চা পানের এই ৭ ভুল ক্ষতি করছে আপনার পাকস্থলী ও লিভারের

চা বাঙালির জীবনের এক অপরিহার্য অংশ। সকাল বেলা জাগরণের জন্য এক কাপ চা, দুপুরে কাজের ফাঁকে চা-বিরতি, বিকেলে বন্ধুদের আড্ডার সঙ্গে চা— সবই আমাদের জীবনধারার অংশ। কিন্তু অনেক সময় আমরা এই প্রিয় পানীয়টিকে সঠিকভাবে উপভোগ করি না। ফলে ছোট ছোট ভুল অভ্যাসগুলো ধীরে ধীরে পাকস্থলী ও লিভারে চাপ সৃষ্টি করতে পারে, যা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে নানা স্বাস্থ্যঝুঁকির কারণ হয়। গবেষণায় দেখা গেছে, চায়ের তৈরি প্রক্রিয়া, দুধের পরিমাণ, চিনি ব্যবহার এবং খাওয়ার সময়— এসবই নির্ধারণ করে চা কতটা স্বাস্থ্যকর বা ক্ষতিকর হবে। তাই চলুন জানি, সাধারণ মনে হলেও চায়ের ৭টি ক্ষতিকর অভ্যাস যা আমাদের শরীরের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াচ্ছে। ১. খুব গাঢ় চা তৈরি করা চায়ের পাতা বা ব্যাগ অনেকক্ষণ রেখে দিলে ক্যাফেইন ও ট্যানিনের মাত্রা বেড়ে যায়। বেশি ট্যানিন পাকস্থলীর লাইনিংকে রগড়াতে পারে, অ্যাসিডিটি বাড়াতে পারে এবং কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যাও সৃষ্টি করতে পারে। গাঢ় চা লিভারের ওপরও অতিরিক্ত চাপ ফেলে। সমাধান : হালকা ও কম সময় ধরে চা প্রস্তুত করুন। ২. খালি পেটে চা পান সকালে ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে চা খাওয়া খুবই ক্ষতিকর। তখন পাকস্থলী প্রাকৃতিকভাবে অ্যাসিডিক

চা পানের এই ৭ ভুল ক্ষতি করছে আপনার পাকস্থলী ও লিভারের

চা বাঙালির জীবনের এক অপরিহার্য অংশ। সকাল বেলা জাগরণের জন্য এক কাপ চা, দুপুরে কাজের ফাঁকে চা-বিরতি, বিকেলে বন্ধুদের আড্ডার সঙ্গে চা— সবই আমাদের জীবনধারার অংশ। কিন্তু অনেক সময় আমরা এই প্রিয় পানীয়টিকে সঠিকভাবে উপভোগ করি না। ফলে ছোট ছোট ভুল অভ্যাসগুলো ধীরে ধীরে পাকস্থলী ও লিভারে চাপ সৃষ্টি করতে পারে, যা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে নানা স্বাস্থ্যঝুঁকির কারণ হয়।

গবেষণায় দেখা গেছে, চায়ের তৈরি প্রক্রিয়া, দুধের পরিমাণ, চিনি ব্যবহার এবং খাওয়ার সময়— এসবই নির্ধারণ করে চা কতটা স্বাস্থ্যকর বা ক্ষতিকর হবে। তাই চলুন জানি, সাধারণ মনে হলেও চায়ের ৭টি ক্ষতিকর অভ্যাস যা আমাদের শরীরের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াচ্ছে।

১. খুব গাঢ় চা তৈরি করা

চায়ের পাতা বা ব্যাগ অনেকক্ষণ রেখে দিলে ক্যাফেইন ও ট্যানিনের মাত্রা বেড়ে যায়। বেশি ট্যানিন পাকস্থলীর লাইনিংকে রগড়াতে পারে, অ্যাসিডিটি বাড়াতে পারে এবং কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যাও সৃষ্টি করতে পারে। গাঢ় চা লিভারের ওপরও অতিরিক্ত চাপ ফেলে।

সমাধান : হালকা ও কম সময় ধরে চা প্রস্তুত করুন।

২. খালি পেটে চা পান

সকালে ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে চা খাওয়া খুবই ক্ষতিকর। তখন পাকস্থলী প্রাকৃতিকভাবে অ্যাসিডিক থাকে, যা চা খেলে গ্যাস্ট্রিক সমস্যা, বমি ভাব এবং অ্যাসিডিটি বাড়াতে পারে। এছাড়া, খালি পেটে চা লোহা (iron) শোষণেও বাধা দেয়।

সমাধান : চা খাওয়ার আগে হালকা কিছু খান; যেমন টোস্ট বা ফল।

৩. অতিরিক্ত চিনি যোগ করা

চা মিষ্টি খেতে ভালো লাগলেও বেশি চিনি পাকস্থলী ও লিভারের জন্য ক্ষতিকর। চিনি ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়াকে পুষ্টি দেয়, হজম ধীর করে এবং ফোলাভাব সৃষ্টি করে। লিভারে অতিরিক্ত চিনি জমে ফ্যাটি লিভারের ঝুঁকি বাড়ায়।

সমাধান : চিনি কমানো বা হালকা বিকল্প ব্যবহার করা ভালো।

৪. দুধ বেশি ব্যবহার করা

প্রতিদিন দুধ দিয়ে চা খাওয়ার ক্ষেত্রে অতিরিক্ত দুধ হজম ধীর করে, ফোলাভাব ও ভারী অনুভূতি বাড়ায়। গাঢ় চায়ের সঙ্গে বেশি দুধ মিশালে পাকস্থলীর উপর চাপও বাড়ে।

সমাধান : দুধের পরিমাণ কমান বা হালকা দুধ ব্যবহার করুন।

৫. খাবারের ঠিক পরে চা খাওয়া

খাওয়ার সাথে সাথে চা খেলে লোহা ও জিঙ্কের শোষণ কমে যায় এবং হজমও ধীর হয়।

সমাধান : খাবারের ৩০ মিনিট পর চা পান করুন।

৬. দিনে খুব বেশি চা খাওয়া

দিনে ৩-৪ কাপের বেশি চা পান করা অতিরিক্ত কফেইন সরবরাহ করে, যা পাকস্থলীতে অ্যাসিডিটি, ডিহাইড্রেশন এবং লিভারের ওপর চাপ বাড়ায়।

সমাধান : মাত্রা বজায় রাখুন, চা হলো আনন্দের পানীয়, চাপের নয়।

৭. শুধুই চা পানে নির্ভর করা

চা হালকা ডিউরেটিক, অর্থাৎ প্রস্রাবের মাধ্যমে পানি বের করে দেয়। শুধুই চা পান করলে ডিহাইড্রেশন হয়, যা হজম ও লিভারের ওপর চাপ ফেলে।

সমাধান : চা খাওয়ার মধ্যে পর্যাপ্ত পানি পান করুন।

শেষ কথা

চা নিজে কোনো ক্ষতিকর পানীয় নয়। হালকা চা, কম চিনি, সঠিক দুধের পরিমাণ, সময়মতো চা পান এবং পর্যাপ্ত পানি— এসবই আপনাকে পাকস্থলী ও লিভারের স্বাস্থ্যের জন্য সুরক্ষা দেবে। ছোট ছোট পরিবর্তনেই চা উপভোগ করতে পারেন, দীর্ঘমেয়াদে ক্ষতি ছাড়াই।

সূত্র : টাইমস অব ইন্ডিয়া

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow