বিশ্বের সবচেয়ে বেশি সন্তান জন্মদানের রেকর্ড ভ্যালেন্টিনা ভাসিলিয়েভ নামের এক নারীর। রাশিয়ার নাগরিক কৃষক ফিওদর ভাসিলিয়েভের প্রথম স্ত্রী ছিলেন তিনি। তিনি মোট ৬৯ সন্তানের জন্ম দিয়েছিলেন। জীবনে ২৭বার গর্ভবতী হয়েছিলেন তিনি। জীবনের প্রায় ৪০ বছর তিনি গর্ভবতী ছিলেন। তিনিই বিশ্বের একমাত্র নারী যিনি এতগুলো সন্তান জন্ম দিয়েছেন।
এই খবর অনেকেরই জানা, তবে জানেন কি, শুধু ভ্যালেন্টিনা নন তার কৃষক স্বামীরও একটি রেকর্ড আছে। তিনি মোট ৮৭ সন্তানের জনক ছিলেন। প্রথম স্ত্রী ভ্যালেন্টিনা ভাসিলিয়েভ ৬৯ সন্তানের জন্ম দেন এবং তার দ্বিতীয় স্ত্রী ৬ বার যমজ এবং ২ বার ট্রিপলেটের জন্ম দেন। তিনি প্রসব করেছিলেন মোট ১৮ জন সন্তান।
দু’ পক্ষ মিলিয়ে মোট ৮৭ জন সন্তানের বাবা হয়েছিলেন রুশ কৃষক ফিওদর ভাসিলিয়েভ। সেই সময়কার স্থানীয় এক মঠে এই তথ্যে শিলমোহর দেওয়া হয়েছিল। সেই তথ্য অনুযায়ী ৮৭ জন সন্তানের মধ্যে ৮৪ জনই দীর্ঘায়ু হয়েছিলেন।
আধুনিক গবেষকরা মনে করেন সে সময় রেকর্ড ঠিকমতো সংরক্ষণ করা হত না সব সময়। তাই তথ্য নিয়ে নিঃসন্দেহ হওয়া যায় না। একইভাবে ভ্যাসিলেইভ দম্পতিরও আগে ১৭৫৫ সালের আর এক রুশ কৃষক মিস্টার কিরিলোভ তার দু’ পক্ষের স্ত্রী মিলিয়ে ৫৭ জন সন্তানের বাবা হয়েছিলেন।
সাবেক সোভিয়েত রাশিয়ার শুয়্যা শহরে ১৭২৫ থেকে ১৭৬৫ সালের মধ্যে এই কৃষকবধূ মোট ৬৯ সন্তানের জন্ম দিয়েছিলেন তিনি। নবজাতকদের মধ্যে ১৬ বার যমজ বা টুইনস, ৭ বার ট্রিপলেট এবং ৪ বার কোয়াড্রুপুলেটস প্রসব করেন তিনি।
সব মিলিয়ে মোট ৬৯ জন সন্তান প্রসব করেন মিসেস ভ্যালেন্তিনা ভ্যাসিলেইভ। এক মানবীর সন্তানের জন্ম দেওয়ার ক্ষেত্রে এখন পর্যন্ত এটাই বিশ্বরেকর্ড। গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসও এই স্বীকৃতি তাকে দিয়েছেন।
কিন্তু একজন নারীর পক্ষে ৬৯ জন সন্তান ভূমিষ্ঠ করা সম্ভব? আপাতদৃষ্টিতে অসম্ভব মনে হলেও বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন বিরল এই ঘটনা সম্ভব। কার্যত জীবনের বড় অংশই তিনি সন্তানসম্ভবা ছিলেন।
দেখা যাচ্ছে কোনো বারই একটি সন্তানের জন্ম দেননি মিসেস ভ্যাসিলেইভ। প্রতিবারই একাধিক সন্তান প্রসব করেছেন। সেদিক দিয়ে মিল আছে তার সঙ্গে মিল আছে ফিওদর ভাসিলিয়েভের দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রীরও। একই ব্যক্তির দুই স্ত্রীর বেলায় এতগুলো সন্তান এবং এতবার যমজ, ট্রিপলেট এবং কোয়াড্রুপুলেটস হওয়া আশ্চর্য বৈকি।
ফিওদর ভ্যাসিলিভের সন্তানদের সম্পর্কে প্রথম প্রকাশিত বিবরণটি দ্য জেন্টলম্যানস ম্যাগাজিনের ১৭৮৩ সালের একটি সংখ্যায় প্রকাশিত হয়েছিল। যা পুরো দেশে একেবারে তোলপাড় সৃষ্টি করে দেয়। তবে বেশ কিছু প্রকাশিত সূত্র এই বিবৃতির সত্যতা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছে। চলে নানান তর্ক বিতর্ক।
সূত্র: গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ড
কেএসকে/জিকেএস