শীতকালে সাইনোসাইটিস এর সমস্যা বাড়ে কেন? জানুন প্রতিকার

ডা. তারেক মোহাম্মদ শীতকালে ঠান্ডা ও বাতাসে ধুলাবালির পরিমাণ বেড়ে যায়। ফলে অনেকের মধ্যে সাইনোসাইটিস বা সাইনাস প্রদাহের সমস্যা দেখা দেয়। মাথাব্যথা, নাক বন্ধ থাকা, মুখে চাপ অনুভব, গলা ব্যথা ও শ্বাসকষ্ট এ রোগের সাধারণ লক্ষণ। শীতে বাতাসের আর্দ্রতা কমে যায় এবং ধুলাবালি বাড়ে, যা নাকের শ্লেষ্মা ঝিল্লিকে শুষ্ক করে তোলে ও প্রদাহ বাড়ায়। বিশেষ করে যাদের অ্যালার্জির প্রবণতা আছে, তাদের ক্ষেত্রে সমস্যা আরও জটিল হয়ে ওঠে। শীতে সাইনোসাইটিসের সমস্যা বাড়ে কেন? শীতকালে সাইনাসের সমস্যা ঘন ঘন হওয়ার পেছনে বেশ কিছু কারণ রয়েছে। যেমন- ১. শুষ্ক বাতাস: শীতকালে বাতাসে আর্দ্রতা কমে যায়। শুষ্ক বাতাস নাকে প্রবেশ করলে নাকের ভেতরের শ্লেষ্মা ঝিল্লি শুকিয়ে যায়। এতে শ্লেষ্মা ঘন হয়ে যায় এবং সাইনাসের পথ বন্ধ হয়ে ব্যাকটেরিয়ার বংশবৃদ্ধির সুযোগ তৈরি হয়। ২. ঠান্ডা ও ফ্লু-এর প্রকোপ: শীতকালে সাধারণ ঠান্ডা লাগা এবং ফ্লু ভাইরাস বেশি ছড়ায়। এই ভাইরাল সংক্রমণগুলোই প্রায়শই সাইনাসের প্রদাহ বা ইনফেকশনের প্রধান কারণ। ৩. ঘরের ভেতরের উষ্ণতা পরিবর্তন: ঘরের ভেতরে হিটার বা রুম হিটার ব্যবহার করলে বাতাস আরও শুষ্ক হয়ে যায়। এতে নাকের ভেতর

শীতকালে সাইনোসাইটিস এর সমস্যা বাড়ে কেন? জানুন প্রতিকার

ডা. তারেক মোহাম্মদ
শীতকালে ঠান্ডা ও বাতাসে ধুলাবালির পরিমাণ বেড়ে যায়। ফলে অনেকের মধ্যে সাইনোসাইটিস বা সাইনাস প্রদাহের সমস্যা দেখা দেয়।

মাথাব্যথা, নাক বন্ধ থাকা, মুখে চাপ অনুভব, গলা ব্যথা ও শ্বাসকষ্ট এ রোগের সাধারণ লক্ষণ। শীতে বাতাসের আর্দ্রতা কমে যায় এবং ধুলাবালি বাড়ে, যা নাকের শ্লেষ্মা ঝিল্লিকে শুষ্ক করে তোলে ও প্রদাহ বাড়ায়। বিশেষ করে যাদের অ্যালার্জির প্রবণতা আছে, তাদের ক্ষেত্রে সমস্যা আরও জটিল হয়ে ওঠে।

শীতে সাইনোসাইটিসের সমস্যা বাড়ে কেন?

শীতকালে সাইনাসের সমস্যা ঘন ঘন হওয়ার পেছনে বেশ কিছু কারণ রয়েছে। যেমন-

১. শুষ্ক বাতাস: শীতকালে বাতাসে আর্দ্রতা কমে যায়। শুষ্ক বাতাস নাকে প্রবেশ করলে নাকের ভেতরের শ্লেষ্মা ঝিল্লি শুকিয়ে যায়। এতে শ্লেষ্মা ঘন হয়ে যায় এবং সাইনাসের পথ বন্ধ হয়ে ব্যাকটেরিয়ার বংশবৃদ্ধির সুযোগ তৈরি হয়।

২. ঠান্ডা ও ফ্লু-এর প্রকোপ: শীতকালে সাধারণ ঠান্ডা লাগা এবং ফ্লু ভাইরাস বেশি ছড়ায়। এই ভাইরাল সংক্রমণগুলোই প্রায়শই সাইনাসের প্রদাহ বা ইনফেকশনের প্রধান কারণ।

৩. ঘরের ভেতরের উষ্ণতা পরিবর্তন: ঘরের ভেতরে হিটার বা রুম হিটার ব্যবহার করলে বাতাস আরও শুষ্ক হয়ে যায়। এতে নাকের ভেতরের মিউকোসিলিয়ারি ক্লিয়ারেন্স প্রক্রিয়া ব্যাহত হয়।

৪. অ্যালার্জি উদ্দীপক: শীতকালে দরজা-জানালা বন্ধ থাকায় ধুলাবালি, মাইট এবং পোষা প্রাণীর লোম ঘরের ভেতরে বেশি জমা হয়। যারা অ্যালার্জিক সাইনোসাইটিসে ভোগেন, তাদের জন্য এটি সমস্যা বাড়িয়ে দেয়।

সাইনোসাইটিস নিয়ন্ত্রণে ঘরোয়া ব্যবস্থা

দৈনন্দিন জীবনে কিছু সহজ পদক্ষেপের মাধ্যমে শীতকালে সাইনোসাইটিসের কষ্ট অনেকটাই কমাতে পারেন। যেমন-

>> বাষ্প বা ভাপ নেওয়া

গরম পানিতে মেন্থল বা ইউক্যালিপটাস মিশিয়ে দিনে ২-৩ বার ভাপ নিন। এটি ঘন শ্লেষ্মাকে পাতলা করতে এবং বন্ধ নাক খুলতে দারুণ সাহায্য করে।

>> নাকের সেলাইন পানি দিয়ে ধোয়া

নিয়মিত লবণ-পানি বা বাজারের সেলাইন দ্রবণ (প্যাকেটজাত খাবার স্যলাইন) দিয়ে নাক ধোয়া সাইনাস পরিষ্কার রাখতে এবং প্রদাহ কমাতে খুবই কার্যকর।

>> পর্যাপ্ত জলীয় পদার্থ গ্রহণ

প্রচুর পরিমাণে উষ্ণ পানি, স্যুপ বা হারবাল চা পান করুন। এটি শরীরকে আর্দ্র রাখে এবং শ্লেষ্মাকে পাতলা হতে সাহায্য করে।

>> ঘরের আর্দ্রতা বজায় রাখা

শোবার ঘরে হিউমিডিফায়ার ব্যবহার করে বাতাসের আর্দ্রতা বাড়াতে পারেন। এটি নাকের পথকে শুষ্ক হওয়া থেকে রক্ষা করবে।

>> উষ্ণতা বজায় রাখা

ঠান্ডা বাতাস থেকে নিজেকে বাঁচান এবং মাথা, কান ও গলা গরম কাপড়ে ঢেকে রাখুন।

যদি সাইনোসাইটিসের উপসর্গ (তীব্র ব্যথা, জ্বর, চোখ ফুলে যাওয়া) ১০ দিনের বেশি স্থায়ী হয় বা খারাপ হতে থাকে, তবে অবশ্যই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

লেখক: ডা. তারেক মোহাম্মদ
নাক, কান, গলা বিশেষজ্ঞ ও সার্জন
সহকারী অধ্যাপক, পপুলার মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল

আনিসুল ইসলাম নাঈম/এএমপি/জেআইএম

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow