মাদুরোকে ‘বিদেশি সন্ত্রাসী সংগঠনের সদস্য’ ঘোষণা ট্রাম্প প্রশাসনের
ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো ও তার ঘনিষ্ঠ সরকারি মিত্রদের আনুষ্ঠানিকভাবে ‘বিদেশি সন্ত্রাসী সংগঠনের সদস্য’ হিসেবে চিহ্নিত করলো মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন। এর ফলে সোমবার (২৫ নভেম্বর) থেকে ভেনেজুয়েলার বিরুদ্ধে যে কোনো পদক্ষেপ নেওয়ার ক্ষেত্রে আরও বিস্তৃত ক্ষমতা পেতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। ‘কার্টেল দে লস সোলোস’ নামের যে গোষ্ঠীকে বিদেশি সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে, বিশেষজ্ঞদের মতে এটি কোনো প্রচলিত সংগঠিত সন্ত্রাসী গোষ্ঠী নয়, বরং ভেনেজুয়েলার সরকারি ও সামরিক খাতের দুর্নীতিগ্রস্ত কর্মকর্তাদের অনানুষ্ঠানিক নেটওয়ার্ককে বোঝাতে ব্যবহৃত একটি টার্ম। এই ঘোষণার মাধ্যমে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মাদুরোর ব্যক্তিগত সম্পদ, অবকাঠামো ও আর্থিক লেনদেনের ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞা জারি করার ক্ষমতা পাবেন। তবে এটিকে সামরিকভাবে প্রাণঘাতী হামলার সরাসরি অনুমোদন হিসেবে দেখা যাচ্ছে না। তবুও প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তারা যুক্তি দিচ্ছেন যেএমন একটি চিহ্নিতকরণ যুক্তরাষ্ট্রকে ভেনেজুয়েলার ভেতরে সামরিক অভিযান পরিচালনার আরও ‘বর্ধিত বিকল্প’ এনে দেবে। বিশেষজ্ঞরা বলেন, কার্টেল দে লস সোলোস মূলত ভে
ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো ও তার ঘনিষ্ঠ সরকারি মিত্রদের আনুষ্ঠানিকভাবে ‘বিদেশি সন্ত্রাসী সংগঠনের সদস্য’ হিসেবে চিহ্নিত করলো মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন। এর ফলে সোমবার (২৫ নভেম্বর) থেকে ভেনেজুয়েলার বিরুদ্ধে যে কোনো পদক্ষেপ নেওয়ার ক্ষেত্রে আরও বিস্তৃত ক্ষমতা পেতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র।
‘কার্টেল দে লস সোলোস’ নামের যে গোষ্ঠীকে বিদেশি সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে, বিশেষজ্ঞদের মতে এটি কোনো প্রচলিত সংগঠিত সন্ত্রাসী গোষ্ঠী নয়, বরং ভেনেজুয়েলার সরকারি ও সামরিক খাতের দুর্নীতিগ্রস্ত কর্মকর্তাদের অনানুষ্ঠানিক নেটওয়ার্ককে বোঝাতে ব্যবহৃত একটি টার্ম।
এই ঘোষণার মাধ্যমে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মাদুরোর ব্যক্তিগত সম্পদ, অবকাঠামো ও আর্থিক লেনদেনের ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞা জারি করার ক্ষমতা পাবেন। তবে এটিকে সামরিকভাবে প্রাণঘাতী হামলার সরাসরি অনুমোদন হিসেবে দেখা যাচ্ছে না।
তবুও প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তারা যুক্তি দিচ্ছেন যেএমন একটি চিহ্নিতকরণ যুক্তরাষ্ট্রকে ভেনেজুয়েলার ভেতরে সামরিক অভিযান পরিচালনার আরও ‘বর্ধিত বিকল্প’ এনে দেবে।
বিশেষজ্ঞরা বলেন, কার্টেল দে লস সোলোস মূলত ভেনেজুয়েলার নিরাপত্তা বাহিনীর ভেতরে থাকা এমন সব গোষ্ঠীকে বোঝায়, যাদের বিরুদ্ধে মাদক পাচারের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ আছে। প্রেসিডেন্ট মাদুরো ব্যক্তিগতভাবে এসব অভিযোগ সবসময় অস্বীকার করেছেন ও তার সরকারও বহুবার জানিয়েছে যে এ ধরনের কোনো কার্টেল বাস্তবে নেই।
হোয়াইট হাউজ সূত্রে জানা গেছে, ট্রাম্পকে ভেনেজুয়েলার ভেতরে সম্ভাব্য সামরিক পদক্ষেপের নানান বিকল্প সম্পর্কে জানানো হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে সরকারি বা সামরিক স্থাপনায় হামলা, বিশেষ অভিযানে ধরপাকড় অথবা কোনো পদক্ষেপই না নেওয়ার সিদ্ধান্ত।
তবে যুক্তরাষ্ট্রের জনগণের বড় অংশ এই হস্তক্ষেপের বিরোধিতা করছে। সিবিএস/ইউগভের এক জরিপে দেখা গেছে, ৭০ শতাংশ মার্কিনি ভেনেজুয়েলায় সামরিক পদক্ষেপের বিপক্ষে আর পক্ষে মত দিয়েছেন মাত্র ৩০ শতাংশ। পাশাপাশি ৭৬ শতাংশ উত্তরদাতা মনে করছেন, ট্রাম্প প্রশাসন এখনো স্পষ্টভাবে জানাতে পারেনি কেন এমন সামরিক প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।
সরকারি বিবৃতিতে ট্রাম্প প্রশাসন বলছে, এ প্রচেষ্টা মূলত ‘অবৈধ অভিবাসন ও মাদক প্রবাহ’ কমানোর উদ্দেশ্যে। তবে এতে যে মাদুরো সরকারের পতন ত্বরান্বিত হতে পারে, সে সম্ভাবনাও অস্বীকার করা হচ্ছে না। মার্কিন কর্মকর্তারা বলছেন, ট্রাম্প আশা করছেন যে চাপের মুখে মাদুরো সরাসরি সামরিক হামলা ছাড়াই পদত্যাগে বাধ্য হবেন।
এদিকে, ট্রাম্প সম্প্রতি জানিয়েছেন যে মাদুরো তার সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছেন ও সঠিক সময় এলে তিনি নিজেও আলোচনায় বসতে পারেন বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন। এ বিষয়ে সিএনএনের অনুরোধে হোয়াইট হাউজ এখনো কোনো মন্তব্য দেয়নি।
এদিকে বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) যুক্তরাষ্ট্র ভেনেজুয়েলার উপকূলে সর্ববৃহৎ সামরিক শক্তি দেখিয়েছে। এদিন খোলা আকাশে অন্তত ছয়টি মার্কিন যুদ্ধবিমান দেখা যায়। এর মধ্যে ছিল সুপারসনিক এফ/এ -১৮ই ফাইটার জেট, একটি বি-৫২ কৌশলগত বোমারু ও নজরদারি বিমান।
এছাড়া তিনটি আন্তর্জাতিক বিমানসংস্থা ভেনেজুয়েলা থেকে তাদের ফ্লাইট বাতিল করেছে, কারণ যুক্তরাষ্ট্রের বিমান চলাচল নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষ সতর্কতা জারি করে জানিয়েছিল যে দেশটির আকাশে ‘সম্ভাব্য ঝুঁকিপূর্ণ পরিস্থিতি’ বিরাজ করছে।
সম্প্রতি ক্যারিবীয় সাগরে বিশাল সামরিক বাহিনী মোতায়েন করেছে যুক্তরাষ্ট্র। মাদকবিরোধী অভিযানের নামে প্রশান্ত মহাসাগর ও ক্যারিবীয় অঞ্চলে ২১ বারের বেশি সামরিক অভিযান পরিচালনা করেছে মার্কিন বাহিনী। গত কয়েক মাসে মার্কিন বাহিনী মাদক পাচারের অভিযোগে আন্তর্জাতিক জলসীমায় থাকা বিভিন্ন নৌকায় হামলা চালিয়ে ৮০ জনের বেশি মানুষকে হত্যা করেছে। এ ঘটনাকে অবৈধ এবং বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড আখ্যা দিয়ে মার্কিন বাহিনীকে গোয়েন্দা তথ্য সরবরাহ বন্ধ করেছে যুক্তরাজ্য ও কানাডা।
জাতিসংঘ কর্মকর্তারা ও আন্তর্জাতিক আইন বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, এসব হামলা যুক্তরাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক আইনের স্পষ্ট লঙ্ঘন এবং তা বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শামিল।
সূত্র: সিএনএন
এসএএইচ
What's Your Reaction?