রাশিয়ার হামলার মুখে আরেকটি শীতের মৌসুমের জন্য ইউক্রেনের প্রস্তুতি
যুদ্ধকালীন কিয়েভে সূর্যাস্তের পর পর এখন রাস্তাগুলো অন্ধকার হয়ে যাচ্ছে। মানুষের ছায়াও দ্রুত মিলিয়ে যায়। মাঝে মাঝে কেবল ক্ষীণ আলো চোখে পড়ে। যুক্তরাষ্ট্রের শান্তি-প্রস্তাবে আত্মসমর্পণের সম্ভাব্য চাপের মুখে ইউক্রেন এখন দিশেহারা। আর রাজধানী কিয়েভের মানুষ এখন যুদ্ধের তৃতীয় ও সবচেয়ে কঠিন শীতের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। খবর এএফপির। ২০২২ সালে আক্রমণ শুরুর পর থেকেই রাশিয়া ইউক্রেনের জ্বালানি অবকাঠামোতে নিরন্তর হামলা চালিয়ে আসছে। তবে এবার ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলার সংখ্যা রেকর্ড মাত্রায় পৌঁছেছে। আগের শীতের মৌসুমগুলো কোনো ভাবে কাটিয়ে দেওয়া সম্ভব হলেও এবার মানুষ বাড়তি সতর্কতা নিচ্ছে। কিয়েভের নৃত্যশিল্পী দিমিত্রো কুস্তভ জানান, সাম্প্রতিক ব্ল্যাকআউটের পরই তিনি জেনারেটর, ইনভার্টার ও ব্যাটারির সমন্বয়ে নিজ স্টুডিওতে জরুরি বিদ্যুৎব্যবস্থা গড়ে তুলেছেন। না হলে দিনে দু’বার করে চার ঘণ্টা করে বিদ্যুৎ চলে যেত। তার মতে, মানুষের জন্য এখন উষ্ণতা আর আশার প্রয়োজন। আলো থাকলে তারা আসতে পারে, অনুশীলন করতে পারে, কথা বলতে পারে, অনুভূতি প্রকাশ করতে পারে। ইউক্রেন এখনো গ্যাস নেটওয়ার্কের ক্ষতির পূর্ণ বিবরণ প্রকাশ করেনি।। তবে
যুদ্ধকালীন কিয়েভে সূর্যাস্তের পর পর এখন রাস্তাগুলো অন্ধকার হয়ে যাচ্ছে। মানুষের ছায়াও দ্রুত মিলিয়ে যায়। মাঝে মাঝে কেবল ক্ষীণ আলো চোখে পড়ে। যুক্তরাষ্ট্রের শান্তি-প্রস্তাবে আত্মসমর্পণের সম্ভাব্য চাপের মুখে ইউক্রেন এখন দিশেহারা। আর রাজধানী কিয়েভের মানুষ এখন যুদ্ধের তৃতীয় ও সবচেয়ে কঠিন শীতের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। খবর এএফপির।
২০২২ সালে আক্রমণ শুরুর পর থেকেই রাশিয়া ইউক্রেনের জ্বালানি অবকাঠামোতে নিরন্তর হামলা চালিয়ে আসছে। তবে এবার ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলার সংখ্যা রেকর্ড মাত্রায় পৌঁছেছে। আগের শীতের মৌসুমগুলো কোনো ভাবে কাটিয়ে দেওয়া সম্ভব হলেও এবার মানুষ বাড়তি সতর্কতা নিচ্ছে।
কিয়েভের নৃত্যশিল্পী দিমিত্রো কুস্তভ জানান, সাম্প্রতিক ব্ল্যাকআউটের পরই তিনি জেনারেটর, ইনভার্টার ও ব্যাটারির সমন্বয়ে নিজ স্টুডিওতে জরুরি বিদ্যুৎব্যবস্থা গড়ে তুলেছেন। না হলে দিনে দু’বার করে চার ঘণ্টা করে বিদ্যুৎ চলে যেত। তার মতে, মানুষের জন্য এখন উষ্ণতা আর আশার প্রয়োজন। আলো থাকলে তারা আসতে পারে, অনুশীলন করতে পারে, কথা বলতে পারে, অনুভূতি প্রকাশ করতে পারে।
ইউক্রেন এখনো গ্যাস নেটওয়ার্কের ক্ষতির পূর্ণ বিবরণ প্রকাশ করেনি।। তবে স্থানীয় গণমাধ্যম বলছে, উৎপাদন সক্ষমতার প্রায় ৬০ শতাংশ নষ্ট হয়ে গেছে। কিয়েভ বলছে, শীতকাল কাটানোর জন্য তাদের কাছে পর্যাপ্ত মজুত আছে তবে ট্রান্সমিশন অবকাঠামো নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে। আশঙ্কা আছে, নতুন হামলায় রাজধানীর প্রায় ৩৫ লাখ মানুষের শহরে ব্যাপক তাপ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
কুস্তভ বলেন, অবস্থা মানিয়ে নেওয়া ছাড়া উপায় নেই। লোডশেডিং এখন দৈনন্দিন জীবনের অংশ বলেও উল্লেখ করেন তিনি।দেশজুড়ে এখন প্রতিদিনের সকাল শুরু হয় যুদ্ধাহতদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালনের বার্তা দিয়ে। এরপর থাকে বিমানবাহিনীর রিপোর্ট-রাতে কতগুলো রুশ ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন আঘাত হেনেছে এবং রাষ্ট্রীয় বিদ্যুৎ সরবরাহকারী উক্রেনেরগো’র ঘোষণা: কোন কোন অঞ্চলে লোডশেডিং হবে। কখনো বলা হয় ‘বেশিরভাগ অঞ্চল’ আবার কখনো ‘সব অঞ্চলে’র কথা।
কিয়েভে এখন লোডশেডিং যেন সাধারণ ঘটনা হয়ে উঠেছে। ৬৬ বছর বয়সী ভলোদিমির ও তার স্ত্রী তেতিয়ানা (৬৪) রাত জেগে গোসল করা, কাপড় ধোয়া ও ব্যাটারি চার্জ করার চেষ্টা করেন। ভলোদিমির এখন আবার পুরোনো দিনের মতো কেরোসিন ল্যাম্প ব্যবহার করেন।
তারা বাড়িতে ব্যাটারি, জেনারেটর, রিচার্জেবল বাল্ব, গ্যাসক্যান সবকিছু মজুত করে রাখছেন। তিনি বলেন, গ্যাস না থাকলে কাঠ আছে। তবে তেতিয়ানা তার ৮৫ বছর বয়সী খালাকে নিয়ে উদ্বিগ্ন কারণ তিনি একা থাকেন এবং এত প্রস্তুতি নিতে পারেননি।
২০২২ থেকে ২০২৩ সালে যুদ্ধের সময় পুরো শীতকালজুড়ে অনবরত জ্বালানি স্থাপনায় রাশিয়ার হামলার ঘটনায় লোকজন অবাক হয়ে গিয়েছিল। তেতিয়ানা বলেন, অনেকে ভেবেছিল পরিস্থিতি ঠিক হয়ে যাবে এবং যুদ্ধ আর শুরু হবে না কিন্তু তা হয়নি।
এখন পরিস্থিতি বদলাচ্ছে। অক্টোবরের বড় হামলার পর দেশজুড়ে জেনারেটর বিক্রি তিনগুণ, পাওয়ারব্যাংক ও ক্যাম্পিং বার্নার বিক্রি আটগুণ বেড়েছে। তবে দাম এখন বড় বাধা। সবাই জেনারেটর বা হিটার কিনতে পারছেন না বলে উল্লেখ করেছেন ভলোদিমির।
টিটিএন
What's Your Reaction?