জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় তরুণ প্রজন্মকে সচেতন করতে এবং প্রকৃতিবান্ধব সমাধানের ধারণা ছড়িয়ে দিতে সম্প্রতি ‘বিল্ডিং আ ক্লাইমেট-রেজিলিয়েন্ট বাংলাদেশ: নেচার-বেজড সলিউশনস ফর আ সাস্টেইনেবল ফিউচার’ শীর্ষক এক ভার্চুয়াল কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আর্থহপার্স আয়োজিত এই কর্মশালাটি ছিল তাদের ‘রুটস অ্যান্ড রুটস বাই আর্থহপার্স – লার্নিং ফর দ্য আর্থ’ সিরিজের চতুর্থ পর্ব।
শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) গুগল মিট কনফারেন্স-এর মাধ্যমে অনুষ্ঠিত এই সেশনে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সেন্টার ফর ন্যাচারাল রিসোর্স সেন্টারের ফিল্ড রিসার্চ অফিসার এবং আর্থহপার্স-এর উপদেষ্টা আবিদ হাসান। তিনি তরুণদের মাঝে নেচার-বেজড সলিউশন বা প্রকৃতি-ভিত্তিক সমাধানের ধারণা তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, এই সমাধানগুলো কোনো নতুন কৌশল নয়, বরং পরিবেশের নিজস্ব প্রক্রিয়াকে কাজে লাগিয়ে তার সুরক্ষাকে নিশ্চিত করা।
আবিদ হাসান ব্যাখ্যা করেন, এনবিএস এমন এক ধরনের পদক্ষেপ যা পরিবেশকে সংরক্ষণ, টেকসই ব্যবস্থাপনা এবং পুনরুদ্ধারে সহায়তা করে, একইসাথে মানুষের কল্যাণ নিশ্চিত করে। তিনি ছোট ছোট পরিবর্তনের গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, নদীর তীরে মুর্তা গাছ লাগানো, বাঁশ ব্যবহার করে স্রোত নিয়ন্ত্রণ, কিংবা সাগরতীরে ব্লক বসানোর মতো পরিবেশবান্ধব অনুশীলনগুলো নদী ও মাটির ক্ষয়রোধে কার্যকরী ভূমিকা রাখতে পারে। এই ধরনের ব্যবস্থাগুলো কেবল পরিবেশকেই রক্ষা করে না, বরং মানুষের আর্থ-সামাজিক ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রেও ইতিবাচক পরিবর্তন নিয়ে আসে। এছাড়াও, ফ্লাডপ্লেইন এগ্রিকালচার, মিক্সড এগ্রোফরেস্ট্রি, ওয়েটল্যান্ড কনজারভেশন, এবং আরবান গ্রিন ইনফ্রাস্ট্রাকচার-এর মতো উদ্ভাবনী পদ্ধতিগুলো পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখতে সহায়তা করে।
কর্মশালায় অংশ নেওয়া বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আদিব বলেন, শুধুমাত্র আমাদের চিন্তার পরিবর্তন ঘটিয়ে আমরা পরিবেশ ও পৃথিবীর জন্য অনেক কার্যকর পদক্ষেপ নিতে পারি তা আজকের সেশন থেকে খুব তথ্যবহুলভাবে জানতে পারলাম।”
আর্থহপার্স-এর প্রতিষ্ঠাতা এবং সভাপতি যারিন তাসনিম বলেন, এই আয়োজন তরুণদের পরিবেশের প্রতি চিন্তাভাবনায় পরিবর্তন আনতে এবং নিজেদের দায়িত্বশীল হতে অনুপ্রেরণা যোগিয়েছে, যা প্রাণ-প্রকৃতি-পরিবেশ রক্ষা এবং টেকসই বাংলাদেশ ও জাস্ট ট্রানজিশন গড়ে তুলতে সহায়ক হবে।
কর্মশালাটির সহযোগিতায় ছিলেন বাংলাদেয় ইয়ুথ এনভায়রনমেন্টাল ইনিশিয়েটিভ (বিইয়াইই) এবং আয়োজক পার্টনার হিসেবে রয়েছে রি-আর্থ ক্লাব-বিআরইউআর, জিএসটিইউ আর্থ ক্লাব।
পরিবেশের বিভিন্ন সায়েন্টিফিক টার্ম-এর সাথে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ক্রিটিকাল থিংকিং এবিলিটি তৈরি করা, জলবায়ু পরিবর্তনে কার্যকরী পদক্ষেপ শেখানোর উদ্দেশ্য নিয়ে আর্থহপার্স-এর এই ইভেন্ট আয়োজন করা হয়, যেখানে ৯০ জনের মতো অংশগ্রহণকারী ১৫টিরও বেশি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী সারা বাংলাদেশ থেকে অনলাইনের মাধ্যমে কর্মশালায় অংশগ্রহণ করছে। মাসব্যাপী এই অনলাইন ওয়ার্কশপটি চলবে অক্টোবর পর্যন্ত।
জেডআইকে/কেএইচকে