বরগুনা নিউমোনিয়ার প্রকোপ, আক্রান্ত বেশি শিশু
শীত মৌসুমের শুরুতেই বরগুনায় দেখা দিয়েছে নিউমোনিয়ার প্রকোপ। এতে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা। বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে ধারণক্ষমতার তিনগুণ বেশি শিশু ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এতে ঔষধসহ চিকিৎসা সামগ্রীর সংকট তৈরি হয়েছে। তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, অতিরিক্ত রোগীর কারণে মজুত ফুরিয়ে যাওয়ায় এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। হাসপাতাল সূত্র জানায়, প্রথমে জ্বর-কাশি, এরপর শনাক্ত হচ্ছে নিউমোনিয়া আর ডায়রিয়ায়ও। ৫০ শয্যার শিশু ওয়ার্ডে প্রতিদিনই ১২০ থেকে ১৫০ জন শিশু ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছে। গত এক মাস ধরেই বাড়ছে সর্দি-কাশি, জ্বর ও নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার হার। ফলে চিকিৎসা নিতে এসে অতিরিক্ত রোগীর চাপে বেড সংকটে পড়ে হাসপাতালের মেঝেতে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে অধিকাংশ শিশু রোগীদের। সরেজমিনে বরগুনা জেনারেল হাসপাতাল ঘুরে দেখা যায়, ২৫০ শয্যার বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে উপচে পড়া শিশু রোগীদের ভিড়। ৫০ শয্যার এই ওয়ার্ডে প্রতিদিনই ভর্তি হচ্ছেন দেড় শতাধিক শিশু। ফলে শিশু ওয়ার্ডের বেড, মেঝে কিংবা বারান্দায় কোথাও তিল ধরনের ঠাঁই নেই। হাসপাতালের ধারণক্ষমতার প্রায় তিনগুণ শিশু ভর্তি হওয়ায় তৈরি হয়ে
শীত মৌসুমের শুরুতেই বরগুনায় দেখা দিয়েছে নিউমোনিয়ার প্রকোপ। এতে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা। বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে ধারণক্ষমতার তিনগুণ বেশি শিশু ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এতে ঔষধসহ চিকিৎসা সামগ্রীর সংকট তৈরি হয়েছে।
তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, অতিরিক্ত রোগীর কারণে মজুত ফুরিয়ে যাওয়ায় এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
হাসপাতাল সূত্র জানায়, প্রথমে জ্বর-কাশি, এরপর শনাক্ত হচ্ছে নিউমোনিয়া আর ডায়রিয়ায়ও। ৫০ শয্যার শিশু ওয়ার্ডে প্রতিদিনই ১২০ থেকে ১৫০ জন শিশু ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছে। গত এক মাস ধরেই বাড়ছে সর্দি-কাশি, জ্বর ও নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার হার। ফলে চিকিৎসা নিতে এসে অতিরিক্ত রোগীর চাপে বেড সংকটে পড়ে হাসপাতালের মেঝেতে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে অধিকাংশ শিশু রোগীদের।
সরেজমিনে বরগুনা জেনারেল হাসপাতাল ঘুরে দেখা যায়, ২৫০ শয্যার বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে উপচে পড়া শিশু রোগীদের ভিড়। ৫০ শয্যার এই ওয়ার্ডে প্রতিদিনই ভর্তি হচ্ছেন দেড় শতাধিক শিশু। ফলে শিশু ওয়ার্ডের বেড, মেঝে কিংবা বারান্দায় কোথাও তিল ধরনের ঠাঁই নেই। হাসপাতালের ধারণক্ষমতার প্রায় তিনগুণ শিশু ভর্তি হওয়ায় তৈরি হয়েছে তীব্র বেড সংকট। এদিকে দুশ্চিন্তাগ্রস্ত অভিভাবকরা ঘুরছেন দিক-বেদিক। সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিলেও বেশিরভাগ ঔষধ কিনতে হচ্ছে ফার্মেসি থেকে, পাশাপাশি বেশ কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে যেতে হচ্ছে প্রাইভেট ক্লিনিকে। ফলে বেড়ে যাচ্ছে চিকিৎসা ব্যয়।
চরকলোনী এলাকার বাসিন্দা সুমাইয়া অমি জাগো নিউজকে বলেন, আমার বাচ্চার নিউমোনিয়া ধরা পড়েছে। এখানে সিট না পাওয়ায় এখন বারান্দায় থেকে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে। হাসপাতাল থেকে কোনো ওষুধ দিচ্ছে না, তাই সব ওষুধ বাইরে থেকে কিনতে হচ্ছে। আমরা যারা সামর্থ্যবান আছি তাদের সমস্যা না হলেও এখানে বেশিরভাগ রোগীর পরিবারই নিম্ন আয়ের। সরকারের উচিত এই সংকটকালীন মুহূর্তে জরুরি ব্যবস্থা নেওয়া।
একই অভিযোগ করেন পরির খাল নামক এলাকার বাসিন্দা মো. অলিউল্লাহ, তিনি জানান, অসুস্থ এক ছেলে ও এক মেয়েকে নিয়ে চারদিন ধরে ভর্তি আছেন হাসপাতালে। আর্থিকভাবে অসচ্ছল হওয়ায় বাচ্চাদের চিকিৎসার জন্য সরকারি হাসপাতালে এসেও হাসপাতাল থেকে অল্প কিছু ওষুধ পেলেও বাকি সব ওষুধই বাইরে থেকে কিনতে হচ্ছে।
হাসপাতালে ভর্তি এক শিশুর মা তানিয়া আক্তার বলেন, অসুস্থ বাচ্চাকে নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি। ডাক্তার পরীক্ষা করতে দিয়েছে কিন্তু হাতে টাকা নেই, এখন পরীক্ষা করতে পারছি না। টাকা জোগাড় হলে পরীক্ষা করতে যাবো। হাসপাতাল থেকে শুধু নাপা ছাড়া আর কোনো ওষুধ পাইনি, প্রেসক্রিপশন লিখে দিয়েছে বাকি সব ওষুধ বাইরে থেকে কিনতে হবে।
২৫০ শয্যা বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. মাহমুদ মুর্শিদ শুভ বলেন, এখন আমাদের শিশু ওয়ার্ডে সব থেকে বেশি রোগী আসছে জ্বর, সর্দি ও কাশি নিয়ে। পরবর্তীতে পরীক্ষা করে দেখা যায় তাদের অধিকাংশই নিউমোনিয়া আক্রান্ত, এর সঙ্গে পাওয়া যাচ্ছে ডায়রিয়া আক্রান্ত শিশুদেরও।
তিনি আরও বলেন, অভিভাবকদের উচিত এই সময় সচেতন হওয়া। রাতে শিশুদের বাইরে নিয়ে বের না হওয়া, গরম কাপড় ব্যবহার এবং ভাইরাল সংক্রমণ রোধে মাস্ক পরানো খুব জরুরি। এছাড়াও শিশুদের কোনো সমস্যা বোধ করলে সরাসরি হাসপাতালে নিয়ে আসতে হবে।
বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. রেজওয়ানুর আলম বলেন, হঠাৎ শিশু রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় ওষুধের মজুত কমে গেছে। তবে সংকট দূর করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। বর্তমানে হাসপাতালে ১৫০ জনের মতো শিশু ভর্তি আছেন এবং চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে আমাদের বিশেষজ্ঞ দল সার্বক্ষণিক কাজ করছে।
নুরুল আহাদ অনিক/এনএইচআর/এমএস
What's Your Reaction?