বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে সাশ্রয়ী দামে বিক্রির জন্য ১০ হাজার মেট্রিক টন মসুর ডাল কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এতে ব্যয় হবে ৯৭ কেটি ৯২ লাখ টাকা। প্রতি কেজি মসুর ডালের দাম ধরা হয়েছে ৯৭ টাকা ৯২ পয়সা।
এই মসুর ডাল কেনার অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয়-সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি। মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমদের সভাপতিত্বে এই অনুমোদন দেওয়া হয়।
সরকারি ক্রয়-সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির সভার পাশাপাশি অর্থ উপদেষ্টার সভাপতিত্বে অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়। এই সভায় বৈদেশিক উৎস থেকে বেসরকারি খাতে আমদানিকৃত/আমদানিতব্য চাল স্থানীয় দরপত্রের মাধ্যমে ক্রয়ের একটি প্রস্তাবে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
সরকারি ক্রয়-সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে স্থানীয়ভাবে উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে ১০ হাজার টন মসুর ডাল (৫০ কেজির বস্তায়) কেনার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
টিসিবির ফ্যামিলি কার্ডধারী ১ কোটি পরিবারের কাছে ভর্তুকি মূল্যে বিক্রির লক্ষ্যে ১০ হাজার টন মসুর ডাল ক্রয়ের জন্য স্থানীয়ভাবে উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে দরপত্র আহ্বান করা হলে তিনটি দরপ্রস্তাব জমা পড়ে। তিনটি দরপ্রস্তাবই কারিগরিভাবে ও আর্থিকভাবে রেসপনসিভ হয়।
- আরও পড়ুন
- বাজারদর থেকে কেজিতে ১৭ টাকা কমে মসুর ডাল কিনবে সরকার
- রমজান সামনে রেখে তেল-চিনি-ডাল কিনবে সরকার
দরপ্রস্তাবের সব প্রক্রিয়া শেষে টিইসির সুপারিশে রেসপনসিভ সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠান নাবিল নবা ফুডস লিমিটেড এই ডাল সরবরাহ করবে। ৫০ কেজির বস্তায় প্রতি কেজি ৯৭ টাকা ৯২ পয়সা হিসেবে ১০ হাজার টন মসুর ডাল ক্রয়ে ব্যয় হবে ৯৭ কোটি ৯২ লাখ টাকা।
জানা গেছে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে মসুর ডাল ক্রয়ের লক্ষ্যমাত্রা ২ লাখ ৮৮ হাজার টন। এ পর্যন্ত ক্রয় চুক্তি হয়েছে ১ লাখ ২২ হাজার ৯৫০ টন। এখন আরও ১০ হাজার টন কেনার অনুমোদন মিললো।
এদিকে অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির সভায় রাষ্ট্রীয় জরুরি প্রয়োজনে বৈদেশিক উৎস থেকে বেসরকারি খাতে আমদানিকৃত/আমদানিতব্য চাল স্থানীয় দরপত্রের মাধ্যমে ক্রয়ের প্রস্তাবে নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
জানা গেছে, সরকারি বিতরণ ব্যবস্থা সচল রাখাসহ খাদ্য নিরাপত্তা বলয় সুসংহত রাখার লক্ষ্যে অভ্যন্তরীণ সংগ্রহের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক উৎস থেকে চাল সংগ্রহ করা হয়। আন্তর্জাতিকভাবে জি-টু-জি ভিত্তিতে এবং আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে চাল আমদানি করা করা হয়। আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্রের আওতায় বৈদেশিক উৎস থেকে নন-বাসমতি সিদ্ধ চাল প্রাপ্তি ধীরগতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
এমতাবস্থায়, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ফসলের ঘাটতি পূরণ, সরকারি বিতরণ ব্যবস্থা সচল রাখা ও নিরাপত্তা মজুদ নিশ্চিতকরণের স্বার্থে জরুরি ভিত্তিতে ১ লাখ টন চাল বৈদেশিক উৎস থেকে বেসরকারি খাতে আমদানিকৃত/আমদানিতব্য স্থানীয় দরপত্রের মাধ্যমে ক্রয়ের অনুমোদনের জন্য প্রস্তাব উপস্থাপন করা হলে কমিটি তাতে অনুমোদন দিয়েছে। এই ক্রয় করা চালের মূল্য বাংলাদেশি মুদ্রায় পরিশোধ করা হবে।
সূত্র জানায়, ২০০৭, ২০০৮ ও ২০১৭ সালে বৈদেশিক উৎস থেকে স্থানীয় দরপত্রের মাধ্যমে চাল আমদানির কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছিল। বর্তমান অর্থবছরে সরকারি পর্যায়ে চালের মোট চাহিদা ধরা হয়েছে ৩৯.৭৮ লাখ টন। সর্বশেষ গত ২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত হিসাব অনুযায়ী বর্তমানে খাদ্য মজুদ আছে ৯ লাখ ২৭ হাজার ৯০৩ টন চাল এবং ৩ লাখ ৪৪ হাজার ১৪৯ টন গমসহ মোট ১২ লাখ ৮১ হাজার ২৬৫ টন।
এমএএস/এমআরএম