প্রশ্ন: অজু করার পর অল্প সময়ের জন্য অজ্ঞান বা অচেতন হলে কি অজু ভেঙে যায়? এ অবস্থায় নামাজ আদায় করলে কি তা শুদ্ধ হবে?
উত্তর: অল্প সময়ের জন্য অজ্ঞান থাকলেও অজু নষ্ট হয়ে যায়। হাসান বসরি (রহ.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, কোনো ব্যক্তি যদি অজ্ঞান হয়ে যায় এবং সে বসা অবস্থায়ও থাকে তাহলেও তার অজু ভেঙে যাবে। (মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা: ২০৯০)
ইবরাহিম নাখঈ (রহ.) বলেন, অজ্ঞান ব্যক্তি জ্ঞান ফিরে পাওয়ার পর পবিত্রতা অর্জনের জন্য অজু করবে। (মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা: ২০৯১)
সুতরাং কেউ যদি অজু করার পর কয়েক মুহূর্তের জন্যও অজ্ঞান হয়, তাহলে তার অজু ভেঙে যাবে এবং ওই অবস্থায় নামাজ আদায় করলে নামাজ শুদ্ধ হবে না। জ্ঞান ফেরার পর কেউ যদি ভুল করে নতুনভাবে অজু না করেই নামাজ আদায় করে, তাহলে অজু করে ওই নামাজ পুনরায় আদায় করতে হবে।
যেসব কারণে অজু ভেঙে যায়
১. পেশাব ও পায়খানার রাস্তা দিয়ে পেশাব, পায়খানা, বাতাস, ক্রিমি ইত্যাদিসহ যে কোনো কিছু বের হলে অজু ভেঙে যায়।
২. শরীরে যে কোনো জায়গা থেকে রক্ত বা পুঁজ বের হয়ে গড়িয়ে পড়লে অজু ভেঙে যায়।
৩. খাবার, পানি, রক্ত বা পিতের পানি মুখ ভরে বমি হলে অজু ভেঙে যাবে। অল্প অল্প করে কয়েক বার যদি বমি হয় এবং সবগুলোর মিলিত পরিমাণ যদি মুখ ভরে কৃত বমির সমান হয়, তাহলেও অজু ভেঙে যায়।
৪. দাঁত বা মাড়ি থেকে অল্প রক্ত বের হলে অজু ভাঙবে না। কিন্তু যদি বেশি রক্ত বের হয়, থুথু ফেললে যদি দেখা যায় থুথুর চেয়ে রক্তের পরিমাণ বেশি, তাহলে অজু ভেঙে যায়।
৫. যৌনাঙ্গ থেকে মযী (অর্থাৎ যৌন উত্তেজনার সময় বীর্য বের হওয়ার আগে সাধারণত যা নির্গত হয়) বের হলে অজু ভেঙে যায়।
৬. নারীদের যৌনাঙ্গ থেকে ইস্তেহাযার রক্ত বের হলে অজু ভেঙে যায়। (হায়েয নেফাস ছাড়া কোনো অসুস্থতার কারণে নারীদের যৌনাঙ্গ থেকে রক্ত বের হলে তাকে ইস্তেহাযা বলা হয়।)
৭. নারীদের স্তন থেকে দুধ ছাড়া অন্য কিছু যেমন রক্ত, পূজ বা শরীরের রস বের হলে অজু ভেঙে যায়।
৮. নারীরা নিজেদের যৌনাঙ্গে আঙুল প্রবেশ করালে অজু ভেঙে যায়।
৯. পেছনের রাস্তা দিয়ে বাতাস বের হতে পারে এমনভাবে ঘুমালে, কিছুক্ষণ বেহুশ থাকলে বা উন্মাদ থাকলে অজু ভেঙে যায়।
১০. নামাজের মধ্যে অট্টহাসি হাসলে অজু ভেঙে যায়।
ওএফএফ