হোক প্রতিবাদ

1 month ago 23

প্রযুক্তির উৎকর্ষতা দেখে আমি একটা সময় ভাবতাম যে দিনে দিনে পৃথিবী থেকে বৈষম্য বিদায় নেবে। কারণ তখন মানুষের কাছে সবরকমের তথ্য সহজলভ্য হয়ে যাবে। মানুষ সহজেই ভালো মন্দের বিচার করে সিদ্ধান্ত নিতে পারবে। কিন্তু আমি আসলে কতটা ভুল ছিলাম সেটা এখনকার বিশ্বের দিকে তাকালেই বোঝা যায়। এখনও পৃথিবীজুড়ে চলছে বৈষম্যমূলক যুদ্ধ। সেখানে জাতপাতের নামে, ধর্মের নামে মারা হচ্ছে নিষ্পাপ মানুষ।

সবচেয়ে দুঃখজনক বিষয় হলো এর থেকে রেহাই পাচ্ছে না শিশুরাও। এই নির্বিচারে মানুষ মারার একটা নামও আছে- জেনোসাইড। আসলে একটিমাত্র শব্দ দিয়ে বিষয়টার ভয়াবহতা বোঝানো সম্ভব নয়। আর এখন গণমাধ্যমগুলো যথেষ্ট স্বাধীন হলেও আসলেই কি স্বাধীন। তবুও গণমাধ্যমের ফাঁক গলে যে খবরটুকু আমাদের সামনে এসে পড়ে সেটুকু পড়লেই গায়ে কাটা দেয়।

ফিলিস্তিনের মানুষের ওপর অত্যাচারের ইতিহাস অনেক পুরোনো। সেই ইতিহাস সবারই কম বেশি জানা। তবুও একজন ভুক্তভোগী বা প্রত্যক্ষদর্শীর বয়ানে কিছুটা জেনে নেওয়া যাক। এইবারের গণহত্যা শুরু হবার পর একটা পত্রিকার অনলাইন ভার্সনে ‘দে কলড মি লায়োনেস’ নামের একটা বইয়ের অনুবাদ ‘ওরা আমায় সিংহ বলতো’ প্রকাশিত হচ্ছিল।

হোক প্রতিবাদ

সেখান থেকেই জানলাম আহেদ তামিমি ফিলিস্তিনি মুক্তিযোদ্ধা। তার বাবা প্যালেস্তাইনের মুক্তি আন্দোলনের শরিক। মাত্র ১৬ বছর বয়সে ইজরায়েলের আগ্রাসনের প্রতিবাদের শাস্তি হিসেবে তাকে তুলে নিয়ে যায় সেনা। তামিমিকে অবশ্য বিশ্ব চিনেছে অনেক আগেই। ভাইয়ের গ্রেফতারির সময় তর্জনি তুলে ইজরায়েলি মিলিটারির সঙ্গে বাহাসে জড়িয়ে পড়লে সেই ছবি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে প্রচারিত হয়। তখন তার বয়স এগারো।

এর তিন বছর বাদে পাথর ছোড়ার অপরাধে ইজরায়েলি বাহিনী তার ভাইকে ফের বাড়ি থেকে তুলে নিতে গেলে তাকে এক সেনাকর্তার সঙ্গে ধস্তাধস্তিতে জড়িয়ে পড়তে দেখা যায়। জ্ঞান হওয়া ইস্তক প্রিয়জনদের অত্যাচারিত হতে দেখা মেয়েটির সশস্ত্র সেনাকর্তাকে চড় কষাতে হাত কাঁপেনি। দীর্ঘসময় জিজ্ঞাসাবাদের সেলে বসে যখন মূত্রথলি ফেঁটে যাওয়ার জোগাড়, অথচ তাক করে রাখা ক্যামেরার ভয়ে বাথরুমে যাওয়া যাচ্ছে না, তখন সে সিদ্ধান্ত নেয়, বিশ্বকে সব জানিয়ে দেবে সে।

এই লেখা তামিমির মতো কয়েক লাখ ফিলিস্তিনির সঙ্গে হওয়া চরম অন্যায় আর তামিমিদের দেশপ্রেমের দলিল। দেনা তাকরুরি এই লেখায় তামিমির সই। দেনা ফিলিস্তানি শরণার্থীর সন্তান। বড় হয়েছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। বারবার ফিরে গেছেন বাপ মায়ের ভিটেয়।

হোক প্রতিবাদ

আমি বড় হয়েছি ওয়েস্ট ব্যাঙ্কের ছোট্ট গ্রাম নবি সলেহ-তে। প্যালেস্টাইনের সাংস্কৃতিক অর্থনৈতিক প্রাণকেন্দ্র, প্রবল জীবন্ত আর সম্ভাবনাময় শহর রামাল্লাথেকে গাড়িতে নবি সলেহ পৌঁছাতে ২৫ মিনিট সময় লাগে। নবি সলেহ অবশ্য রামাল্লার ঠিক উল্টো, ভীষণ ছিমছাম আর সাধারণ। আমাদের গ্রামে একটা স্কুল, একটা মসজিদ, একটা বাজার, একটাই গ্যাস স্টেশন।

তবে সবচেয়ে বড় কথা,আমাদের আছি আমরা, অনেকে। এই গ্রামের ছ’শো বাসিন্দা পরস্পরের সঙ্গে রক্তের সম্পর্কে বা বৈবাহিক সম্পর্কে জুড়ে আছে, সকলেই বৃহত্তর যৌথ তামিমি পরিবারের অংশ। আমার ছাত্রজীবনের সহপাঠী বন্ধুরা আদতে ছিল আমার তুতো ভাই-বোন। এটা একটা আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে থাকা গোষ্ঠী যেখানে একে অন্যের খোঁজ নেওয়া রোজের রুটিন। এমনটাই চলে আসছে কয়েক শতক ধরে।

একবার দেখলেই নবি সলেহকে মনে হবে ছায়া সুনিবিড় শান্তির নীড়। রমণীয়, সুখে পরিপূর্ণ একটা গ্রাম, বিন্দু বিন্দু অসংখ্য জলপাইগাছকে আশ্রয় দিয়েছে যে পাহাড়ের সারি, যে জলপাইবনে প্রায়শই বুনো ঘোড়া আর গাধা চড়ে বেড়ায় - তার ঠিকানাও এই গ্রাম। এখানে অবাধ সূর্যাস্তের লাল বেগুনি সোনালি রঙের ম্যাজিক দেখা যায়। এখানে ছোটরা মুক্তভাবে খেলে বেড়ায়, এ বাড়ি ও বাড়ি দৌড়োদৌড়ি চলতেই থাকে, বড়রা এইসব খুদেদের মুখে ঘরোয়া খাবার ঠুসে দেয়।

হোক প্রতিবাদ

কিন্তু প্রাথমিক ছবিটা আপনাকে পুরো গল্পটা বলবে না কখনও। গোটা গল্পটা জানতে আপনাকে আমাদের গ্রামের ওই মূল রাস্তাটায় তাকাতে হবে, চোখ রাখতে হবে উপত্যকার অন্য প্রান্তের পাহাড়গুলোর দিকে।

ওদিকেই ইজরায়েলি ইহুদি হালামিশদের প্রাচীর ঘেরা জনবসতি-লাল টালির সুসজ্জিত বাডি, চকচকে বারান্দা, খেলার মাঠ, সুইমিং পুল। হালামিশরা চিরকাল এখানে ছিল না। ১৯৭৭ সাল নাগাদ বেআইনিভাবে ওরা আমাদের গ্রামের জমি দখল করে। আন্তর্জাতিক আইন উপেক্ষা করে প্যালেস্টাইনে ইজরায়েলিদের গড়ে তোলা কয়েকশো বসতির একটা এটা। এই বসতিগুলোতে মূলত ইজরায়েলি ইহুদিরাই থাকে।

ক্রমেই স্থানীয় ফিলিস্তিনিদের তুলনায় চক্রবৃদ্ধি হারে ওরা সংখ্যায় বাড়তে থাকে। বছরের পর বছর আমরা দেখছি, ইজরাইলের রাষ্ট্রীয় মদতে হালামিশরা আমাদের জমিজিরেত, সম্পদ কেড়ে নিয়ে নিজেদের আস্তানার পরিধি বাড়িয়ে চলেছে। এই নবী সালেহ আসলে প্যালেস্টাইনের একটা ক্ষুদ্রতম সংস্করণ। গত এক শতক ধরে ফিলিস্তিনিরা তাদের জমি কেড়ে নেওয়ার জিওনিস্ট প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে লড়ছে।

১৯৪৭ সাল নাগাদ ব্রিটিশরা ঠিক করলো- অনেক হয়েছে, আর নয়। দায় ঝেড়ে প্যালেস্টাইন সমস্যার ভার তারা রাষ্ট্রপুঞ্জের হাতে তুলে দেয়। ১৯৪৭ সাল নাগাদ ব্রিটিশরা ঠিক করলো- অনেক হয়েছে, আর নয়। দায় ঝেড়ে প্যালেস্টাইন সমস্যার ভার তারা রাষ্ট্রপুঞ্জের হাতে তুলে দেয়। এই দেশভাগের ফলে প্যালেস্টাইনের ঐতিহাসিক ভূমির ৫৫ শতাংশই পেল ইহুদিরা আর ৪২ শতাংশ থাকল আরব রাষ্ট্র প্যালেস্টাইনের হাতে।

হোক প্রতিবাদ

যদিও তখন পর্যন্ত এই দেশের জনসংখ্যার ৬৭ শতাংশই ছিল ফিলিস্তানি। স্থানীয় বেশিরভাগ জমিই ছিল তাদের। আর জনসংখ্যার ৩৭ শতাংশ এবং জমির ৭ শতাংশ ছিল ইহুদিদের হাতে। ফলে প্যালেস্তাইনের ভূমিপুত্ররা এই পরিকল্পনা কিছুতেই মানতে চাইল না। ১৯৪৮ সালের ১৪ মে ইজরায়েল রাষ্ট্রগঠনের কথা ঘোষণা করলো। এই রাষ্ট্র দখল করার জন্য সেদিন নৃশংসভাবে বহু ফিলিস্তানিকে উচ্ছেদ করা হয়েছিল।

ফিলিস্তিনিরা বেদনা ভরে আজও এই ঘটনাকে ‘আল নাকাবা’ বা ‘বিপর্যয়’ হিসেবে স্মরণ করে। নিজেদের রাষ্ট্র গঠনের জন্য ইজরায়েল সাড়ে ৭ লাখ ফিলিস্তিনিকে নিজেদের ঘর ছাড়তে বাধ্য করেছিল, ৪০০-র বেশি ফিলিস্তিনি গ্রাম নির্মূল করে দিয়েছিল।
এই বইয়ের নামটা জানার পরই অনলাইনে অর্ডার করলাম যেন আমাদের চৌদ্দ বছরের মেয়েটা এই বীভৎস গণহত্যা বিষয়ের ইতিহাস সম্মন্ধে কিছুটা ধারণা পায়।

এরপর বইটা হাতে পাবার পর তাকে কিছুটা ধারণা দিলাম। একইসাথে নয় বছরের ছেলেকেও বললাম। বললাম আমরা আমাদের জায়গা থেকে এর প্রতিবাদ করবো যেভাবে সবসময়ই আমরা প্রতিবাদ করে থাকি। এর আগেও আমরা ধর্ষণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছিলাম। গাজীপুর জেলা পরিষদের নির্বাহী প্রকৌশলী দেলোয়ার ভাই খুন হবার পরও প্রতিবাদ জানিয়েছিলাম।

বিশ্বের যেকোনো অন্যায় অবিচারের বিরুদ্ধে এভাবেই আমরা প্রতিবাদ জানাই। পাশাপাশি যদি কোনো গণসমাবেশ হয় সেখানেও যোগ দিই। বাচ্চাদের ছোট বেলা থেকেই পৃথিবী সম্মন্ধে, বাস্তবতা সম্মন্ধে একটা ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করি। এবারও সেটারই চেষ্টা করলাম।

হোক প্রতিবাদ

আমি ব্যক্তিগতভাবে বিশ্বাস করি ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে আমরা সবাই একই পৃথিবীর বাসিন্দা। তাই কারো ওপরে আঘাত করা মানে আসলে নিজেকেই আঘাত করা। কাউকে অন্যায়ভাবে হত্যা করা মানে নিজেকেই হত্যা করা। আমি তাই অফিস থেকে একটা প্ল্যাকার্ড প্রিন্ট করে নিয়ে আসলাম যাতে লেখা- উই আর শেয়ারিং দ্য সেম ওয়ার্ল্ড হেন্স দ্য সেম ওন্ড।

সাথে স্টপ জেনোসাইড লেখা আরও কিছু প্ল্যাকার্ড। এরপর সেগুলো হাতে নিয়ে আমি আর ছেলে দাঁড়ালাম আর মেয়ে আমাদের ছবি তুলে দিল। সেই ছবি সাথে সাথে ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করে দিলাম যেন অন্যরাও উৎসাহিত হয়।

ফিলিস্তিনে এবারের গণহত্যা শুরু হবার পর একটা বিষয় আমাকে খুবই আশাবাদী করেছে। ছাত্রদের আমি বলি একটা দেশের বিবেক সর্বোপরি পৃথিবীর বিবেক। আমাদের দেশের ইতিহাস বিবেচনায় দেখি প্রত্যেকটা আন্দোলন সংগ্রামে তাদের সরব উপস্থিতি। ঘাতকের অস্ত্রের সামনে বুক উঁচিয়ে দাড়িয়ে প্রতিবাদ করার সাহস মনে হয় অন্যকোনো শ্রেণি পেশার মানুষের মধ্যে এতটা দেখা যায় না।

তাদের হাতে অস্ত্র নেয় কিন্তু তাদের বুকে আছে হিমালয়ের মতো উঁচু সাহস। দরকার হলে নিজের জীবন দিতেও তারা সদা প্রস্তুত। তাদের জীবনের বিনিময়ে জেগে ওঠে সাধারণ মানুষ, শুরু হয় গণবিস্ফোরণের। ফিলিস্তিন গণহত্যার কুশীলব আমেরিকার ছাত্ররা তাই জেগে উঠেছে। তারা ঝুঁকি নিয়ে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিবাদ জানিয়ে যাচ্ছে।

তাদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ থেকে শুরু করে সরকার বিভিন্ন ধরনের অন্যায় ব্যবস্থা নিয়েও থামাতে পারছে না। তাদের বিবেক জেগে উঠেছে। এরপর সে জাগরণের ঢেউ লেগেছে সারা বিশ্বে। অস্ট্রেলিয়ার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররাও আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। রাজনীতির জটিল মারপ্যাঁচ ছাপিয়ে টম ওডেলের প্রেমের গান ‘অ্যানাদার লাভ’ হয়ে ওঠে অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার অস্তিত্বের জানান দেওয়ার সংগীত।

‘এবং কেউ যদি তোমাকে আঘাত দেয়, আমি লড়তে চাই
কিন্তু আমার হাত ভেঙে দেওয়া হয়েছে বারবার
তাই আমি কণ্ঠ চালাব, দেখাব ধৃষ্টতা’

মডেলদের দুনিয়ায় দুই জগৎখ্যাত বোন জিজি হাদিদ ও বেলা হাদি। শুরু থেকেই দুজন ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি হামলার তীব্র সমালোচনা করে এসেছেন। তাছাড়াও ফিলিস্তিনে মানবিক কাজ করছে এ রকম চারটি আন্তর্জাতিক সংস্থাকে ১০ লাখ ডলার অনুদান দিয়েছেন। এছাড়াও ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার প্রতীক কেফিয়াহ স্কার্ফ দিয়ে বানানো পোশাকে কানে বেলা হাদিদ ফিলিস্তিনের পক্ষে নিজের শক্ত অবস্থানের বিষয়ে জানান দিয়েছেন।

অস্কারজয়ী অস্ট্রেলিয়ান হলিউড অভিনেত্রী কেট ব্লানচেট কানের লালগালিচায় বিশ্বকে জানান দিয়েছেন, তিনিও ফিলিস্তিনের পক্ষে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) দিয়ে তৈরি ছবি ‘অল আইস অন রাফা’ সামাজিকযোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। সেই ছবিতে অসংখ্য তাঁবু দিয়ে গড়ে তোলা বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের আশ্রয়শিবিরের দৃশ্য ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। পূর্বঘোষণা অনুযায়ী ইউরোপের তিন দেশ—আয়ারল্যান্ড, নরওয়ে ও স্পেন ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দিয়েছে।

আমি স্বপ্ন দেখি ভবিষ্যতের পৃথিবী হবে বৈষম্যহীন। যেখানে সবাই একটা একান্নবর্তী পরিবারের মতো করে বসবাস করবে। আর এক একটা দেশ হবে সেই পরিবারের সদস্য। পরিবার সদস্যদের বিপদে আপদে সবাই সবার পাশে এসে দাঁড়াবে। কেউই একা একা ভালো থাকার চেষ্টা না করে সবাইকে নিয়ে ভালো থাকার চেষ্টা করবে। কারণ অন্য একজন খারাপ থাকলে আজ হোক কাল হোক সেই হাওয়া এসে অন্যজনকে প্রভাবিত করবেই।

পৃথিবীর নিয়ন্ত্রণ থাকবে পৃথিবীর বিবেক ছাত্রদের হাতে। তারা বৃদ্ধ, ঝানু রাজনীতিবিদদের অবসরে পাঠিয়ে দেবে। তাদের বলা হবে আরাম করতে। বিশ্বের শান্তি নষ্ট করতে তাদের আর কষ্ট করতে দেয়া হবে না। ছাত্ররা উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ দেবে কোমলমতি শিশুদের। তারা যদি কোন কারণে তাদের লক্ষ্য থেকে সরে আসে বা সামান্য বিচ্যুতি দেখা দেয় তাহলে এইসব শিশুরা তাদেরকে সঠিক পথ বাতলে দেবে।

সুকান্ত ভট্টাচার্য'র ‘ছাড়পত্র’ কবিতার কিছু লাইন দিয়ে লেখাটা শেষ করতে চাই–

‘এসেছে নতুন শিশু, তাকে ছেড়ে দিতে হবে স্থান;
জীর্ণ পৃথিবীতে ব্যর্থ, মৃত আর ধ্বংসস্তূপ-পিঠে।
চলে যেতে হবে আমাদের।
চলে যাব- তবু আজ যতক্ষণ দেহে আছে প্রাণ
প্রাণপণে পৃথিবীর সরাব জঞ্জাল,
এ বিশ্বকে এ-শিশুর বাসযোগ্য ক’রে যাব আমি-
নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।’

এমআরএম/এমএস

Read Entire Article