লবণ নাকি চিনি কোনটি হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়াতে পারে
আমাদের রান্নাঘরে কিছু খাবারে ক্ষতিকর উপাদান লুকিয়ে থাকে, যা আমরা সাধারণত অস্বাস্থ্যকর বলেও মনে করি না। অথচ এই খাবারগুলো প্রতিদিন পাতে আসে এবং তার মধ্যে লুকিয়ে থাকে হার্টের সবচেয়ে বড় শত্রু। হার্টের স্বাস্থ্য নিয়ে যখন আলোচনা হয়, তখন রান্নাঘরের লবণ ও চিনি প্রায়ই কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হয়। তাই চিনি ও লবণ কীভাবে রক্তচাপ, প্রদাহ, ধমনীর স্বাস্থ্য এবং দীর্ঘমেয়াদী হৃদরোগের ঝুঁকি প্রভাবিত করে তা গুরুত্বের সঙ্গে দেখা প্রয়োজন। এখন প্রশ্ন হচ্ছে? কোনটি হৃদরোগের জন্য বেশি ক্ষতিকর। আসুন জেনে তা নেওয়া যাক- চিনি যেভাবে হার্টের ক্ষতি করে অতিরিক্ত চিনি খাওয়ার ফলে শরীরে নানা সমস্যা তৈরি হয়। প্রথমেই রক্তে ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা বেড়ে যায়, যা একটি ধরনের ক্ষতিকর চর্বি। একই সঙ্গে, ভালো কোলেস্টেরলের মাত্রা হ্রাস পায়, যা হৃদরোগ থেকে রক্ষা করার ক্ষমতা কমিয়ে দেয়। ফলে উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা শুরু হতে পারে এবং প্রদাহ বৃদ্ধির ঝুঁকিও তৈরি হয়। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই চর্বি ধমনীগুলোতে জমে যায়, যা হৃদপিণ্ডে চাপ সৃষ্টি করে এবং দীর্ঘমেয়াদে হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়। এছাড়া অতিরিক্ত চিনি দেহে ফ্যাটের পরিমাণ বাড়িয়ে স্থূলতা সৃষ্টি করে এব
আমাদের রান্নাঘরে কিছু খাবারে ক্ষতিকর উপাদান লুকিয়ে থাকে, যা আমরা সাধারণত অস্বাস্থ্যকর বলেও মনে করি না। অথচ এই খাবারগুলো প্রতিদিন পাতে আসে এবং তার মধ্যে লুকিয়ে থাকে হার্টের সবচেয়ে বড় শত্রু।
হার্টের স্বাস্থ্য নিয়ে যখন আলোচনা হয়, তখন রান্নাঘরের লবণ ও চিনি প্রায়ই কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হয়। তাই চিনি ও লবণ কীভাবে রক্তচাপ, প্রদাহ, ধমনীর স্বাস্থ্য এবং দীর্ঘমেয়াদী হৃদরোগের ঝুঁকি প্রভাবিত করে তা গুরুত্বের সঙ্গে দেখা প্রয়োজন।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে? কোনটি হৃদরোগের জন্য বেশি ক্ষতিকর। আসুন জেনে তা নেওয়া যাক-
চিনি যেভাবে হার্টের ক্ষতি করে
অতিরিক্ত চিনি খাওয়ার ফলে শরীরে নানা সমস্যা তৈরি হয়। প্রথমেই রক্তে ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা বেড়ে যায়, যা একটি ধরনের ক্ষতিকর চর্বি। একই সঙ্গে, ভালো কোলেস্টেরলের মাত্রা হ্রাস পায়, যা হৃদরোগ থেকে রক্ষা করার ক্ষমতা কমিয়ে দেয়।
ফলে উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা শুরু হতে পারে এবং প্রদাহ বৃদ্ধির ঝুঁকিও তৈরি হয়। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই চর্বি ধমনীগুলোতে জমে যায়, যা হৃদপিণ্ডে চাপ সৃষ্টি করে এবং দীর্ঘমেয়াদে হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়।
এছাড়া অতিরিক্ত চিনি দেহে ফ্যাটের পরিমাণ বাড়িয়ে স্থূলতা সৃষ্টি করে এবং নন-অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভারের ঝুঁকি বাড়ায়। এটি টাইপ ২ ডায়াবেটিসের সম্ভাবনাও তৈরি করে।
আমেরিকান জার্নাল অব ক্লিনিক্যাল নিউট্রিশনে প্রকাশিত একটি গবেষণায় দেখা গেছে, প্রাপ্তবয়স্ক যারা বেশি চিনি-মেশানো পানীয় পান করেন, তাদের উচ্চ রক্তচাপ ও হৃদরোগের ঝুঁকি অন্যদের তুলনায় প্রায় ১২% বেশি থাকে।
লবণ যেভাবে হার্টের ক্ষতি করে
অতিরিক্ত লবণ শরীরের উপর অন্য ধরনের ক্ষতি করে। বেশি লবণ খেলে দেহে পানির পরিমাণ বেড়ে যায়, যার ফলে রক্তনালির ভিতরে চাপ বৃদ্ধি পায়। প্রাথমিকভাবে এটি রক্তচাপের মাধ্যমে হৃদরোগের প্রভাব ফেলে। উচ্চ পরিমাণ সোডিয়াম গ্রহণ উচ্চ রক্তচাপের অন্যতম প্রধান কারণ, যা বিশ্বজুড়ে হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকের ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়িয়ে তোলে।
দীর্ঘদিন ধরে বেশি লবণ গ্রহণ করলে রক্তনালি শক্ত হয়ে যায়, ধমনীর দেয়াল ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং হার্টকে আরও বেশি পরিশ্রম করতে হয়। এই অতিরিক্ত চাপই দীর্ঘমেয়াদে হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়।
ইউকে বায়ো ব্যাংক বিশ্লেষণের গবেষণায় দেখা গেছে, অতিরিক্ত লবণ গ্রহণ হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়। বিশেষ করে বয়স্ক ব্যক্তি, যাদের আগে থেকেই উচ্চ রক্তচাপ আছে বা যাদের বিপাকীয় সমস্যা রয়েছে-তাদের ক্ষেত্রে এই প্রভাব সবচেয়ে বেশি দেখা যায়।
উচ্চ মাত্রায় চিনি এবং লবণ উভয়ই হার্টের জন্য ক্ষতিকারক। তাই এগুলো নিয়ন্ত্রণে রাখা প্রয়োজন। খাবারের স্বাদ বজায় রেখেও দেহকে সুস্থ রাখার সবচেয়ে সহজ উপায় হলো প্রক্রিয়াজাত খাবার কম খাওয়া, বাড়িতে তৈরি খাবার অগ্রাধিকার দেওয়া এবং চিনি ও লবণের মাত্রা সচেতনভাবে নিয়ন্ত্রণ করা।
সূত্র: দ্য টাইমস অব ইন্ডিয়া, হার্ভার্ড হেলথ , আমেরিকান জার্নাল অব ক্লিনিক্যাল নিউট্রিশন ও অন্যান্য
আরও পড়ুন:
পালং শাক খাওয়া এড়িয়ে চলবেন যারা
কাঁচা সবজি নাকি রান্না? কোনটি বেশি পুষ্টিকর
এসএকেওয়াই/জেআইএম
What's Your Reaction?