‘সব পুরুষ এক নয়’

রাত তখন প্রায় ১২টা। রাইড শেয়ারিংয়ে বাসায় ফিরছিলেন তরুণী। হঠাৎ নির্জন সড়কে বিকল হয়ে যায় বাইক। তরুণীর ফোনে চার্জ ছিল মাত্র ছয় শতাংশ, সামনে তখনো ৩৮ কিলোমিটারের পথ বাকি। এমন পরিস্থিতিতে যে কারও গা ছমছম করে ওঠা স্বাভাবিক। কিন্তু সেই মুহূর্তে বাইকচালক যা করলেন, তা হয়ে উঠলো মানবিকতা ও দায়িত্বশীলতার এক অনন্য উদাহরণ। ঘটনাটি শেয়ার করেছেন ভারতের বেঙ্গালুরুর বাসিন্দা আরোহী মানে নামে এক তরুণী। ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করা একটি ছোট ভিডিওর ক্যাপশনে তিনি লেখেন, ‘ভাবলাম সাধারণ এক রাতের রাইড, কিন্তু সেটা এমন এক ঘটনা হয়ে গেলো যা কোনোদিন ভুলতে পারবো না।’ আরোহী জানান, রাত ১১টা ৪৫ মিনিটে শুরু হওয়া রাইডে তিনি বাইকচালককে বলেছিলেন, ‘ভাই, একটু দ্রুত যাওয়া যাবে?’ বাইক চলছিল নির্জন রাস্তা ধরে। কিন্তু কয়েক কিলোমিটার যাওয়ার পর হঠাৎ একটি গর্তে পড়ার ঝাঁকুনিতে বাইকের চেইন ছিঁড়ে যায়। অত রাতে আশপাশে কোনো দোকান বা আলো দেখা যাচ্ছিল না, ছিল কেবলই অন্ধকার। ফোনের ব্যাটারিও তখন শেষের পথে। এমন সময় রাইডার শান্তভাবে ওই তরুণীকে বলেন, ‘চিন্তা করবেন না, আমি ঠিক করবো। আমি আপনাকে বাসায় পৌঁছে দেবো।’ আরোহীর ভাষ্যমতে, ‘এই কথাটি ছিল সরল, কিন্

‘সব পুরুষ এক নয়’

রাত তখন প্রায় ১২টা। রাইড শেয়ারিংয়ে বাসায় ফিরছিলেন তরুণী। হঠাৎ নির্জন সড়কে বিকল হয়ে যায় বাইক। তরুণীর ফোনে চার্জ ছিল মাত্র ছয় শতাংশ, সামনে তখনো ৩৮ কিলোমিটারের পথ বাকি। এমন পরিস্থিতিতে যে কারও গা ছমছম করে ওঠা স্বাভাবিক। কিন্তু সেই মুহূর্তে বাইকচালক যা করলেন, তা হয়ে উঠলো মানবিকতা ও দায়িত্বশীলতার এক অনন্য উদাহরণ।

ঘটনাটি শেয়ার করেছেন ভারতের বেঙ্গালুরুর বাসিন্দা আরোহী মানে নামে এক তরুণী। ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করা একটি ছোট ভিডিওর ক্যাপশনে তিনি লেখেন, ‘ভাবলাম সাধারণ এক রাতের রাইড, কিন্তু সেটা এমন এক ঘটনা হয়ে গেলো যা কোনোদিন ভুলতে পারবো না।’

আরোহী জানান, রাত ১১টা ৪৫ মিনিটে শুরু হওয়া রাইডে তিনি বাইকচালককে বলেছিলেন, ‘ভাই, একটু দ্রুত যাওয়া যাবে?’ বাইক চলছিল নির্জন রাস্তা ধরে। কিন্তু কয়েক কিলোমিটার যাওয়ার পর হঠাৎ একটি গর্তে পড়ার ঝাঁকুনিতে বাইকের চেইন ছিঁড়ে যায়। অত রাতে আশপাশে কোনো দোকান বা আলো দেখা যাচ্ছিল না, ছিল কেবলই অন্ধকার। ফোনের ব্যাটারিও তখন শেষের পথে।

এমন সময় রাইডার শান্তভাবে ওই তরুণীকে বলেন, ‘চিন্তা করবেন না, আমি ঠিক করবো। আমি আপনাকে বাসায় পৌঁছে দেবো।’ আরোহীর ভাষ্যমতে, ‘এই কথাটি ছিল সরল, কিন্তু ভীষণ আশ্বাসের।’

 
 
 
View this post on Instagram

A post shared by Asha Mane (@ashamane_)

হাল না ছেড়ে বাইকচালক হেডলাইট আর তার মোবাইলের টর্চের আলোয় বসে যান চেইন ঠিক করতে। যাত্রীও পাশে দাঁড়িয়ে টর্চ ধরে সাহায্য করেন। ১০ মিনিটের মধ্যেই ঠিক করেন চেইন। না ছিল কোনো রাগ, না ছিল অভিযোগ—ছিল কেবল দায়িত্ববোধ ও পরস্পরের প্রতি বিশ্বাস।

শেষ পর্যন্ত রাত ১টার দিকে নিরাপদে বাসায় পৌঁছান আরোহী। ফিরে এসে তিনি লেখেন, ‘হাজারটা নেতিবাচক অভিজ্ঞতার ভিড়ে কিছু কিছু মুহূর্ত রয়েছে, যা আবার বিশ্বাস জাগায়—মানুষের প্রতি, নিরাপত্তার প্রতি, মানবিকতার প্রতি।’

তিনি রাইড শেয়ারিং কোম্পানি র‍্যাপিডোকে ট্যাগ করে লেখেন, এমন রাইডাররাই নারীদের জন্য রাতের যাত্রাকে নিরাপদ ও বিশ্বাসযোগ্য করে তোলেন। তাদের প্রাপ্য সম্মান দেওয়া উচিত।

র‍্যাপিডোর অফিসিয়াল পেজও পোস্টটিতে আবেগপূর্ণ মন্তব্য করে লিখেছে, ‘সব নায়ক কেপ (সুপারহিরোদের কাঁধে ঝোলানো কাপড়) পরে আসে না। কেউ কেউ রাত ১২টা ৫০ মিনিটে সড়কে বসে চেইন ঠিক করে আপনাকে নিরাপদে বাসায় পৌঁছে দেয়।’

সোশ্যাল মিডিয়ায় বহু মানুষ পোস্টটি শেয়ার করে প্রশংসা করেছেন। কেউ লিখেছেন, ‘সব পুরুষ এক নয়। আমি নিজেও এমন অভিজ্ঞতা পেয়েছি।’ আবার কেউ মন্তব্য করেছেন, ‘আপনার ধৈর্য আর তাঁর দায়িত্ববান আচরণ— দুজনের মানবিক সিদ্ধান্তই এই রাতটিকে সুন্দর করেছে।’

আরেকটি মন্তব্য ছিল, ‘এমন মানুষরাই এখনো আমাদের আশ্বস্ত করেন যে, পৃথিবীতে মানবতা বেঁচে আছে।’

সূত্র: দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস
কেএএ/

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow