৪৭তম বিসিএস প্রিলির শেষ মুহূর্তে করণীয় কী?

2 weeks ago 8

বিসিএস পরীক্ষার কয়েকটি ধাপের মধ্যে ‘প্রিলিমিনারি’ পরীক্ষা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এখানে প্রতিযোগীর সংখ্যা বেশি। আগামী ১৯ সেপ্টেম্বর ৪৭তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। প্রায় সাড়ে তিন লাখেরও বেশি পরীক্ষার্থী প্রতিযোগিতায় বসবেন। বিপুল সংখ্যক পরীক্ষার্থীর মাঝে টিকে থাকতে বাকি কয়েকদিন ভালো প্রস্তুতি জরুরি। শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ দিয়েছেন ৩৮তম বিসিএসের শিক্ষা ক্যাডার (ইংরেজি) ইমা হালিমা। তার সঙ্গে কথা বলেছেন আনিসুল ইসলাম নাঈম—

> এ সময় নতুন কোনো টপিক ধরার প্রয়োজন নেই। আগের সমস্ত পড়া বারবার রিভিশন দিন।

> এমসিকিউ উত্তর করতে গিয়ে কনফিউশন কাজ করলে বুঝবেন রিভিশনে ঘাটতি আছে। পাশাপাশি ঘড়ি ধরে ওএমআর শিটে পরীক্ষা দিন।

> প্রতিদিনের পড়া বিভিন্ন ভাবে ভাগ করে পড়ুন। প্রয়োজনে সময় ও বিষয় খাতায় লিখে রাখুন।

> প্রিলিমিনারি পরীক্ষার আগপর্যন্ত সর্বোচ্চ সময় ব্যয় করে পড়ুন। সময় নষ্ট করে এ রকম বিষয়গুলো এড়িয়ে চলুন।

> টপিক শেষ করে বিষয়ভিত্তিক মডেল টেস্ট দিন। পাশাপাশি ২০০ নম্বরের বিসিএসের সিলেবাসের অনুরূপ মডেল টেস্ট দিন। মডেল টেস্টে খারাপ করলে হতাশ হবেন না। বরং যেটা ভুল করছেন, তা বারবার রিভিশন দিন।

> অগোছালো ভাবে পড়বেন না। কী কী টপিক থেকে প্রশ্ন মিস হয় না, তার লিস্ট করুন। সে অনুযায়ী বারবার পড়ুন।

> কারো ভালো রেজাল্ট দেখে হতাশ হবেন না। অনেকেই দেখবেন কোচিংয়ে ভালো করেন কিন্তু প্রিলি পাস করেন না। কারণ কোচিংয়ে কোন জায়গা থেকে প্রশ্ন আসে, তা জানেন। কিন্তু আসল পরীক্ষায় আটকে যান।

> ডাটা এবং সাম্প্রতিক টেকনিক ফলো করে পড়বেন। বাজেট, সমীক্ষা, সম্মেলনের স্থান, সংস্থার সদস্য, ভূরাজনৈতিক সাম্প্রতিক প্রেক্ষাপট বুঝে পড়বেন। যেমন- ন্যাটো, ইউক্রেন, ফিলিস্তিন, ইরান, ইসরায়েল, আমেরিকা, রাশিয়া, চীন, সাউথ এশিয়া, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, সার্ক, ডোনাল্ড ট্রাম্প—এসব বিষয় দেখবেন।

> এ ছাড়া জুলাই বিপ্লব, ড. মুহম্মদ ইউনূস, মাইক্রোফাইন্যান্স, সোশ্যাল বিজনেস, সংস্কার, লাহোর প্রস্তাব থেকে ৫৪’র নির্বাচন, মুক্তিযুদ্ধ থেকে ৬৯ ও ৭০’র নির্বাচন, মুজিবনগর সরকার, ৭ মার্চ, বীরশ্রেষ্ঠ, সেক্টর ও সেক্টর কমান্ডার—এগুলো অবশ্যই দেখবেন।

> মানসিক দক্ষতা অংশের জন্য প্রতিদিন বিগত সালের একটি প্রিলি ও একটি রিটেন প্রশ্ন শেষ করুন। এভাবে ৪৬তম বিসিএস পর্যন্ত মানসিক দক্ষতায় আসা প্রিলি ও রিটেন সলভ করবেন। স্থানাঙ্ক, চিত্রভিত্তিক অভীক্ষা, মিরর, সাধারণ ধারা, ফিবোনাচ্চি, সংখ্যা পদ্ধতি, দিন ও ঘড়ি অবশ্যই দেখবেন।

> মডেল টেস্টে একটি ভুল করলে ওই টপিক আবার রিভিশন দিন। ধরুন, সমাসের তৎপুরুষ সংক্রান্ত একটি প্রশ্ন ভুল করেছেন; সেখান থেকে আবার পুরো তৎপুরুষ একবার রিভিশন দিন।

> ম্যাথে দুর্বল হলে নতুন করে ম্যাথ করার দরকার নেই। লগ সূচক, বিন্যাস সমাবেশ, সম্ভাব্যতা; হায়ার ম্যাথ থেকে করুন। আর ধারা, সমতা, অসমতা, লাভ-ক্ষতি, সরল সুদকষা দেখে যান।

> ইংরেজি সাহিত্য শেক্সপিয়র, মার্লো, ডন, পোপ, কিটস, কোলরিজ, শেলি, ওয়ার্ডসওয়ার্থ, ডিকেন্স, জি.বি. শ, এলিয়ট, ইয়েটস, লরেন্স, হেমিংওয়ে—অংশগুলো ভালো করে দেখবেন।

> মাধ্যমিক ভূগোল বইয়ের সিলেকটিভ অধ্যায়গুলো রিভিশন দিন।

> নৈতিকতা ও সুশাসনে বেশি সময় দেওয়ার প্রয়োজন নেই। বিগত বছরের প্রশ্ন অ্যানালাইসিস করে গুরুত্বপূর্ণ টপিকগুলোতে জোর দিন।

> সাধারণ জ্ঞান অংশে বিশেষ করে আন্তর্জাতিক বিষয়াবলিতে বিগত বছরের আসা প্রশ্ন, যেমন- মুদ্রা, রাজধানী বিষয়ে কম জোর দেবেন।

> বাংলা ও বিজ্ঞান অংশের জন্য বিগত বছরে আসা প্রশ্নগুলো ব্যাখ্যাসহ ভালো করে পড়বেন।

> আত্মবিশ্বাস বাড়ান। প্রতিদিন নিজেকে টার্গেট দিন। টার্গেট পূরণ করতে পারলে আরও আত্মবিশ্বাসী হবেন।

সর্বশেষ নিজের স্বাস্থ্যের দিকে খেয়াল রাখুন, ফোন সাইলেন্ট রাখুন, খুব বেশি প্রয়োজন না হলে পড়া থেকে উঠবেন না। কারণ এ মুহূর্তের প্রতিটি সময় গুরুত্বপূর্ণ। সবার জন্য শুভ কামনা।

এসইউ/জিকেএস

Read Entire Article