৯ সংকেতে বুঝবেন টেস্টোস্টেরন হরমোন কমেছে

2 weeks ago 18
সম্প্রতি এক গবেষণায় জানা গেছে, পুরুষদের টেস্টোস্টেরন হরমোনের মাত্রা ধীরে ধীরে কমে যাচ্ছে — এবং এটা একটা চিন্তার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। অনেক সময় শরীর কিছু সূক্ষ্ম ইশারা দেয়, যেগুলো আমরা উপেক্ষা করে যাই। নিচে এমন ৯টি লক্ষণ দেওয়া হলো, যেগুলো হতে পারে টেস্টোস্টেরন কমে যাওয়ার গোপন বার্তা। টেস্টোস্টেরন কী? টেস্টোস্টেরন হলো একটি সেক্স হরমোন — সবার শরীরেই থাকে, তবে পুরুষদের শরীরে এর পরিমাণ বেশি। এটি পুরুষদের শরীরে বিভিন্ন ভূমিকা রাখে। যেমন-   যৌনাঙ্গ ও প্রজননক্ষমতা গঠনে    পেশি বাড়াতে  হাড়ের স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে  লাল রক্তকণিকার পরিমাণ বজায় রাখতে  ভালো মুড ধরে রাখতে আরও পড়ুন : কোন কোন শর্ত মেনে ছেলেদের চীনাবাদাম খাওয়া উচিত আরও পড়ুন : থাইরয়েডের সমস্যায় ভুগছেন, বুঝবেন যেসব লক্ষণে যখন শরীরে এই হরমোনের মাত্রা খুব কমে যায় (৩০০ ng/dl এর নিচে), তখন সেটাকে বলে কম টেস্টোস্টেরন, বা পুরুষদের ‘মেনোপজ’-এর মতো একটা অবস্থা। লক্ষণ টেস্টোস্টেরন কমে গেলে যেসব লক্ষণ আসতে পারে (যা আপনি হয়তো নজরই দিচ্ছেন না): ১. চুল পড়া বা পাতলা হয়ে যাওয়া শুধু টাক হওয়া নয়, মুখে বা শরীরের চুল কমে যাওয়া টেস্টোস্টেরনের ঘাটতির একটি লক্ষণ হতে পারে। যদিও চুল পড়ার পেছনে জেনেটিক কারণও থাকে। ২. মস্তিষ্ক ধোঁয়াটে লাগা (Brain Fog) মনে রাখা কষ্ট হচ্ছে? মনোযোগ দিতে পারছেন না? এর কারণ হতে পারে কম টেস্টোস্টেরন। একটি ২০১৯ সালের স্টাডিতে দেখা গেছে, টেস্টোস্টেরন থেরাপি বয়স বেশি এমন পুরুষদের স্মৃতিশক্তিতে কিছুটা উন্নতি আনতে পারে। ৩. অতিরিক্ত ক্লান্তি বা এনার্জির ঘাটতি ভালো ঘুম ও খাওয়া-দাওয়া করার পরও যদি আপনি সবসময় ক্লান্ত বোধ করেন, তাহলে সেটি হতে পারে কম টেস্টোস্টেরনের একটি লক্ষণ। এমনকি আগের মতো এক্সারসাইজ করতেও মন চায় না। ৪. অ্যানিমিয়া (রক্তশূন্যতা) একটি ২০২১ সালের গবেষণায় দেখা গেছে, কম টেস্টোস্টেরন থাকার সঙ্গে অ্যানিমিয়ার সম্পর্ক থাকতে পারে। এর ফলে ক্লান্তি, মাথা ঝিমঝিম করা, হাঁপ ধরা ইত্যাদি সমস্যা দেখা দিতে পারে। ৫. পেশি ও হাড়ের ঘনত্ব কমে যাওয়া টেস্টোস্টেরন কম হলে মাংসপেশি হ্রাস পেতে পারে। এ ছাড়া হাড় দুর্বল হয়ে অস্টিওপোরোসিস পর্যন্ত হতে পারে, যার ফলে হাড় ভেঙে যাওয়ার ঝুঁকি বাড়ে। ৬. মেজাজ খিটখিটে হওয়া বা মন খারাপ টেস্টোস্টেরন হলো মুড নিয়ন্ত্রণকারী হরমোন। এর ঘাটতি মানে — অতিরিক্ত রাগ, উদ্বেগ, স্ট্রেস এমনকি বিষণ্ণতা পর্যন্ত আসতে পারে। ৭. হঠাৎ গরম লাগা (Hot Flashes) শুধু মেয়েদের মেনোপজে না, পুরুষদের টেস্টোস্টেরন খুব কমে গেলেও (৫০ ng/dl এর নিচে) এই গরম লাগা, ঘাম হওয়া বা ত্বক লাল হয়ে যাওয়ার মতো লক্ষণ দেখা যেতে পারে। ৮. শরীরে বাড়তি মেদ জমা হওয়া কম টেস্টোস্টেরন থাকলে পেটের চর্বি বাড়তে পারে। এমনকি কারো কারো বুকের অংশে চর্বি জমে স্তনবৃন্তের মতো হয়ে যেতে পারে, যেটা টেস্টোস্টেরন ও ইস্ট্রোজেনের ভারসাম্য হারানোর ফল। ৯. প্রস্রাব করতে অসুবিধা হওয়া যেমন — রাতে ঘন ঘন প্রস্রাব লাগা (Nocturia), অথবা এমন মনে হওয়া যে মূত্রথলি পুরোপুরি খালি হয়নি। এর পেছনে থাকতে পারে টেস্টোস্টেরনের প্রভাবের কারণে প্রোস্টেট গ্রন্থি বড় হয়ে যাওয়া। কীভাবে টেস্টোস্টেরন স্বাভাবিক রাখা যায়? টেস্টোস্টেরন ঠিক রাখার সবচেয়ে কার্যকর উপায় হলো সুস্থ জীবনধারা অনুসরণ করা: আরও পড়ুন : ঘুমের মধ্যে ঘামছেন, ক্যানসারের লক্ষণ নয়তো আরও পড়ুন : রক্তচাপ সম্পর্কে যা জানা জরুরি  পর্যাপ্ত ঘুম  সঠিক খাবার খাওয়া  অতিরিক্ত মেদ কমানো  নিয়মিত ব্যায়াম  ধূমপান ও অ্যালকোহল এড়িয়ে চলা  মানসিক চাপ কমানো এ ছাড়া শরীরে বিষাক্ত রাসায়নিক বা হরমোন-ব্যাহতকারী পদার্থ (যেমন প্লাস্টিকের রাসায়নিক) কম ব্যবহার করাও গুরুত্বপূর্ণ। অবশ্যই কোনো সমস্যা টের পেলে ডাক্তারের সঙ্গে যোগাযোগ করুন। অনেক সময় সহজ কিছু অভ্যাস বদলেই অনেক বড় পরিবর্তন আসতে পারে। আপনার শরীর যখন সুস্থ থাকে, তখনই জীবনটা ভালোভাবে উপভোগ করা যায়। নিজেকে নজর দিন — কারণ সুস্থতা শুরু হয় সচেতনতা দিয়ে। সূত্র : ব্রাইট সাইড এই তথ্যগুলো শুধু সাধারণ জ্ঞান বৃদ্ধির জন্য। আপনার শরীর ও স্বাস্থ্য সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে অবশ্যই একজন ডাক্তার বা বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।
Read Entire Article