৭ দিনেও ত্রাণ পাননি নূর নাহার

1 month ago 8

নূর নাহার। সাতদিন ধরে পানিবন্দি। শ্বশুর-শাশুড়ি, দেবর এবং ছেলে-মেয়ে মিলে ১৩ সদস্যের পরিবার। আশ্রয়কেন্দ্রে স্থান সংকুলান না হওয়ায় রয়ে গেছেন নিজ বাড়িতেই। খাটের ওপর খাট দিয়ে রাত পার করছে এই পরিবার। রয়েছে খাবর সংকট। ৭ দিনেও সরকারি-বেসরকারি কোনো সংস্থা থেকে পাননি ত্রাণ সহায়তা। নিরুপায় হয়ে ডিঙ্গি নৌকা নিয়ে দীর্ঘপথ পাড়ি দিয়ে গিয়েছেন মৈশাতুয়া বাজারে। সেখান থেকে কিছু শুকনো খাবর এবং রান্নার উপকরণ নিয়ে বাড়ি ফিরছেন। বুধবার কুমিল্লার মৈশাতুয়া ইউনিয়নের সামনে পানিতে তলিয়ে যাওয়া সড়কে দাঁড়িয়ে জাগো নিউজকে এ কষ্টের কথা বলেন নূর নাহার।

তিনি বলেন, ২১ আগস্ট থেকে বাড়ির উঠানে পানি উঠে যায়। পর্যায়ক্রমে বাড়তে থাকে পানি। এক দিন পর ঘরে প্রবেশ করে বন্যার পানি। এরপর খাটের ওপর খাট দিয়ে থাকা শুরু করি। শুনেছি বাড়ির পাশে যে আশ্রয়কেন্দ্র রয়েছে সেখানে থাকার মতো আর জায়গা নেই। তাই কষ্ট করে বাড়িতে রয়ে গেছি। তেলের একটি টিন কেটে কোনোরকম রান্না করছি। গত সাতদিন ধরে অবর্ণনীয় কষ্ট হচ্ছে। যা আপনাকে বলে শেষ করা যাবে না।

এসময় আক্ষেপের সঙ্গে নূর নাহার বলেন, এরই মধ্যে ঘরে যা খাবার ছিল সব শেষ হয়ে গেছে। ৭ দিনেও সরকারি-বেসরকারি কোনো সংস্থা থেকে ত্রাণ পাইনি। নিরুপায় হয়ে আজ মৈশাতুয়া বাজারে গিয়ে কিছু শুকনো খাবর এবং রান্নার উপকরণ নিয়েছি। বর্তমান সরকারের কাছে আমাদের তেমন কোনো চাওয়া পাওয়া নেই। ওনারা এখন আমাদের যা দেবেন, তাই সাধরে গ্রহণ করবো। এতে আমরা উপকৃত হবো।

সরেজমিনে জানা যায়, গত এক সপ্তাহ ধরে কুমিল্লার বিভিন্ন উপজেলা, পার্শ্ববর্তী নোয়াখালী জেলা এবং বেশ কয়েকটি এলাকায় ডাকাতিয়া নদীর বাঁধ ভেঙে প্রতিনিয়ত নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। বাড়ছে পানির উচ্চতা। এতে মনোহরগঞ্জে ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে বন্যা। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে প্রায় দেড় লক্ষাধিক মানুষ। এদের উদ্ধারে উপজেলা জুড়ে কাজ করছে সরকারি বাহিনীসহ বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্যরা। অধিকাংশ মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে গেলেও প্রত্যন্ত গ্রামের মানুষ এখনো পানিবন্দি। এদের কাছে এখনো পৌঁছায়নি কোনো ত্রাণ।

এ বিষয়ে জানতে মনোহরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উজালা রানী চাকমা জাগো নিউজকে বলেন, উপজেলায় ১০৫টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এছাড়া দুর্গম এলাকাগুলোতে যেসব মানুষ পানিবন্দি তাদের উদ্ধার এবং খাবার পৌঁছানোর জন্য সরকারি-বেসরকারিসহ বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন কাজ করছে।

জাহিদ পাটোয়ারী/জেডএইচ/এমএস

Read Entire Article