৫.৭ মাত্রার ভূমিকম্পে কতটা ঝুঁকিতে পড়তে পারে একটি শহর
ঢাকায় শক্তিশালী ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। রিখটার স্কেলে এর মাত্র ছিল ৫ দশমিক ৭। ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল নরসিংদীর মাধবদীতে। ঢাকাসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। ভূমিকম্পের মাত্রা ৫ দশমিক ৭ কাগজে-কলমে মাঝারি মনে হলেও বাস্তবে এর প্রভাব নির্ভর করে ভূমিকম্পের গভীরতা, কেন্দ্রস্থল, মাটির গঠন ও ভবনের নির্মাণমানের উপর। যে কোনো ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় এই মাত্রার কম্পন উল্লেখযোগ্য ক্ষতি ডেকে আনতে পারে। ৫.৭ মাত্রার ভূমিকম্প ভয়ংকর নয় এমন ভাবলে ভুল হবে। শহর পরিকল্পনা দুর্বল, ভবন পুরোনো এবং কেন্দ্রস্থল নিকটবর্তী হলে এই মাত্রার ভূমিকম্পই বড় ধরনের বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে। তাই আগাম প্রস্তুতি, নির্মাণমান শক্ত করা এবং জনগণের সচেতনতা সবই এখানে একসঙ্গে জরুরি। বিশ্বের কিছু দেশে যেখানে ৫.৭ মাত্রার ভূমিকম্পে কেমন ক্ষতি হয়েছে তা জেনে নেই ইন্দোনেশিয়া (২০২৫)সুমাত্রার বেনগুলু প্রাদেশিক এলাকায় ৫.৭ মাত্রার ভূমিকম্পে প্রায় ১০০-এর বেশি ঘর ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কমপক্ষে ৮টি বাড়ি ধসে গেছে যা সম্ভবত মেরামতযোগ্য নয়। ইরান/তুরস্ক সীমান্ত (২০২০)পশ্চিম ইরান এবং পূর্ব তুরস্কের সীমান্তের কাছে এই
ঢাকায় শক্তিশালী ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। রিখটার স্কেলে এর মাত্র ছিল ৫ দশমিক ৭। ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল নরসিংদীর মাধবদীতে। ঢাকাসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে।
ভূমিকম্পের মাত্রা ৫ দশমিক ৭ কাগজে-কলমে মাঝারি মনে হলেও বাস্তবে এর প্রভাব নির্ভর করে ভূমিকম্পের গভীরতা, কেন্দ্রস্থল, মাটির গঠন ও ভবনের নির্মাণমানের উপর। যে কোনো ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় এই মাত্রার কম্পন উল্লেখযোগ্য ক্ষতি ডেকে আনতে পারে।
৫.৭ মাত্রার ভূমিকম্প ভয়ংকর নয় এমন ভাবলে ভুল হবে। শহর পরিকল্পনা দুর্বল, ভবন পুরোনো এবং কেন্দ্রস্থল নিকটবর্তী হলে এই মাত্রার ভূমিকম্পই বড় ধরনের বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে। তাই আগাম প্রস্তুতি, নির্মাণমান শক্ত করা এবং জনগণের সচেতনতা সবই এখানে একসঙ্গে জরুরি।
বিশ্বের কিছু দেশে যেখানে ৫.৭ মাত্রার ভূমিকম্পে কেমন ক্ষতি হয়েছে তা জেনে নেই
ইন্দোনেশিয়া (২০২৫)
সুমাত্রার বেনগুলু প্রাদেশিক এলাকায় ৫.৭ মাত্রার ভূমিকম্পে প্রায় ১০০-এর বেশি ঘর ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কমপক্ষে ৮টি বাড়ি ধসে গেছে যা সম্ভবত মেরামতযোগ্য নয়।
ইরান/তুরস্ক সীমান্ত (২০২০)
পশ্চিম ইরান এবং পূর্ব তুরস্কের সীমান্তের কাছে এই মাত্রার একটি ভূমিকম্পে নয়জন নিহত হন, যাদের সবাই তুরস্কের বাসিন্দা। এই ভূমিকম্পে ১,০৬৬টি ভবন ধসে পড়ে এবং বেশ কয়েকটি স্কুল ক্ষতিগ্রস্ত হয়, যার ফলে বেশ কয়েকটি গ্রাম ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
তানজানিয়া (২০১৬)
লেক ভিক্টোরিয়া লোকেশনে ৫.৭ মাত্রার ভূমিকম্পে অন্তত ১৪ জন নিহত এবং প্রায় ২০০ জন আহত হয়েছিল। প্রায় ২৭০টি ঘর ধ্বংস বা “ডেমোলিশড” হিসেবে রিপোর্ট করা হয়।
উগান্ডা ( ২০১৬)
তানজানিয়ায় লেক ভিক্টোরিয়ার কাছে ৫.৭ মাত্রার ভূমিকম্পে উগান্ডার রাকাই জেলায় কমপক্ষে চারজন নিহত এবং ২০ জন আহত হয়েছেন। ভবনগুলিতে গুরুতর কাঠামোগত ক্ষতির খবর পাওয়া গেছে, অনেক ভবন হয় ধসে পড়েছে অথবা ফাটল ধরেছে।
চীনের হেজে (১৯৮৩)
৫.৭ মাত্রার ভূমিকম্পে প্রায় ৩,৩০০ এর বেশি ঘর ধ্বংস হয়েছিল। প্রায় ৩৪ জন মারা গিয়েছিল এবং প্রায় ২,২০০ জন আহত হয়।
চীনের ঝাংবেই-শাংই (১৯৯৮)
মাত্রা ৫.৭ হলেও এতে প্রায় ৭০,০০০ ঘর ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়েছে। প্রায় ৭০ জন নিহত এবং প্রায় ১১,৫০০ জন আহত হয়; প্রায় ৪৪ হাজার পরিবার গৃহহীন হয়।
রোমানিয়ার ভ্রাঞ্চা (২০১৪)
৫.৭ মাত্রার ভূমিকম্পে সড়ক এবং ভবনে ক্ষতি হয়েছে। আহতের রিপোর্টও ছিল (কিছু এলাকায় মানুষ আহত হয়েছেন)।
সান ফ্রান্সিসকো, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র (১৯৫৭)
৫.৭ মাত্রার ভূমিকম্পে আনুমানিক ১ মিলিয়ন ডলার ক্ষতি হয়েছিল। এতে একজন নিহত এবং প্রায় ৪০ জন আহত হয়েছিল।
আসুন জেনে নেওয়া যাক ৫.৭ মাত্রার ভূমিকম্পে কতটা ঝুঁকিতে পড়তে পারে একটি শহর-
১. ভবন ও স্থাপনা
মানসম্মত রেইনফোর্সড ভবনে সাধারণত দেয়ালে ফাটল, প্লাস্টার খসে পড়া এটাই বেশি দেখা যায়। পুরোনো ও দুর্বল কাঠামোতে দেয়াল ধসে পড়া, ভবন হেলে পড়া, ছাদ নেমে আসা কিংবা আংশিক ধসের ঘটনা ঘটতে পারে। বালুকাময় বা দুর্বল মাটির এলাকায় মাটিধস বা লিকুইফ্যাকশন হয়ে ভবনে বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে।
২. সড়ক ও অবকাঠামো
রাস্তায় চৌচির ফাটল, সেতুর জয়েন্টে ক্ষতি, ড্রেনেজ লাইন ভেঙে পড়া এসব সাধারণ দৃশ্য। পানীয় জলের পাইপলাইন ফেটে পানি সরবরাহ ব্যাহত হতে পারে। বিদ্যুতের খুঁটি বা ট্রান্সফরমার ক্ষতিগ্রস্ত হলে বড় এলাকা অন্ধকারে ডুবে যেতে পারে।
৩. মানুষজনের ক্ষতি
কেন্দ্রস্থল ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় হলে আহতের সংখ্যা বাড়তে পারে। আতঙ্কে দৌড়াদৌড়ি, সিঁড়ি দিয়ে ঝাঁপঝাঁপি, লিফটে আটকা পড়া এসব থেকেও অনেকে আহত হন। দুর্বল ভবনে ধস ঘটলে মৃত্যুঝুঁকি তৈরি হয়।
ভূমিকম্প শুধু আর্থিক ক্ষয়ক্ষতি করে না, মানসিক প্রভাব পড়ে অনেক বেশি। ভূমিকম্প-পরবর্তী ট্রমায় অনেকেই ভোগেন। এতে দীর্ঘদিন আতঙ্ক, ঘুমের সমস্যা হতে পারে অনেকের। শিশু ও বৃদ্ধদের ওপর চাপ বেশি পড়ে, দরকার হয় মনোসামাজিক সহায়তা।
আরও পড়ুন
আন্তর্জাতিক পুরুষ দিবস কেন এত মলিন
বিশ্বের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ ৭ পেশা
সূত্র: দ্য ডেইলি গার্ডিয়ান, গলফ টুডে
কেএসকে/এমএস
What's Your Reaction?