৭ হাজার টাকা করে নেয় ৫ খুনি!

2 months ago 33
সিরাজগঞ্জের সলঙ্গায় মঞ্জিল সেখ (৫০) নামে এক ব্যাটারিচালিত মিশুকচালক হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে গোয়েন্দা পুলিশ। ঘটনার সঙ্গে জড়িত তিনজনকে গ্রেপ্তারসহ মিশুকটি উদ্ধার করা হয়েছে। এরইমধ্যে গ্রেপ্তার আসামিরা হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিও দিয়েছেন। এতে আসামিরা বলেছেন মিশুক লুটের উদ্দেশ্যেই চালক মঞ্জিল সেখকে হত্যা করা হয়। লুট করা মিশুক বিক্রি করে তারা প্রত্যেকে ৭ হাজার টাকা করে ভাগে পেয়েছেন।  বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) এসব তথ্য নিশ্চিত করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সিরাজগঞ্জ গোয়েন্দা পুলিশের এসআই নাজমুল হক।  গ্রেপ্তার আসামিরা হলেন রায়গঞ্জ উপজেলার সোনাখাড়া গ্রামের মৃত আব সাইদের ছেলে মো. কাদের মোল্লা (৪০), একই গ্রামের মো. মৃত আব্দুল আলীম মোল্লার ছেলে রাশেদুল ইসলাম (২৪) ও উল্লাপাড়া উপজেলার চড়ুইমুড়ি গ্রামের দেলবার হোসেনের ছেলে মো. আহম্মেদ আলী (৩৩)। নিহত মঞ্জিল সেখ রায়গঞ্জ উপজেলার রঘুনাথপুর গ্রামের মৃত আছাব আলী শেখের ছেলে।  এসআই নাজমুল জানান, গত ৫ সেপ্টেম্বর বিকেলে ভিকটিম মঞ্জিল সেখ বাড়ি থেকে নিজের মিশুকটি নিয়ে বের হয়ে আর বাড়ি ফিরে আসেননি। পরে তার ফোন নম্বর বন্ধ পেয়ে পরিবারের লোকজন বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করতে থাকে। ৬ সেপ্টেম্বর বিকেলে মঞ্জিল সেখের স্ত্রী সলঙ্গা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। ৭ সেপ্টেম্বর সকালে সলঙ্গা থানার মোড়দিয়া গ্রামে একটি ইটভাটার সামনে হাত-পা ও মুখ বাঁধা অবস্থায় মঞ্জিল সেখের মরদেহ দেখতে পায় স্থানীয়রা। খবর পেয়ে পুলিশ মরদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালে পাঠায়। এ ঘটনায় সলঙ্গা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন নিহতের স্ত্রী।  তিনি বলেন, মামলাটি তদন্তে আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তি ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে আসামিদের শনাক্ত করে মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) গভীর রাতে কাদের মোল্লা ও রাশেদুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের দেওয়া তথ্যমতে পরদিন বুধবার (১১ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় অপর আসামি আহাম্মদ আলীকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তার দেওয়া তথ্যমতে উল্লাপাড়া উপজেলার রাজমান গ্রাম থেকে লুট হওয়া মিশুকটি উদ্ধার করা হয়ছে।  জিজ্ঞাসাবাদে ওই তিন আসামি হত্যার দায় স্বীকার করে বলেন, মিশুক ছিনতাইয়ের জন্য গত ৫ সেপ্টেম্বর বিকেলে ৫ জন বৈঠক করার পর রশি ও গামছা কেনে। ওইদিন রাতে ঘুরকা বেলতলা বাজার থেকে রঘুনাথপুর নামক গ্রামে যাওয়ার জন্য মঞ্জিল সেখের মিশুকটি ভাড়া করে। যাওয়ার পথে মোড়দিয়া এলাকায় ইটভাটার সামনে প্রসাব করার কথা বলে মিশুকটি থামায়। এরপর মিশুক চালক মঞ্জিলের গলায় গামছা পেঁচিয়ে ইটের স্তূপের আড়ালে নিয়ে যায়। সেখানে তাকে ৫ জন মিলে শ্বাসরোধ করে হত্যা ফেলে রেখে যায় এবং মিশুকটি নিয়ে নিয়ে পালিয়ে যায়। এরপর মিশুকের মহাজন আহম্মেদ আলীর কাছে ৩৮ হাজার টাকায় বিক্রি করে। এর মধ্যে ৩ হাজার টাকা খরচ হয়, বাকি টাকা প্রত্যেকেই ৭ হাজার করে ভাগ করে নিয়ে চলে যায়।  সিরাজগঞ্জ গোয়েন্দা পুলিশের ওসি মো. একরামুল হক জানান, মঞ্জিল হত্যায় তিন আসামিকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তার অভিযান চলছে। আশা করছি খুব শিগগিরই তাদেরকে আইনের আওতায় আনা সম্ভব হবে।
Read Entire Article