ও অংশগ্রহণকারী সকল কৃতি শিক্ষার্থীদের হাতে সম্মাননা পুরস্কার তুলে দেন আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ। এছাড়া মাত্র ১৮ মাসে পবিত্র কোরআন হিফজ সম্পন্ন করায় ৯ বছরের শিশু রেদওয়ান আহমেদ মারিয়ানকে বিশেষ পুরস্কারে সম্মানিত করা হয়। এই আয়োজনকে ঘিরে স্থানীয় শিশু-কিশোর ও অভিভাবকদের মাঝে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা লক্ষ করা যায়।

10 hours ago
8









English (US) ·