‌‘টিউলিপ দুর্নীতি সংঘটনে সহায়তা ও প্ররোচনার সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন’

সম্প্রতি বিভিন্ন দেশি–বিদেশি গণমাধ্যমে টিউলিপ সিদ্দিকের বিচার ও দণ্ড নিয়ে প্রশ্ন তোলার পর বাংলাদেশ দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এসব অভিযোগের প্রেক্ষিতে মামলার নথিপত্র পর্যালোচনা করে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করেছে। মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) এক বিজ্ঞপ্তিতে সংস্থাটি জানায়, মামলার সব কার্যক্রম আইনানুগভাবে সম্পন্ন হয়েছে এবং টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ–পত্র ও সাক্ষ্য–প্রমাণ দুর্নীতি–সংক্রান্ত অপরাধের যথেষ্ট ভিত্তি প্রতিষ্ঠা করে। ১ ডিসেম্বর পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির অভিযোগে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার বোন শেখ রেহানা ও ভাগ্নি ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ সিদ্দিককে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেন আদালত। মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) এ বিষয়ে দুদকের প্রতিক্রিয়া জানান সংস্থাটির জনসংযোগ কর্মকর্তা ও উপ-পরিচালক আকতারুল ইসলাম। প্রতিক্রিয়াটি দুদকের চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আবদুল মোমেন পাঠিয়েছেন বলে জানান আকতারুল ইসলাম। প্রতিক্রিয়ায় দুদক জানায়, টিউলিপ সিদ্দিক শেখ রেহানার মেয়ে—বিভিন্ন সময়ে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন মূল্যবান জমির বরাদ্দে অবৈধ প্রভাব খাটানোর সঙ

‌‘টিউলিপ দুর্নীতি সংঘটনে সহায়তা ও প্ররোচনার সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন’

সম্প্রতি বিভিন্ন দেশি–বিদেশি গণমাধ্যমে টিউলিপ সিদ্দিকের বিচার ও দণ্ড নিয়ে প্রশ্ন তোলার পর বাংলাদেশ দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এসব অভিযোগের প্রেক্ষিতে মামলার নথিপত্র পর্যালোচনা করে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করেছে।

মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) এক বিজ্ঞপ্তিতে সংস্থাটি জানায়, মামলার সব কার্যক্রম আইনানুগভাবে সম্পন্ন হয়েছে এবং টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ–পত্র ও সাক্ষ্য–প্রমাণ দুর্নীতি–সংক্রান্ত অপরাধের যথেষ্ট ভিত্তি প্রতিষ্ঠা করে।

১ ডিসেম্বর পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির অভিযোগে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার বোন শেখ রেহানা ও ভাগ্নি ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ সিদ্দিককে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেন আদালত।

মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) এ বিষয়ে দুদকের প্রতিক্রিয়া জানান সংস্থাটির জনসংযোগ কর্মকর্তা ও উপ-পরিচালক আকতারুল ইসলাম। প্রতিক্রিয়াটি দুদকের চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আবদুল মোমেন পাঠিয়েছেন বলে জানান আকতারুল ইসলাম।

প্রতিক্রিয়ায় দুদক জানায়, টিউলিপ সিদ্দিক শেখ রেহানার মেয়ে—বিভিন্ন সময়ে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন মূল্যবান জমির বরাদ্দে অবৈধ প্রভাব খাটানোর সঙ্গে জড়িত ছিলেন। মামলার নথি অনুযায়ী, শেখ হাসিনা, শেখ রেহানা এবং তাদের পরিবারের একাধিক সদস্যের নামে প্লট বরাদ্দ করে দেওয়া হয় প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের প্রত্যক্ষ প্রভাব ব্যবহারের মাধ্যমে। এ সংক্রান্ত তিনটি মামলার মধ্যে একটি স্পেশাল কেস এর রায় এরই মধ্যে ঘোষণা করা হয়েছে।

দুদক জানায়, মামলার বিচারিক পর্যায়ে ৩২ জন সাক্ষী সাক্ষ্য দেন, যাদের কয়েকজন আদালতে শপথ নিয়ে বলেন যে টিউলিপ সিদ্দিক তার প্রভাবশালী অবস্থান ব্যবহার করে শেখ হাসিনাকে প্রভাবিত করেছিলেন। সাক্ষ্য ও নথিভুক্ত প্রমাণ থেকে দেখা যায়, তার মা, ভাইবোন এবং নিজ নামেই গুরুত্বপূর্ণ স্থানে জমি বরাদ্দ পাওয়া হয়েছিল। এগুলো ঢাকার অন্যতম অভিজাত এলাকায় অবস্থিত, যেখানে সরকার মূলত জনসংখ্যার চাপ মোকাবিলায় আবাসন প্রকল্প হাতে নিয়েছিল।

দুদকের বক্তব্য অনুযায়ী, এসব কার্যক্রম দণ্ডবিধির ১৬১, ১৬৩, ১৬৪, ১৬৫(কা), ২০১, ২১৭, ২১৮, ৪০৯ ও ৪২০ ধারায় বর্ণিত অপরাধের সহায়তা বা প্ররোচনা হিসেবে বিবেচিত হয়। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারার অভিযোগ।

দুদক বলছে- টিউলিপ সিদ্দিক নিজেও গুলশান–২ এলাকায় একটি মূল্যবান প্লট বরাদ্দ নিয়েছিলেন।

দুদকের দাবি, টিউলিপ সিদ্দিক লন্ডনে একাধিক সম্পত্তির সঙ্গেও সম্পৃক্ত, যেখানে অফশোর কোম্পানির সহায়তায় ক্রয় করা হয়েছে এমন তথ্যও এসেছে তদন্তে। সংস্থাটি প্রশ্ন তুলেছে—একজন জনসেবামূলক পরিবারের সদস্য কীভাবে ঢাকা ও লন্ডনের মতো ব্যয়বহুল শহরে বিপুল সম্পত্তি অর্জন করলেন?

দুদকের ভাষ্য অনুযায়ী, টিউলিপ সিদ্দিকের অনুপস্থিতিতে বিচার শুরু হওয়া তার নিজস্ব সিদ্ধান্ত। তাকে আদালতে হাজিরা দেওয়ার ও নিজের বক্তব্য দেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু তিনি দেশে ফিরে উপস্থিত হননি কিংবা কোনো আইনি প্রতিনিধি নিয়োগ করেননি।

সংস্থাটি বলছে, সব মিলিয়ে নথি, সাক্ষ্য ও পরিস্থিতিগত প্রমাণ স্পষ্টভাবে দেখায় যে টিউলিপ সিদ্দিক দুর্নীতি সংঘটনে সহায়তা ও প্ররোচনার সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। সুতরাং তাকে নির্দোষ দাবি করার কোনো ভিত্তি নেই।

এসএম/এমআইএইচএস

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow