কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়: প্রধান উপদেষ্টার প্রতিক্রিয়া

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের ঐতিহাসিক রায়কে স্বাগত জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, এই রায় প্রমাণ করেছে যে- ক্ষমতা যাই হোক, কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়। প্রধান উপদেষ্টা বলেন, জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে নিহত-নির্যাতিত হাজারো মানুষের জন্য এই রায় ‘গুরুত্বপূর্ণ হলেও অপর্যাপ্ত’ বিচার নিশ্চিত করেছে। সোমবার (১৭ নভেম্বর) এক বিবৃতিতে প্রধান উপদেষ্টা এসব কথা বলেন। উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার এ তথ্য জানান। বিবৃতিতে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘এই রায় শুধু আইনি স্বীকৃতি নয়; এটি সেই পরিবারগুলোর প্রতি সম্মান, যারা এখনো তাদের প্রিয়জন হারানোর বেদনা নিয়ে বেঁচে আছেন।’ তিনি বলেন, বহু বছরের দমন-পীড়নে বিপর্যস্ত গণতান্ত্রিক ভিত্তি এখন পুনর্গঠনের পথে। মামলায় আলোচিত অপরাধ—যুবক ও শিশুদের বিরুদ্ধে প্রাণঘাতী শক্তি প্রয়োগের নির্দেশ—রাষ্ট্র ও নাগরিকদের মধ্যকার মৌলিক সম্পর্ককে ভঙ্গ করেছে। ‘এ ধরনের কর্মকাণ্ড বাংলাদেশের মানুষের মর্যাদা, সহনশীলতা ও ন্যায়বিচারের প্রতি অঙ্গীকারকে আঘাত করেছে,’ উল্লেখ করেন তিনি। সরকারি হিসাব অনুযা

কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়: প্রধান উপদেষ্টার প্রতিক্রিয়া

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের ঐতিহাসিক রায়কে স্বাগত জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, এই রায় প্রমাণ করেছে যে- ক্ষমতা যাই হোক, কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে নিহত-নির্যাতিত হাজারো মানুষের জন্য এই রায় ‘গুরুত্বপূর্ণ হলেও অপর্যাপ্ত’ বিচার নিশ্চিত করেছে।

সোমবার (১৭ নভেম্বর) এক বিবৃতিতে প্রধান উপদেষ্টা এসব কথা বলেন। উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার এ তথ্য জানান।

বিবৃতিতে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘এই রায় শুধু আইনি স্বীকৃতি নয়; এটি সেই পরিবারগুলোর প্রতি সম্মান, যারা এখনো তাদের প্রিয়জন হারানোর বেদনা নিয়ে বেঁচে আছেন।’

তিনি বলেন, বহু বছরের দমন-পীড়নে বিপর্যস্ত গণতান্ত্রিক ভিত্তি এখন পুনর্গঠনের পথে। মামলায় আলোচিত অপরাধ—যুবক ও শিশুদের বিরুদ্ধে প্রাণঘাতী শক্তি প্রয়োগের নির্দেশ—রাষ্ট্র ও নাগরিকদের মধ্যকার মৌলিক সম্পর্ককে ভঙ্গ করেছে।

‘এ ধরনের কর্মকাণ্ড বাংলাদেশের মানুষের মর্যাদা, সহনশীলতা ও ন্যায়বিচারের প্রতি অঙ্গীকারকে আঘাত করেছে,’ উল্লেখ করেন তিনি।

সরকারি হিসাব অনুযায়ী প্রায় ১ হাজার ৪০০ মানুষ প্রাণ হারিয়েছিল। তারা কেবল সংখ্যা নয়, ছাত্র, অভিভাবক ও অধিকারসম্পন্ন সাধারণ নাগরিক—উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘মাসের পর মাসের সাক্ষ্যে উঠে এসেছে কীভাবে নিরস্ত্র বিক্ষোভকারীদের ওপর, এমনকি হেলিকপ্টার থেকেও গুলি চালানো হয়েছিল। আদালতের এই রায় তাদের ভোগান্তিকে স্বীকৃতি দিয়েছে এবং নিশ্চিত করেছে যে বিচারব্যবস্থা অপরাধীদের জবাবদিহির আওতায় আনবে।’

ড. ইউনূস আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ আবারও বৈশ্বিক ন্যায়বিচার ও জবাবদিহির ধারায় নিজেদের প্রতিষ্ঠা করছে। যে শিক্ষার্থী ও নাগরিকরা পরিবর্তনের জন্য দাঁড়িয়েছিলেন, তারা এই সত্য গভীরভাবে উপলব্ধি করেছিলেন এবং অনেকেই তাদের জীবন দিয়ে তা প্রমাণ করেছেন। তারা তাদের আজ উৎসর্গ করেছেন আমাদের আগামীর জন্য।’

তবে তিনি মনে করেন, সামনে পথচলার জন্য কেবল আইনি প্রক্রিয়া যথেষ্ট নয়; প্রয়োজন রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠান ও নাগরিকদের মধ্যকার আস্থা পুনর্নির্মাণ।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘মানুষ কেন সত্যিকারের প্রতিনিধিত্বের জন্য জীবন বাজি রাখে- সেটি বোঝা এবং সেই আস্থার যোগ্য ব্যবস্থা গড়া অপরিহার্য।’

বিবৃতির শেষে তিনি বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, বাংলাদেশ সাহস ও বিনয়ের সঙ্গে চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলা করবে। আইনের শাসন, মানবাধিকার এবং প্রতিটি মানুষের সম্ভাবনার প্রতি অঙ্গীকার বজায় রাখলে ন্যায়বিচার শুধু টিকে থাকবে না; এটি বিকশিত হবে এবং স্থায়ী হবে।’

এমইউ/বিএ/জেআইএম

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow